সাবেক প্রেমিকা ও তার স্বামীর পরিকল্পনায় চবিছাত্র খুন

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) বাংলা বিভাগের শিক্ষার্থী মো. আলাউদ্দিন সাবেক প্রেমিকা ও তার স্বামীর পরিকল্পনায় খুন হয়েছেন বলে জানিয়েছে পুলিশের।

আলাউদ্দিন হত্যার দায়ে গ্রেপ্তার চারজনকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ শেষে খুনের কারণ ‘উদ্ঘাটিত হয়েছে’ বলে জানিয়েছেন বায়েজিদ বোস্তামী থানার ওসি মো. মহসিন।

গত ২২ মার্চ রাতে বায়েজিদ বোস্তামী থানার পশ্চিম শহীদ নগর এলাকার ওমান প্রবাসী আবু সৈয়দের চার তলা ভবনের তৃতীয় তলার একটি বাসা থেকে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় বাংলা বিভাগ মাস্টার্স শেষ বর্ষের ছাত্র মো. আলাউদ্দিনের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।

প্রথমে অজ্ঞাত যুবক হিসেবে আলাউদ্দিনের লাশ উদ্ধার করা হলেও পরদিন মর্গে স্বজনরা তার লাশ শনাক্ত করে।

ঘটনার এক সপ্তাহের মাথায় মঙ্গলবার মো. ইকবাল হোসেন (২৭), তার স্ত্রী ইয়াসমিন আক্তার রুম্পা (২১), মো. তৈয়ব ও মো. হেলাল নামে চারজনকে গ্রেপ্তারের কথা জানায় পুলিশ।

গ্রেপ্তারকৃতরা

গ্রেপ্তার রুম্পাকে নিহত আলাউদ্দিনের ‘সাবেক প্রেমিকা’ উল্লেখ করে ওসি বলেন, বারবার ‘শারীরিক সম্পর্ক’ করতে চাপ দেওয়ায় রুম্পা ও তার স্বামী ইকবাল পরিকল্পনা করে আলাউদ্দিনকে খুন করেন। প্রতিবেশি এবং গৃহশিক্ষক থাকার সময় আলাউদ্দিনের সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে ওঠে বলে রুম্পা জানিয়েছেন। দশম শ্রেণিতে পড়ার সময় রুম্পার বিয়ে হয়ে গেলেও আলাউদ্দিনের সঙ্গে তার সম্পর্ক অব্যাহত ছিল।

ওসি মহসিন জানান, প্রথম স্বামী ওমর সাদিকের সঙ্গে ছাড়াছাড়ি হওয়ার পর গত বছরের জুলাইয়ে ইকবাল হোসেনকে বিয়ে করেন রুম্পা। বিয়ের কিছুদিন পর ইকবাল ওমান চলে গেলে আলাউদ্দিন আবার যোগাযোগ শুরু করেন বলে রুম্পা জানান। বিষয়টি জানতে পেরে ইকবাল আলাউদ্দিনকে নিষেধও করে। এতে আলাউদ্দিন ক্ষিপ্ত হয়ে আগের শারীরিক সম্পর্কের ভিডিও ছড়িয়ে দেওয়াসহ নানা হুমকি দিতে থাকেন। ডিসেম্বর মাসের শেষ দিকে ইকবাল দেশে এলেও আলাউদ্দিন জানতেন না। পরে পরিকল্পনা করে আলাউদ্দিনকে হত্যা করা হয়।

আলাউদ্দিনের কারণেই প্রথম স্বামীর সঙ্গে ছাড়াছাড়ি হয় বলেও দাবি করেছেন রুম্পা। ওই সংসারে তার একটি মেয়েও আছে।

ওসি বলেন, বিভিন্ন সময়ে আলাউদ্দিন রুম্পাকে দেখা করার জন্য এবং বাসা ভাড়া নেওয়ার প্রস্তাব দেওয়ায় শহীদ নগরের বাসাটি ভাড়া নেওয়ার পরিকল্পনা করেন ইকবাল। পরিকল্পনা অনুযায়ী রুম্পা আলাউদ্দিনকে বাসার ঠিকানা জানানোর পর সে দ্রুত চলে আসে। বাসায় প্রবেশ করার পর তাকে আটকে রাখে ইকবালসহ অন্যরা, পরে হত্যা করে। হত্যাকাণ্ডের পর রুম্পা ও ইকবাল প্রথমে নগরীর হামজারবাগ এলাকায় যায়। পরে রাউজান উপজেলার হিংলায় চলে যায়। সেখান থেকে তাদের গ্রেপ্তারের পর আলাউদ্দিনের ব্যবহৃত মোবাইল ফোনটি উদ্ধার করা হয় এবং পরে ভোলার লালমোহন থেকে তৈয়ব ও হেলালকে গ্রেপ্তার করা হয়।

আরেক অভিযুক্ত মাসুদকে গ্রেপ্তার করা যায়নি জানিয়ে ওসি বলেন, আজ বুধবার বিকালে ইকবাল ও রুম্পাকে আদালতে জবানবন্দি দেওয়ার জন্য পাঠানো হবে।