যে ৫ চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হতে যাচ্ছে এবারের জাতীয় বাজেট

বিডিসংবাদ অনলাইন ডেস্কঃ

বাংলাদেশে এ বছর এমন এক সময়ে বাজেট ঘোষণা হচ্ছে, যখন দেশটিতে ভয়াবহ মূল্যস্ফীতি এবং আর্থিক সংকট চলছে, সেই সাথে বছর শেষে হতে যাচ্ছে জাতীয় নির্বাচন।

ঢাকার গ্রিনরোডের বাসিন্দা শাহরিয়ার জামান একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করে যে বেতন ভাতা পান, তা দিয়ে গত কয়েক বছর ভালোই চলছিল। কিন্তু গত বছর থেকে ব্যয়ের সাথে তাল মেলানো তার জন্য কঠিন হয়ে পড়েছে।

‘বড় অংকের টাকা ট্যাক্সে চলে যায়। তার ওপর প্রতিটা জিনিসপত্রের দাম বেড়েছে। বেতনের টাকা তো চলেই যাচ্ছে, মাঝে একবার অসুস্থ হয়ে একটা সঞ্চয় ভেঙে ফেলতে হয়েছে,’ তিনি বলছিলেন।

সামনের বাজেটে তার জন্য কোনো সুযোগ সুবিধা আসে কিনা, আয়করের সিলিং বাড়ানো হয় কিনা, তিনি সেটা দেখার জন্য যেমন অপেক্ষা করছেন।

আবার শুল্ক-কর বাড়ানো হলে অনেক জিনিসের দাম আরেক দফা বেড়ে যাওয়ারও ভয় পাচ্ছেন।

বাংলাদেশের অর্থনীতিবিদরা ধারণা করছেন, অন্যসব বছরের তুলনায় এ বছরের বাজেট কিছুটা চ্যালেঞ্জের হয়ে উঠবে।

সরকারকে একদিকে জাতীয় নির্বাচনের কথা বিবেচনায় রেখে জনতুষ্টির দিকে গুরুত্ব দিতে হবে, অন্যদিকে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের শর্তগুলো বাস্তবায়নেরও চাপ থাকবে।

ফলে এর সাথে ভারসাম্য রেখে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ, রাজস্ব আদায় আর প্রবৃদ্ধির ওপর সরকার কতটা গুরুত্ব দিতে পারবে, সেদিকে তাকিয়ে রয়েছেন অর্থনীতিবিদরা।

যেসব চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে পারে বাজেট ২০২৩-২০২৪
৩১ মে তারিখে বাংলাদেশে ২০২৩-২০২৪ অর্থবছরের বাজেট অধিবেশন শুরু হতে যাচ্ছে।

ধারণা করা হচ্ছে, ১ মে জাতীয় সংসদে বাজেট উপস্থাপন করা হতে পারে। সব মিলিয়ে চলতি বছর সাড়ে সাত লাখ কোটির বেশি টাকার বাজেট হতে যাচ্ছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

বাংলাদেশের অর্থনীতিবিদরা বলছেন, নির্বাচন, আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল, মূল্যস্ফীতি ইত্যাদি কারণে চলতি বছরের বাজেটের সামনে বড় কয়েকটি চ্যালেঞ্জ রয়েছে।

জনতুষ্টি আর অর্থনীতি রক্ষার মধ্যে সমন্বয়
অর্থনীতিবিদরা বলছেন, অতীতে দেখা গেছে, জাতীয় নির্বাচনের আগে আগে যেসব বাজেট দেয়া হয়, সেখানে অর্থনীতির উন্নতির তুলনায় জনতুষ্টিকে প্রাধান্য দিয়ে বাজেট ঘোষণা করা হয়।

বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সাউথ এশিয়ান নেটওয়ার্ক অন ইকোনমিক মডেলিংয়ের (সানেম) নির্বাহী পরিচালক অধ্যাপক ড. সেলিম রায়হান বলছেন, আগের নির্বাচনী বছরগুলোকে যদি দেখেন, সেই সময় অর্থনীতি তেমন একটা সংকটের মধ্যে ছিল না।

