আসাদের উপস্থিতিতে আরব লিগের নতুন যাত্রা

বিডিসংবাদ অনলাইন ডেস্কঃ

প্রায় এক দশক ধরে বাতিল রাখার পর আরব লিগ আবার সিরিয়ার সদস্যপদ চালু করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। সেই সিদ্ধান্তের জের ধরে সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদ আরব লিগ শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দিতে সৌদি আরবের জেদ্দা শহরে পৌঁছেছেন। সৌদি বাদশাহ সালমান বিন আব্দুল আজিজের আমন্ত্রণে তার এই সফরকে ঘিরে বিপুল আগ্রহ সৃষ্টি হয়েছে।

প্রায় এক দশক ধরে গৃহযুদ্ধে বিপর্যস্ত সিরিয়া আরব জগত থেকে কার্যক্রম বিচ্ছিন্ন ছিল। আসাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধ, রাসায়নিক অস্ত্রের প্রয়োগের মতো মারাত্মক অভিযোগ আনা হয়েছে। আসাদের মদতকারী ইরানের সাথেও আরব বিশ্বের সম্পর্ক তলানিতে এসে ঠেকেছিল। সম্প্রতি চীনের উদ্যোগে ইরান ও আরব বিশ্বের মধ্যে সম্পর্ক স্বাভাবিক করার প্রক্রিয়া শুরু হবার পর সিরিয়াকেও আরব লিগে ফেরানোর সিদ্ধান্ত নজর কাড়ার মতো। সেই সাথে ইয়েমেনেও শান্তি ফেরানোর উদ্যোগ শুরু হয়ে গেছে। পশ্চিমা বিশ্ব আসাদ প্রশাসনের সাথে সংলাপের সম্ভাবনা এখনো উড়িয়ে দিলেও আরব নেতাদের স্বীকৃতিকে সিরিয়ার প্রেসিডেন্টের জন্য বড় সাফল্য হিসেবে দেখা হচ্ছে।

শুক্রবারের শীর্ষ সম্মেলনে আসাদ আরব নেতাদের মুখোমুখি হচ্ছেন। চলতি সপ্তাহের শুরুতেই সিরিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী ফয়সাল মেকদাদ এক প্রতিনিধি দল নিয়ে জেদ্দায় পৌঁছে আসাদের সফরের প্রস্তুতি শুরু করেছিলেন।

তিনি বলেন, এবারের শীর্ষ সম্মেলন সিরিয়ার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। উল্লেখ্য, সিরিয়াকে আরব লিগের পূর্ণ মর্যাদার সদস্য হিসেবে পুনর্বহাল করলেও সব আরব দেশ অবশ্য এখনই ওই দেশের সাথে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক স্বাভাবিক করতে প্রস্তুত নয়। যেমন কাতার এমন সম্ভাবনা উড়িয়ে দিয়েছে।

পশ্চিমা বিশ্বের সমর্থন ছাড়াই সৌদি আরব নিজস্ব উদ্যোগে একের পর এক কূটনৈতিক সাফল্য দেখিয়ে চলেছে। ইরান, সিরিয়া ও ইয়েমেনের সাথে সম্পর্ক আবার স্বাভাবিক করার পাশাপাশি সুদান সঙ্কট মেটাতে দুই বিবাদমান পক্ষের মধ্যে মধ্যস্থতার উদ্যোগ শুরু করেছে। ওই দেশ থেকে নিরীহ মানুষদের সরিয়ে আনার ক্ষেত্রেও সৌদি প্রশাসন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। ইউক্রেন সঙ্কটের ক্ষেত্রে পশ্চিমা বিশ্বের অবস্থান অনুসরণ না করে সৌদি আরব রাশিয়ার সাথে সুসম্পর্ক বজায় রেখেছে।
পেট্রোলিয়াম উৎপাদনের প্রশ্নে ওই দেশের সাথে সৌদি আরবের নিবিড় সমন্বয় পশ্চিমা বিশ্বে ক্ষোভ সৃষ্টি করেছে। আরব লিগ শীর্ষ সম্মেলনে ইউক্রেন যুদ্ধ ও ওই ঘটনার জের ধরে বিশ্বজুড়ে অর্থনৈতিক সঙ্কট নিয়েও আলোচনা হচ্ছে।

বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে একাধিক সঙ্কটের মধ্যে সৌদি আরবের নেতৃত্বে আরব ঐক্য আরব লিগের ভূমিকা আরো জোরদার করবে বলে ওই জোট আশা করছে। বিশেষ করে চীন ও রাশিয়ার সাথে নিবিড় সম্পর্ক আমেরিকার উপর নির্ভরতা কিছুটা কমাতে পারে। তবে দীর্ঘকালের নিরাপত্তা সহযোগী হিসেবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাথে সম্পর্ক পুরোপুরি ছিন্ন করা সৌদি আরব ও অন্যান্য সদস্য দেশের পক্ষে কঠিন হবে বলে ধরে নেয়া হচ্ছে। ইরান ও সিরিয়ার সাথে সুসম্পর্ক ইসরায়েলের সাথে একাধিক আরব দেশের সম্পর্কের উন্নতির উপর কতটা প্রভাব ফেলবে, ওই দিকেও সবার নজর থাকবে।

সূত্রে : ডয়চে ভেলে

বিডিসংবাদ/এএইচএস