রফতানি আয়ের লক্ষ্যমাত্রা ৭২ বিলিয়ন ডলার, প্রবৃদ্ধি ১১.৫২ শতাংশ

বিডিসংবাদ অনলাইন ডেস্কঃ

২০২৩-২৪ অর্থবছরে মোট ৭২ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের রফতানি লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। এর মধ্যে পণ্য রফতানির লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৬২ বিলিয়ন ডলার, আর সেবা রফতানির লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ১০ বিলিয়ন ডলার।

চলতি বছরের জন্য পণ্য রফতানি প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ১১ দশমিক ৫৯ শতাংশ আর সেবা রফতানির লক্ষ্যমাত্রা ১১ দশমিক ১১ শতাংশ। সব মিলিয়ে রফতানি প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ১১ দশমিক ৫২ শতাংশ।

বুধবার বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে সম্মেলন কক্ষে ২০২৩-২৪ অর্থবছরের রফতানি লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ সংক্রান্ত সভা শেষে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি।

বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, পণ্য ও সেবা মিলিয়ে ২০২২-২৩ অর্থবছরে রফতানি আয়ের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৬৭ বিলিয়ন ডলার। লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে আয় হয়েছে ৬৪ দশমিক ৫৬ বিলিয়ন ডলার। এবার রফতানি আয়ের লক্ষ্যমাত্রা গতবছরের চেয়ে ১১ দশমিক ৫২ শতাংশ বাড়িয়ে ৭২ বিলিয়ন ডলার নির্ধারণ করা হয়েছে।

সরকার ২০৩০ সালের মধ্যে ১০০ বিলিয়ন ডলার রফতানির লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, চলতি অর্থবছরে যে লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে তা অর্জন করা সম্ভব এবং আমাদের এই বক্তব্যের সাথে ব্যবসায়ীরা একমত পোষণ করেছেন। রফতানি লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের জন্য বিভিন্ন ব্যবসায়ী সংগঠনের নেতারা গ্যাস-বিদ্যুৎ-জ্বালানিসহ অন্যান্য সুযোগ সুবিধা নিশ্চিত করার দাবি জানিয়েছে। আমরা তাদের কথা শুনেছি এবং তাদের দাবি পূরণে সরকারের পক্ষ থেকে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের প্রতিশ্রতি দেয়া হয়েছে।

বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, বিগত দুই অর্থবছরের রফতানি লক্ষ্যমাত্রা এবং লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে আমাদের অর্জনসহ সাম্প্রতিক বছরগুলোতে রফতানি খাতে অর্জিত প্রবৃদ্ধির গতিধারা, পণ্য ও বাজার সম্প্রসারণ এবং বহুমুখীকরণে সরকারের আর্থিক ও অ-আর্থিক প্রণোদনা, বিশ্ব বাণিজ্যের সাম্প্রতিক গতিধারা, দেশীয় ও বৈশ্বিক অর্থনীতিতে ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাব এবং রফতানি সম্ভাবনাময় নতুন পণ্য ও সেবা খাতের বিকাশ বিবেচনায় নিয়ে চলতি ২০২৩-২৪ অর্থবছরের রফতানি আয়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।

সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের উত্তরে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, আসন্ন জাতীয় নির্বাচন তার স্বাভাবিক প্রক্রিয়া অনুসরণ করে সংবিধান অনুযায়ী হবে। নির্বাচনকে কেন্দ্র করে দেশে কোনো কিছুই বন্ধ থাকবে না।

অফিস-আদালত, ব্যাংক-বীমা, ব্যবসা-বাণিজ্য স্বাভাবিকভাবেই চলবে।অতএব নির্বাচনের বছর উপলক্ষ্যে রফতানির লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে কোনো বিরুপ প্রভাব পড়ার সম্ভাবনা নেই বলে তিনি উল্লেখ করেন।

টিপু মুনশি জানান, ২০২৩ সালের শেষ পর্যায়ে দক্ষিণ এশিয়ার বেশীরভাগ অর্থনীতিতে ইতিবাচক প্রবৃদ্ধি হবে বলে বিভিন্ন সংস্থা পূর্বাভাস দিয়েছে। এই পূর্বাভাস ঠিক থাকলে এ সময় বাংলাদেশে জিডিপি প্রবৃদ্ধি হবে ৬ দশমিক ৮ শতাংশ। আন্তর্জাতিক বিভিন্ন বাণিজ্য সংস্থা এখন পর্যন্ত যেসব পূর্বাভাস দেয়া হয়েছে তা বিবেচনায় নিলে চলতি বছরের মন্দা অবস্থা বছরের শেষ দিকে কাটতে শুরু করবে এবং আগামী বছরে বিশ্ব অর্থনীতি পুনরায় প্রবৃদ্ধির ধারায় ফেরত আসবে।

বিগত অর্থবছরের পরিসংখ্যান তুলে ধরে মন্ত্রী বলেন, ২০২২-২৩ অর্থবছরে পণ্য খাতে ৫৮ বিলিয়ন ডলার লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে ৫৫ দশমিক ৫৬ বিলিয়ন ডলার অর্জিত হয়েছে যা, লক্ষ্যমাত্রার প্রায় ৯৫ দশমিক ৮ শতাংশ এবং পূর্ববর্তী ২০২১-২২ অর্থবছরের তুলনায় ৬ দশমিক ৬৭ শতাংশ বেশি। পণ্য ও সেবা খাত মিলে ৬৭ বিলিয়ন ডলার লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে ৬৪ দশমিক ৫৬ বিলিয়ন ডলার অর্জিত হয়েছে যা, লক্ষ্যমাত্রার প্রায় ৯৬ দশমিক ৩ শতাংশ এবং পূর্ববর্তী ২০২১-২২ অর্থবছরের তুলনায় ৫ দশমিক ৮ শতাংশ বেশি।

সভায় বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব তপন কান্তি ঘোষসহ বিভিন্ন ব্যবসায়ী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ, সংশ্লি¬ষ্ট বিভাগ ও সংস্থার প্রতিনিধি এবং মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। সূত্র : বাসস

বিডিসংবাদ/এএইচএস