তিনি আরো বলেন, ‘ফলে ওই সময় জনতুষ্টির বাজেট করেও অর্থনীতির ক্ষেত্রে নতুন বড় ধরনের কোনো চাপ তৈরি হয়নি। কিন্তু এইবার যদি নির্বাচনকে সামনে রেখে শুধু জনতুষ্টির কথা বিবেচনা করেই বাজেট করা হয়, সেটা অর্থনীতির ওপর নতুন চাপ তৈরি করবে।’

তিনি মনে করেন বাজেটে এই ক্ষেত্রে একটা ভারসাম্য রাখতে হবে। সেজন্য অতিরিক্ত খরচ এড়িয়ে চলা, এখনি প্রয়োজন হবে না এমন উন্নয়ন প্রকল্প গ্রহণ না করার জন্য পরামর্শ দিচ্ছেন তিনি।

তবে বর্তমান অর্থনৈতিক পরিস্থিতিতে কেবল জনতুষ্টিমূলক বাজেট দেয়ার সুযোগ খুব সীমিত বলে মনে করেন বেসরকারি আরেকটা গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ সিপিডির বিশেষ ফেলো ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য।

তিনি বলছেন, ‘নির্বাচনের আগে আগে সব সরকারই জনতুষ্টিমূলক বাজেট দিতে চায়। কিন্তু আর্থিক অবস্থা, রাজস্ব ঘাটতি, বৈদেশিক ঘাটতির কারণে সরকারের সামনে সে জন্য সুযোগ খুব সীমিত। ওই রকম বড় কোনো চেষ্টা করতে গেলে তার নেতিবাচক প্রভাব পড়বে সামগ্রিক অর্থনীতির ওপরে।’

‘মনে রাখা দরকার, এই বাজেট কিন্তু দুটি সরকার বাস্তবায়ন করবে। এই বাজেটে সে নমনীয়তাও রক্ষা করতে হবে। কারণ সরকার যদি বড় কোন প্রতিশ্রুতিও দেয়, সেটা কতটা কার্যকর করতে পারবে, সেটা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে।’

অর্থনীতিবিদরা বলছেন, দেশের ভেতর এক ধরণের রাজনৈতিক অনিশ্চয়তার মধ্যে বাজেট আসছে। এর মধ্যে এলডিসি থেকে বের হওয়া, বাস্তবায়ন করা, কোভিড উত্তর পুনরুজ্জীবন বাস্তবায়ন করা, এ সবগুলো বিষয় বাজেটের সামনে রয়েছে।

এসব বিষয় বাজেটে কতটা বিবেচনায় আসতে পারবে, তার ওপরেও সামনের বছরের অর্থনীতি নির্ভর করবে।

এ বছর বাজেটে আরো গুরুত্ব পাবে আইএমএফের নানা শর্ত।

অর্থনীতিবিদরা মনে করেন, চলতি বছরের বাজেটে আইএমএফের শর্তগুলো অনেকটা ‘ছায়া’ আকারে থাকবে।

আইএমএফের ঋণ অব্যাহত রাখতে যতটা সম্ভব তাদের শর্তগুলোও অন্তর্ভুক্ত করার চেষ্টা থাকবে।

সেখানে কী সমন্বয় আনা হবে, সেটা দেখার জন্য অপেক্ষা করছেন অর্থনীতিবিদরা।

মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে আনা
দেশে ক্রমবর্ধমান মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে আনার জন্য চলতি বছরের বাজেটে কী ধরনের প্রস্তাবনা করা হয়, সেটির দিকে অর্থনীতিবিদ এবং সাধারণ মানুষ- সবাই তাকিয়ে রয়েছেন।

সেটা রক্ষা করাই এই বাজেটের জন্য অন্যতম প্রধান চ্যালেঞ্জ হয়ে উঠবে বলে মনে করেন অর্থনীতি বিশ্লেষকেরা।

