মিরপুরে ‘উগ্রবাদী আস্তানায়’ অভিযান শুরু

বিডিসংবাদ ডেস্কঃ  রাজধানীর মিরপুরের দারুস সালাম এলাকায় ঘিরে রাখা ‘উগ্রবাদী আস্তানায়’ রাতে বড় ধরনের বিস্ফোরণের পর সকালে সেখানে তল্লাশি শুরু করেছেন ফায়ার সার্ভিস ও র‌্যাব সদস্যরা।

আজ বুধবার সকাল পৌনে ৯টায় এ অভিযান শুরু করে। অভিযানের প্রাথমিক পর্যায়ে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা ভবনটির ভেতরে প্রবেশ করেছে।

মঙ্গলবার রাতে আত্মঘাতী বিস্ফোরণে ভবনটিতে আগুন লেগে যায়। এ ছাড়া আলো স্বল্পতার করণে মধ্যরাতে অভিযান স্থগিত করে র‌্যাব। তবে সকালে আবারও অভিযান পরিচালনার কথা জানানো হয়।

র‌্যাব সদস্যরা সকালে ওই ভবনে প্রবেশের আগে এ বাহিনীর আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক মুফতি মাহমুদ খান সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমাদের বোমা নিষ্ক্রিয়কারী দল ও ডগ স্কোয়াড ওই বাড়িতে প্রবেশ করেছে। বাহ্যিকভাবে দেখা যাচ্ছে বিস্ফোরণে ভবনের ওপরের অংশের বেশ ক্ষতি হয়েছে। ভবনের বিভিন্ন তলা সুইপিং করে আমাদের বিশেষায়িত দল পাঁচতলার ওই বাসায় প্রবেশ করবে। ওই জঙ্গিদের অবস্থা বা আসল পরিস্থিতি তখনই বোঝা যাবে।’

টাঙ্গাইলের এলেঙ্গায় সোমবার একটি বাড়িতে অভিযান চালিয়ে ‘জেএমবির জঙ্গি’ দুই ভাইকে ড্রোন ও দেশীয় অস্ত্রসহ আটকের পর তাদের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে সেদিন মধ্যরাতে মিরপুরে এই অভিযান শুরু করে র‌্যাব।

মাজার রোডের পাশে বর্ধনবাড়ি ভাঙ্গা ওয়ালের গলির ২/৩-বি হোল্ডিংয়ে ছয় তলা ওই ভবনের ২৪টি ফ্ল্যাটের মধ্যে ২৩টি থেকে ৬৫ জনকে সরিয়ে নেয় র‌্যাব। সোমবার ভোরেই ভবনের গ্যাস, বিদ্যুৎ ও পানি সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া হয়।

ভবনের পঞ্চম তলায় আবদুল্লাহ নামের এক ‘দুর্ধর্ষ জঙ্গি’, তার দুই স্ত্রী, দুই সন্তান ও দুই সহযোগীসহ মোট সাতজন অবস্থান করছিলেন বলে মঙ্গলবার দুপুরে র‌্যাবের মহাপরিচালক বেনজীর আহমেদ জানান।

র‌্যাবের ভাষ্য অনুযায়ী, আবদুল্লাহ ২০০৫ সাল থেকে জঙ্গিবাদে জড়িত। মিরপুর মাজার রোডের দীর্ঘদিনের এই বাসিন্দা ইলেকট্রনিক সামগ্রী মেরামতের কাজ করতেন।

মঙ্গলবার সারাদিন র‌্যাবের পক্ষ থেকে যোগাযোগ করে আবদুল্লাহকে আত্মসমর্পণে রাজি করানোর চেষ্টা চলে। সন্ধ্যায় জানানো হয়, আবদুল্লাহ রাজি হয়েছেন এবং রাত সাড়ে ৭টা থেকে ৮টার মধ্যে আত্মসমর্পণ করবেন বলেছেন।

কিন্তু সন্দেহভাজন ওই জঙ্গি র‌্যাব সদস্যদের আরও আড়াই ঘণ্টা অপেক্ষায় রাখেন এবং রাত পৌনে ১০টার দিকে ভবনটিতে বিকট শব্দে বিস্ফোরণ ঘটে।

এতে ছয়তলা ভবনের পঞ্চম তলায় ‘জঙ্গিদের’ ফ্ল্যাটে আগুন ধরে যায়। আগুনের কুণ্ডলিতে আশপাশের এলাকা আলোকিত হয়ে ওঠে। এরপর সেখানে কয়েক দফা গুলির শব্দ শোনা যায়। এ সময় এলাকাবাসীর মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।

বিস্ফোরণের কিছু সময় পর মুফতি মাহমুদ খান সাংবাদিকদের বলেন, ‘ভিতরে যারা ছিল তারাই বিস্ফোরণ ঘটিয়েছে। তিনটি বড় বড় বিস্ফোরণ ঘটিয়েছে, তার পরিপ্রেক্ষিতে আরও কিছু বিস্ফোরণ ঘটেছে। বিস্ফোরণে পাঁচতলায় অগ্নিকাণ্ড ঘটেছে। কেমিক্যাল ফায়ারের মতো হবে।’