টেকনাফে বনভুমি ক্রেতা ও বিক্রেতার বিরুদ্ধে থানায় মামলা দায়ের

কক্সবাজার সংবাদদাতাঃ  কক্সবাজারের টেকনাফ উপজেলার বাহারছড়া ইউনিয়নের শামলাপুরে বনভুমি অবৈধ বিক্রেতা ও ক্রেতাসহ ৪ জনের বিরুদ্ধে থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। কক্সবাজার দক্ষিণ বনবিভাগের হোয়াইক্যং রেঞ্জাধীন শামলাপুর বনবিট কর্মকর্তা বাদী হয়ে ৭ জুলাই টেকনাফ থানায় মামলাটি দায়ের করেন। মামলার আসামী জহুর আলম শুক্রবার দিবাগত রাতে নিজেই তার বসতবাড়ির আঙ্গীনার তিনটি সুপারি গাছ কেটে বনকর্মী ও বনজায়গীরদারকে মিথ্যা মামলায় জড়িয়ে ফাঁসানোর ফাঁদ পেতেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। বনভুমি দখল বিক্রি ও ক্রেতার বিরুদ্ধে এটাই প্রথম কোন মামলা দায়ের বলে জানাগেছে।

সূত্রে জানাগেছে, স্ট্যাম্পের মাধ্যমে কক্সবাজার দক্ষিণ বনবিভাগের হোয়াইক্যং রেঞ্জাধীন শামলাপুর বনবিটের অধীনে সরকারী ৩ একর বনভুমি ২৫ লাখ টাকায় বিক্রি, বনভুমির পাহাড় কেটে চাষাবাদের জমি তৈরি করা সহ বনভুমি ক্রয় ও বিক্রয় করার অপরাধে হোয়াইক্যং রেঞ্জের শামলাপুর বনবিট কর্মকর্তা মোঃ তৌহিদ বাদী হয়ে গত ৭ জুলাই টেকনাফ থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। মামলার আসামী হলে সরকারী বনভুমি ক্রেতা টেকনাফ শামলাপুর নয়াপাড়া এলাকার মৃত হাজী ইবনে আমিনের ছেলে আজিজুল ইসলাম, তার স্ত্রী লায়লা বেগম এবং বনভুমি বিক্রেতা একই এলাকার মৃত কাদের হোছনের ছেলে জহুর আলম ও আবুল কালাম।

স্থানীয় সুত্রে জানা গেছে, স্থানীয় ভিলেজার শামশুল আলম উক্ত বনবিটের প্রায় ৩ একর জমিতে ফলদ ও বনজ বাগান সৃজন করে এবং চাষাবাদ যোগ্য জমিতে চাষ করে ভোগ দখলে ছিলেন। কিন্তু জহুর আলমসহ তার বাহিনীর লোকজন বাড়িঘর, গাছ পালা কেটে জমিটি জবর দখল করে নেয়। অবৈধ দখলদারের কাছ থেকে ২৫ লাখ টাকায় বনভুমি কিনেছে বলে একটি লিখিত স্ট্যাম্প সৃজন করেন। ঘরবাড়ি ভাংচুর, পাহারাদার লোকজনকে মারধর করে ঘর থেকে উচ্ছেদ করার পর জমি জবর দখলে নেয়। এব্যাপারে গত  বছরের ২৩ সেপ্টেম্বর কক্সবাজার জেলা পুলিশ সুপার বরার লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন ভিলেজার শামশুল আলম। অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে ঘটনাটি তদন্ত করার জন্য দায়িত্ব দেয়া হয় সহকারী পুলিশ সুপার (উখিয়া সার্কেল) কে। তিনি অনুসসন্ধানে ঘটনার সত্য পেয়ে পুলিশ সুপার বরাবর তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন।

পরে পুলিশের পক্ষ থেকে এব্যাপারে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য হোয়াইক্যং রেঞ্জকর্মকর্তাকে দায়িত্ব দেয়া হয়। সরকারী বনভুমি বিক্রি ও পাহাড়কাটায় জড়িতদের বিরুদ্ধে বনবিট কর্মকর্তাকে মামলার নির্দেশ দেন রেঞ্জকর্মকর্তা। নির্দেশের পরই গত ৭ জুলাই ৪ জনের বিরুদ্ধে মামলাটি দায়ের করেন।

আরো জানাগেছে, এরআগে একই বনভুমি নিয়ে একই ব্যক্তিরা ২০০৮ সালে ভিলেজার শামশুল আলমকে একমাত্র আসামী করে একটি মিথ্যা মারামারি মামলা দায়ের করে টেকনাফ থানায়  জিআর ৩৩৬/০৮ দায়ের করেন। দীর্ঘ আট বছর আইনী লড়াই করে ভিলেজান শামশু ২০১৬ সালে মামলাটি মিথ্যা প্রমাণিত হওয়ায় শামশুল আলমকে বেকসুর খালাস দেন আদালত।

এদিকে, গত ৭ জুলাই শুক্রবার দিবাগত রাত আনুমানিক ১টার দিকে শামলাপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের দক্ষিণপাশে জহুর আলমের বসতভিটার ৩টি সুপারী গাছ কেটে ফেলে নিজেই চিৎকার শুরু করে। ভিলেজার শামশুল আলম গাছ কেটেছে বলে চিৎকার করলে লোকজন এসে দেখেন নিজের গাছ নিজে কেটে প্রতিপক্ষ ভাই ও বনকর্মীদের ফাঁসানোর অপচেষ্টা করছে। বনবিট কর্মকর্তা বাদী হয়ে থানায় মামলা করায় এখন বানোয়াট ঘটনা সাজিয়ে ভিলেজার শামশুল আলম ও বনবিট কর্মকর্মার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করার অপচেষ্টা চালাচ্ছে বলে জানা গেছে।