সিপিডির বিশেষ ফেলো দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলছেন, অন্য যেকোনো বছরের তুলনায় এবারের বাজেট অনেক জটিল পরিস্থিতিতে তৈরি করতে হয়েছে। কারণ আগে দেখা যেতো, দেশে আয়-ব্যয়ের ক্ষেত্রে ঘাটতি থাকতো, কিন্তু বৈদেশিক লেনদেনের ক্ষেত্রে তুলনামূলক স্বস্তি থাকতো। কিন্তু এবার সেটা নেই।

তিনি বলছেন, ‘প্রবৃদ্ধির যে ধারা ছিল, সেই ক্ষেত্রে বড় ধরনের ব্যত্যয় এসেছে। এটা আরো কমে যাচ্ছে, কারণ টাকাও নেই, ডলারও নেই। দু’টি ক্ষেত্রে বড় ধরনের ঘাটতি একসাথে মোকাবেলা করতে হচ্ছে।

তাই সরকারকে আমদানি নিয়ন্ত্রণ করতে হচ্ছে, নিজের বিনিয়োগ কর্মসূচী সীমিত রাখতে হচ্ছে। ফলে আগামী বছরের প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রাও সংযতভাবে দিতে হবে। আর্থিক কাঠামোটা আসলে অনেক দুর্বল হয়ে পড়েছে,’ তিনি বলছেন।

মহামারির কারণে ২০২০ এবং ২০২১ সালে পরপর দুই বছর অর্থনীতির যে ক্ষতি হয়েছিল, সেটা ২০২২-২০২৩ অর্থ বছরের বাজেটে কাটিয়ে ওঠার চেষ্টা করা হয়েছিল।

কিন্তু রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর বিশ্বের অর্থনীতিতে যে প্রভাব পড়েছে, বাংলাদেশের মতো অনেক দেশে ডলার সংকট, দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির মতো পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে।

এ বছরেও সে অবস্থার খুব বেশি পরিবর্তন আসেনি। এজন্য দেশের অর্থনৈতিক নীতি ও কৌশলগত ত্রুটিকেও দায়ী করেন অর্থনীতিবিদেরা।

বাংলাদেশে পরিসংখ্যান ব্যুরোর তথ্য অনুযায়ী, গত এপ্রিলে মূল্যস্ফীতির হার ছিল নয় দশমিক ৩৩ শতাংশ।

সানেমের নির্বাহী পরিচালক অধ্যাপক রায়হান বলছেন, মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণের জন্য কী করা হচ্ছে, বাজেটে সেটার পরিষ্কার ধারণা তৈরি করতে হবে।

‘বিশ্বের বাজারে অনেক কিছুর দাম কমে এলেও তার প্রভাব বাংলাদেশের বাজারে দেখা যাচ্ছে না। এসব সঙ্কট কিভাবে সামলানো হবে, তার সুস্পষ্ট পরিকল্পনা বাজেটে থাকা দরকার। না হলে বড় সংখ্যক একটা জনগোষ্ঠী মূল্যস্ফীতির চাপে বড় ধরনের বিপদে পড়ে যাবে,’ বলেন তিনি।

অন্যদিকে, বাংলাদেশের পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান বলেছেন, আসছে বাজেটে করমুক্ত আয়ের সীমা কিছুটা বাড়তে পারে। তবে সেটি কতটা বাড়তে বাড়ে সে বিষয়ে তিনি সুনির্দিষ্ট কিছু বলেননি।

অন্যদিকে, বিভিন্ন ক্ষেত্রে ভর্তুকি তুলে দেয়ার চাপ রয়েছে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের পক্ষ থেকে। কিন্তু ভর্তুকি কমানো হলে মূল্যস্ফীতি আরেক দফা বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।

ফলে আইএমএফের শর্ত বিবেচনায় নেয়া স্বত্ত্বেও চলতি বছরেও সার, গ্যাস ও বিদ্যুৎ খাতে ভর্তুকি অব্যাহত থাকতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

গত বাজেটে প্রথমে ভর্তুকি ৮৫ হাজার ৭৪৫ কোটি টাকা প্রস্তাব করা হলেও পরে বাড়িয়ে এক লাখ দুই হাজার কোটি করা হয়েছিল।

