চেলসিকে হারিয়ে সেমিফাইনালে চোখ রিয়াল মাদ্রিদের

বিডিসংবাদ অনলাইন ডেস্কঃ

সান্তিয়াগো বার্নাব্যুতে দর্শকদের নিরাশ করেনি রিয়াল মাদ্রিদ। বুধবার রাতে শেষ আটের প্রথম লেগে চেলসির বিপক্ষে ২-০ গোলে জয় পেয়েছে কার্লো আনচেলত্তির দল। এই জয়ে শেষ আটে এক পা দিয়ে রাখলো লস ব্লাঙ্কোসরা। বিপরীতে ব্যর্থতার গোলকধাঁধা থেকে বের হতে আরো একবার ব্যর্থ চেলসি।

চেলসি এদিন কোনো প্রতিদ্বন্দ্বীতাই গড়ে তুলতে পারেনি। উল্টো লাল কার্ড দেখে পরিণত হতে হয় দশজনের দলে। অবশ্য রিয়াল মাদ্রিদের সামনে সুযোগ ব্যবধান বাড়িয়ে দ্বিতীয় লেগের দুশ্চিন্তা কমিয়ে আনার। তবে তা আর হয়নি, দশ জনের চেলসির বিপক্ষে প্রায় দেড় ডজন আক্রমণ করেও দুটোর বেশি গোল আদায় করা যায়নি।

অবশ্য খেলা শুরুর দ্বিতীয় মিনিটেই এগিয়ে যেতে পারত চেলসি, কন্তে ও ফেলিক্স মিলে সুযোগও তৈরী করে ফেলেছিলেন প্রায়। তবে কামাভিঙ্গাতে এই যাত্রায় রক্ষা পায় রিয়াল মাদ্রিদ। দুই মিনিট পর আরো একটা সুযোগ তৈরি করেন কন্তে, তবে এবার বাধা হয়ে দাঁড়ান মিলিতাও।

সেখানেই শুরু, সেখানেই শেষ। প্রথমার্ধের বাকি সময়টা একক আধিপত্য দেখিয়েছে রিয়াল মাদ্রিদ। যদিও একটির বেশী গোল আদায় করে নিতে পারেনি, তবে দারুণ সব আক্রমণে ব্যস্ত রেখেছিল চেলসির রক্ষণ। প্রথমার্ধের একমাত্র গোলটি আসে ২১তম মিনিটে, করিম বেনজেমার পা থেকে।

গোলটা আসে পাল্টা আক্রমণ থেকে। নিজেদের ডিফেন্স লাইন থেকে কারভাজাল লম্বা পাস দেন ভিনিসিউস জুনিয়রের উদ্দেশ্য। বল নিয়ে ছুটে গিয়ে গোলমুখে শটও করেন এই ব্রাজিলিয়ান, তবে তার নেয়া শট রুখে দেন চেলসি গোলরক্ষক কেপা। তবে বল হাতে রাখতে পারেননি তিনি। হাত থেকে বল ফসকে গেলে ফিরতি শটে বল জালে জড়ান বেনজেমা।

এর আগে মাঠে নামার সাথে সাথেই একটা রেকর্ডের মালিক বনে যান বেনজেমা। দারুণ এক মাইলফলক স্পর্শ করেছেন তিনি। রিয়ালের হয়ে চ্যাম্পিয়নস লিগে যৌথভাবে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ম্যাচ খেলা ফুটবলার এখন বেনজেম; ১৩০টি। পেরিয়ে গেছেন সাবেক তারকা ফুটবলার সের্হিও রামোসকে। বেনজেমার সামনে এখন শুধুই ইকার ক্যাসিয়াস।

প্রথম গোল হজমের পর আরো বেশ কয়েকবার কঠিন পরীক্ষার মুখোমুখি হতে হয় কেপাকে। বেশির ভাগ সময়ে পরীক্ষকের নাম ভিনিসিউস জুনিয়র। দারুণ ছন্দে থাকা এই ব্রাজিলিয়ান তারকা চার মিনিট পরই ব্যবধান বাড়াতে পারতেন। তবে কেপা ঢাল হয়ে দাঁড়ালে রক্ষা পায় লস ব্লাঙ্কোসরা।

বিশেষ করে প্রথমার্ধের বিরতিতে যাবার আগে শেষ ১৫ মিনিটে বেশ কয়েকবার চেলসির রক্ষণদূর্গে কম্পন তুলে ভিনিসিউস-বেনজেমা জুটি, অবদান রেখেছেন রদ্রিগোও। তবে একাধিক সম্ভাবনা জাগিয়ে তুললেও অবশ্য আর কোনো গোলের দেখা মেলেনি। সুবাদে ১-০ ব্যবধানে এগিয়ে থেকে বিরতিতে যায় চেলসি।

বিরতি থেকে ফিরেও আধিপত্য ধরে রাখে স্বাগতিকরা। চেনা মাঠে চেনা রূপেই খেলতে থাকে তারা। যদিও শুরুর কয়েক মিনিটে সাজানো ফুটবল খেলার চেষ্টা করে চেলসি, তবে তা অল্প কয়েক মুহূর্তেই বাঁধা পড়ে যায়৷ ফের রিয়াল মাদ্রিদের কাছে খেলার নিয়ন্ত্রণ চলে যায়৷ আর একের পর ছোট-বড় সুযোগ তৈরী করতে থাকেন ফুটবলাররা।

এরই মাঝে ৫৯তম মিনিটে ১০ জনের দলে পরিণত হয় চেলসি। লস ব্লাঙ্কোসদের একের পর এক আক্রমণ সামলাতে না পেরে ডি বক্সের একটুখানি বাহিরে রদ্রিগোকে ফাউল করে বসেন চিলওয়েল। অনৈতিক এমন ফাউলের সুবাদে লাল কার্ড পেয়ে মাঠ ছাড়তে হয় চিলওয়েলকে। ফলে স্বাভাবিকভাবেই ব্যাকফুটে চলে যায় চেলসি।।

এর ১৫ মিনিট পর দ্বিতীয় গোলের দেখা পায় রিয়াল মাদ্রিদ। এবার গোল করেন অ্যাসেনসিও। তবে এই গোলের পেছনেও রয়েছে ভিনিসিউসের অবদান। ব্রাজিলিয়ান ফরোয়ার্ড নিজেও গোলদাতার খাতায় নাম লেখানোর সুযোগ পেয়েছিলেন। ৮৫ মিনিটে তার নেয়া শট চেলসি রক্ষণ রুখে দিলে হতাশ হতে হয় তাকে। তবে পুরো ম্যাচজুড়ে দারুণ প্রাণবন্ত ছিলেন তিনি, খেলাটাকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে রেখেছেন বড় ভূমিকা।

শেষ মুহূর্তে অবশ্য ব্যবধান বাড়িয়ে নেয়ার সুযোগ পেয়েছিল রিয়াল মাদ্রিদ। তবে এক বেনজেমাই মিস করেন পরপর তিনটে সুযোগ। তবে তাতে ফলাফল আসেনি। সুবাদে ২-০ গোলের জয় নিয়েই খুশি থাকতে হয় লস ব্লাঙ্কোজদের৷

সেমিফাইনাল নিশ্চিত করতে দ্বিতীয় লেগ মাঠে গড়াবে আগামী সপ্তাহে, স্টামফোর্ড ব্রিজে। যেখানে চেলসি চাপ নিয়ে খেললেও অনেকটা নির্ভার হয়েই মাঠে নামবে রিয়াল মাদ্রিদ।

বিডিসংবাদ/এএইচএস