নয় মাসেও প্রকাশিত হয়নি দ্বিতীয় বর্ষের পরিক্ষার ফল

রাবি প্রতিনিধি: সেশনজট কাটিয়ে উঠতে হিমশিম খাচ্ছে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদ।  চার বছরের অনার্স কোর্স শেষ করতে সময় লেগে যাচ্ছে আট বছর। সম্প্রতি চারুকলা বিভাগ অনুষদ থেকে পৃথক হওয়ায় সেশনজট আরো প্রকট আকার ধারন করছে।

২০১৪-১৫ শিক্ষা বর্ষের পরিক্ষার ৯ মাসেও রেজাল্ট পায়নি শিক্ষার্থীরা। অন্যদিকে ২০১৫-১৬  শিক্ষাবর্ষের তাদের পরবর্তী ব্যাচ চারুকলা অনুষদের অন্তর্রভুক্ত হওয়ার ফলে রেজাল্ট পেয়ে পরবর্তী বর্ষে ভর্তি হচ্ছে। যার ফলে তাদের জুনিয়ররা এখন সিনিয়রে পরিনত হচ্ছে এমনটাই অভিযোগ রাবির চারুকলা অনুষদের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থীদের।

জানা গেছে, ২০১৬ সালে চারুকলা বিভাগকে পূর্ণাঙ্গ একটি অনুষদে রুপান্তর করা হয়। অনুষদের অধীনে চারুকলা বিভাগসহ আরও দু’টি নতুন বিভাগ খোলা হয়। নতুন বিভাগের জন্য অফিস কক্ষসহ শ্রেনীকক্ষ ভাগ করে বরাদ্দ দেওয়ায় মূল চারুকলা বিভাগ নানা সংকটে পড়ে।

তিনটি বিভাগের অফিস কক্ষ একটি কক্ষ থেকে পরিচালিত হচ্ছে। ফলে এক বিভাগের কাগজপত্রের মধ্যে অন্য বিভাগের কাগজপত্র সব এলোমেলো। এতে ব্যবস্থাপনায় চরম ভোগান্তি পোহাতে হয় শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের।

তবে শিক্ষার্থীদের দাবি রুটিন অনুযায়ী ক্লাস নিতে শিক্ষকদের গাফিলতি, শ্রেণীকক্ষ ও শিক্ষক সংকট, খাতা মূল্যায়ণে অনীহা ও সময় মত ফলাফল প্রকাশ না করার ফলে শেসনজটে আটকে যাচ্ছে তাদের শিক্ষাজীবন।

বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্য কোনো অনুষদের শিক্ষার্থীদের চারুকলা অনুষদের শিক্ষার্থীদের মতো সেশনজটে ভুগতে হচ্ছে না বলেও দাবি তাদের। তবে শিক্ষকদের ভয়ে এসব বিষয়ে প্রকাশ্যে মুখ খুলছেনা শিক্ষার্থীরা।
অনুষদ ডীন ও শিক্ষকরা বলছেন- চারুকলা অনুষদে নতুন বিভাগ খোলায় শ্রেণিকক্ষ সংকট প্রকট হয়ে উঠেছে। একই সঙ্গে চারুকলা বিভাগের শিক্ষকদের বিভিন্ন বিভাগে ভাগ করে দেয়া হয়েছে, নতুন শিক্ষক সেভাবে নিয়োগ না হওয়ায় শিক্ষক সংকটও সেশনজটের অন্যতম কারণ।

খোজ নিয়ে জানা যায়, একই সঙ্গে প্রতিটি বর্ষে একাধিক করে ব্যাচ রয়েছে। যা বোঝাতে শিক্ষার্থীদের নিউ চতুর্থ বর্ষ আর ওল্ড চতুর্থ বর্ষ হিসেবে পরিচয় দিতে হয়। অপরদিকে পরীক্ষা গ্রহণ করলেও দীর্ঘদিনেও ফল প্রকাশও হয় না। অফিসিয়াল বেড়াজালে ফলাফল পেতে ৮- ৯ মাস বেগ পোহাতে হচ্ছে ফলপ্রার্থী শিক্ষার্থীদের। অন্য দিকে অনুষদ থেকে বিভাগ পৃথক হওয়ার ফলে সংশয়ে দিন গুনছে  শিক্ষার্থীরা ।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক চারুকলা বিভাগের তীতৃয় বর্ষের একাধিক শিক্ষার্থী ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, আমরা চারুকলা অনুষদ থেকে পৃথক হওয়ায় শিক্ষকদের অবহেলার পাত্র হয়ে পড়েছি। তারা এখন আমাদের বাদ দিয়ে চারুকলা অনুষদের নিজ নিজ বিভাগ নিয়েই অধিক ব্যস্ত। যার কারনে দীর্ঘ ৯ মাসেও আমরা রেজাল্ট পাচ্ছিনা। অপরদিকে আমাদের জুনিয়ররা রেজাল্ট নিয়ে পরবর্তী বর্ষে পর্দাপন করে তাদের ক্লাস চালিয়ে যাচ্ছে।

জানতে চাইলে চারুকলা অনুষদের  ডীন অধ্যাপক মো. মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, চারুকলা বিভাগ অনুষদে রুপান্তরিত হওয়ায় শিক্ষকরা চাচ্ছে তাদের বিভাগগুলো নিদিষ্ট সময়ের মধ্য শেষ করতে। আমরা আগের তুলনার খুব অল্প সময়ের মধ্যেই শেসনজট কাটিয়ে উঠতে চেষ্টা করছে বলেও দাবী করেন তিনি। আর ২০১৪-১৫ শিক্ষাবর্ষের রেজাল্ট প্রস্তুত করে রাখা হয়েছে আজ অথবা কালকের মধ্যেই রেজাল্ট প্রকাশ করা হবে। অন্যদিকে, আমাদের এখানে শ্রেণিকক্ষ, শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারীসহ নানামূখী সমস্যা  রয়েছে। তবে প্রশাসন আশ্বাস দিয়েছে চারুকলার ভবন সংস্কারের জন্য ২ কোটি টাকার বরাদ্দ আসছে। আমি মনে এ সংস্কার করা হলে উক্ত সমস্যা সমাধান করা সম্ভব হবে।