বৃহস্পতিবার ঢাকায় বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠান বিআইডিএসের এক অনুষ্ঠানে পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী শামসুল আলম বলেছেন, আগামী বাজেটের মূল্যস্ফীতিকে বেশি গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে।

‘বাজেট হবে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণের হাতিয়ার। সেই সাথে করোনার আগের অবস্থায় ফিরে যাওয়াই বাজেটের মূল লক্ষ্য।’

রাজস্ব আদায় ও আয়-ব্যয়ের ঘাটতি কমিয়ে আনা
অর্থনীতিবিদরা বলছেন, বাংলাদেশে বরাবরই বাজেটে রাজস্ব আদায়ের যে লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়, কখনোই সেটা পুরোপুরি সফল করা যায় না।

এ জন্য দেশের রাজস্ব আদায়ের ব্যবস্থাপনাকে যেমন দায়ী করা হচ্ছে, তেমনি রাজস্ব আদায়ের ক্ষেত্রে নানারকম ছাড় দেয়াকেও দায়ী করা হয়।

আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল আইএমএফও রাজস্ব আদায় ব্যবস্থাপনা সংস্কারের পরামর্শ দিয়েছে।

প্রত্যক্ষ করের মাধ্যমে, নতুন করদাতাদের শনাক্ত করে কর আদায়, মূল্য সংযোজন কর আদায়ে আরো কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণের পরামর্শ দিচ্ছেন অর্থনীতিবিদরা।

অধ্যাপক রায়হান বলেন, ‘রাজস্ব আদায়ের জায়গায় আমাদের সাফল্য খুবই কম। বরং আমার মনে হয় আমরা পিছন দিকে হাঁটছি। এটা কম হওয়ার কারণে স্বাস্থ্য, শিক্ষা, সামাজিক কর্মসূচীর মতো খুব গুরুত্বপূর্ণ কিছু সামাজিক খাতে আমরা সেভাবে ব্যয় করতে পারছি না। ‘এই অর্থ বছরে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডকে তিন লাখ ৭০ হাজার কোটি টাকার রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা দেয়া হলেও সেখানে এখনো ৩০ হাজার কোটি টাকার ঘাটতি রয়েছে।

রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা এ বছর আরো বাড়ানোর ইঙ্গিত দেয়া হয়েছে কর্মকর্তাদের বক্তব্যে।

আইএমএফের শর্তে জিডিপির অতিরিক্ত দশমিক পাঁচ শতাংশ রাজস্ব বাড়ানোর উদ্যোগ নিতে বলা হয়েছে।

অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা যাচ্ছে, আগামী অর্থ বছরের বাজেটে বেশ কিছু শুল্ক-কর ছাড় সুবিধা বাতিল, কর অবকাশ সুবিধা কমানোর প্রস্তাবনা আসতে যাচ্ছে।

সেই সাথে বেশ কিছু খাতের ওপর থেকে ভ্যাট অব্যাহতি সুবিধা তুলে দেয়া হতে পারে।

ব্যালেন্স অব পেমেন্ট এবং বৈদেশিক মুদ্রা
অর্থনীতিবিদরা মনে করেন, বাংলাদেশের সামষ্টিক অর্থনীতির যে অস্থিতিশীলতা রয়েছে, তা সমাধানে মূল্যস্ফীতি, বিনিময় মূল্যের অস্থিরতা, ব্যালেন্স অব পেমেন্ট ঘাটতি কমিয়ে আনা আর রিজার্ভ কমে যাওয়া-এসবের ওপর বিশেষ গুরুত্ব দিতে হবে বাজেটে।

এসব কারণে মূল্যস্ফীতি বেড়ে যাওয়া, শ্রম বাজারে সংকট তৈরি হওয়া, এবং সামাজিক সহায়তা কর্মসূচী সীমিত হয়ে পড়া- এগুলোর সমাধান খুঁজে বের করতে হবে।

যেহেতু বৈদেশিক লেনদেনের ওপর ঘাটতি বড় আকারে এসেছে, সেজন্য টাকার বিনিময় হারের ওপর চাপ তৈরি হয়েছে।

