বিডিসংবাদ অনলাইন ডেস্কঃ
বাংলাদেশ ছাত্র অধিকার পরিষদের পঞ্চম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে ছাত্র অধিকার পরিষদের নেতাকর্মীদের ওপর হামলা চালিয়েছে ছাত্রলীগ। এতে ছাত্র অধিকার পরিষদের কমপক্ষে ১০ জন আহত হয়েছে।
শুক্রবার বেলা পৌনে ১১টার দিকে টিএসসি প্রাঙ্গণে এই ঘটনা ঘটে।
জানা যায়, ছাত্র অধিকার পরিষদ প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালন করতে টিএসসি’তে আসার আগেই ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা সেখানে অবস্থান নেয়। ছাত্র অধিকার এলে পাল্টা স্লোগান দিতে থাকে ছাত্রলীগ। এভাবে ১০-১৫ মিনিট চলার পর ছাত্র অধিকার পরিষদ স্থান ত্যাগ করতে চাইলে মারধর শুরু করে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। প্রথমে টিএসসি গেটে পরে ডাচ চত্বর এবং মিলন চত্বরে ছাত্র অধিকারের ওপর হামলা চালায় ছাত্রলীগ।
মারধরে ছাত্র অধিকার পরিষদের কেন্দ্রীয় সভাপতি বিন ইয়ামীন মোল্লা, সেক্রেটারি আরিফুল ইসলাম আদীব, সহ-সভাপতি আখতার হোসেন, সাব্বির হোসাইন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জাহিদ ফয়সাল, ফয়সাল রকি, ইউনুস, ইব্রাহিম নিরব, ফোরকান বিন হামিদ, আফতাব আহমেদ সহ কয়েকজন নেতাকর্মী আহত হয়। তাদের আমরা ঢাকা মেডিক্যালে নিয়ে আসছি। ঢাবি ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের নেতৃত্বে এ হামলা হয়েছে।
ছাত্র অধিকার পরিষদের ঢাবি শাখার সভাপতি আসিফ মাহমুদ বলেন, আমরা টিএসসিতে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালন করতে এলে তারা গেটেই আমাদের বাধা দেয়। বিদ্রুপ করে স্লোগান দিতে থাকে। আমরা চলে যেতে চাইলে আমাদের ওপর কয়েকধাপে হামলা চালায়।
এদিকে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ছাত্রলীগ নেতা বলেন, ছাত্র অধিকার পরিষদের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে টিএসসিতে নেতাকর্মীদের অবস্থান নেয়ার নির্দেশনা দেয় ঢাবি ছাত্রলীগের শীর্ষ নেতৃত্ব। তবে ছাত্র অধিকারের প্রোগ্রামে বিশৃঙ্খলা তৈরি করলেও ঢাবি ছাত্রলীগের সভাপতি মাজহারুল কবির শয়ন ভাইয়ের নির্দেশনা ছিল কোনো মারধর করা যাবে না। আমরাও সেটি পালন করছিলাম। তবে সাধারণ সম্পাদক সৈকত ভাইয়ের অনুসারীরা মারধর শুরু করে।
এদিকে পেশাগত দায়িত্ব পালনকালে হেনস্তার শিকার হয়েছেন এক সাংবাদিক। নাম প্রকাশ না করার শর্তে তিনি বলেন, আমি দায়িত্ব পালন করতে গেলে ডাস চত্বরে জহুরুল হক হল ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ফরিদ জামানসহ কয়েকজন আমার দিকে তেড়ে আসে। ভিডিও করছি কেন জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করে এবং মোবাইল দেয়ার জন্য চাপ প্রয়োগ করে। সাংবাদিক পরিচয় দিলেও জিজ্ঞাসাবাদ করতে থাকে। পরে প্রক্টরিয়াল টিম ও গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যরা এসে আমার পরিচয় দিলে তারা চলে যায়। এরপর তারা সাংবাদিক সমিতির বাহিরের কোনো সাংবাদিক ভিডিও করছে কিনা খোঁজ করতে থাকে।
ঘটনার নিন্দা জানিয়ে দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে গণ অধিকার পরিষদ নেতা মোহাম্মদ রাশেদ ও তারেক রহমানের নেতৃত্বে ঢাকা মেডিক্যালের সামনে থেকে বিশ্ববিদ্যালয় মেডিক্যাল সেন্টার পর্যন্ত একটি মিছিল করে।
এদিকে ছাত্রলীগের হামলার নিন্দা জানিয়েছে ছাত্রদল। একটি যৌথ বিবৃতিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ইজাজুল কবির রুয়েল ও সাধারণ সম্পাদক আরিফুল ইসলাম বলেন, আজকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ সকল বিশ্ববিদ্যালয় ও ক্যাম্পাসগুলো ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীদের অভয়ারণ্যে পরিণত হয়েছে। নির্বিঘ্নে নিজেদের অপকর্ম করে যাওয়া এবং সাধারণ শিক্ষার্থীদের নিপীড়নের বিষয়ে বিরোধীমতের ছাত্রসংগঠনগুলো যাতে প্রতিবাদ করতে না পারে, সে কারণেই পরিকল্পিতভাবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ দেশের প্রায় সব ক্যাম্পাসে ছাত্রদলকে ক্যাম্পাসের বাইরে রাখার অপচেষ্টা করা হচ্ছে।
তারা বলেন, যেকোনো পরিস্থিতিতেই বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নেতাকর্মীরা সাধারণ ছাত্রছাত্রীদের সাথে নিয়ে ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীদের রুখে দিয়ে সাধারণ শিক্ষার্থীদের পাশে থাকবে এবং ক্যাম্পাসে শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ বজায় রাখতে অচিরেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদল ক্যাম্পাসে মধুর ক্যান্টিন থেকে তাদের স্বাভাবিক রাজনৈতিক কার্যক্রম শুরু করে ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীদের প্রতিটি অপকর্মের দাঁতভাঙা জবাব দিবে।
বিডিসংবাদ/এএইচএস