টাকার আরো পতন হলে তো আমদানি করা পণ্যের দাম আরো বাড়বে।

অর্থনীতিবিদ দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য আশঙ্কা করছেন, ‘বৈশ্বিক মন্দা অবস্থার কথা বিবেচনা রেখে, উন্নত দেশগুলোয় পণ্যের চাহিদা কমে যাওয়ার কারণে প্রভাব পড়বে বাংলাদেশের রফতানি আয়, রেমিট্যান্স, বৈদেশিক বিনিয়োগে। এ সবগুলো খাতই কিছুটা সংকটের মধ্যে রয়েছে।

তার প্রভাব পড়তে পারে রাজস্ব আদায়ে। বাজেটে এসব বিষয় ঠিকমতো বিবেচনায় রাখা না হলে পরে সমস্যায় পড়তে হতে পারে।’

গত বছরের এই সময়ে যেখানে দেশে রিজার্ভ ছিল সাড়ে চার হাজার কোটি ডলারের বেশি, এই বছরে সেটি তিন হাজার ১০০ ডলারে এসে ঠেকেছে।

ফলে বৈদেশিক লেনদেনের ক্ষেত্রে ভারসাম্য আনার ক্ষেত্রে বিশেষ গুরুত্ব দিতে হবে।

রিজার্ভ কমে যাওয়া ঠেকাতে কোনো পদক্ষেপ চলতি বাজেটে এই মুহূর্তে দেখা যাচ্ছে না। আগামী বাজেটে এ বিষয়ে নজর দেয়ার পরামর্শ দেন তিনি।

আর্থিক খাতের ব্যবস্থাপনা
অধ্যাপক ড. সেলিম রায়হান বলছেন, বর্তমান আর্থিক সঙ্কটের জন্য রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধকে দায়ী করা হলেও, আসলে আমাদের দেশেই দীর্ঘদিন ধরে অর্থনৈতিক যেসব নীতি ও কৌশল নেয়া হচ্ছিল, সেগুলোর অনেক প্রভাব রয়েছে। ‘আর্থিক খাতে ঋণ খেলাপি, সুশাসনের অভাব, ব্যবস্থাপনাগত ত্রুটি রয়েছে। বিভিন্ন সময় সংস্কারের যেসব তাগিদ দেয়া হয়েছে, অনেক দিন ধরেই সেসব অবহেলিত রয়েছে। আইএমএফ কিছু সংস্কারের কথা বললেও তার কিছু বাস্তবায়ন করা হচ্ছে, কিছু এখনো বাস্তবায়ন হয়নি,’ তিনি বলছেন।

বিশেষ করে ব্যাংকিং এবং আর্থিক খাত খেলাপি ঋণ ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। আইমএফের শর্তের মধ্যে খেলাপি ঋণ কমিয়ে আনা এবং আর্থিক খাতের সংস্কারকে বিশেষ গুরুত্ব দেয়া হয়েছে।

সেই সাথে ব্যাংকিং খাত থেকে সরকারের ঋণ নেয়ার পরিমাণও বেড়েছে।

রাজস্ব আদায়ের ক্ষেত্রে একটা পরিষ্কার কর্মপরিকল্পনা, আর্থিক খাতের ঋণ খেলাপিসহ অব্যবস্থাপনা দূর করতে কী করা হবে, তার পরিষ্কার পরিকল্পনা ঘোষণা করতে হবে এবং বাস্তবায়ন করতে হবে।

দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলছেন, খেলাপি ঋণ আদায় করা, ভর্তুকি কমানোসহ আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের যেসব শর্ত রয়েছে, এই বাজেটে নেপথ্য ছায়া আকারে সেটাও বেশ গুরুত্ব পাবে।

কিন্তু সরকার ঘনিষ্ঠ নানা মহলের কারণে সরকার এসব ক্ষেত্রে কতটা কঠোর নীতিতে যেতে পারবে, সেটা নিয়ে প্রশ্ন আছে।

সূত্র : বিবিসি

বিডিসংবাদ/এএইচএস

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here