আম পাকার মৌসুম, জেনে নিন!

বিডিসংবাদ ডেস্কঃ  মওসুম শুরু হতে না হতেই পাকা আমে সয়লাব দেশের ফলের বাজার। তবে গতবছরের মতো এবারও রাসায়নিক দিয়ে আম পাকানোর অভিযোগ উঠেছে। যার ক্রেতা সংখ্যাও কোনো অংশে কম নয়।

তবে ক্রেতারা কি নিশ্চিন্তে খেতে পারছেন এসব আম? এ ব্যাপারে এক ক্রেতা অভিযোগ করে বলেন, “আম আগে পেড়ে ফেলায় সেগুলো কোন স্বাদ থাকেনা”। তবুও রোজার মৌসুম হওয়ায় তারা জেনে বুঝে সেই কেমিক্যাল-যুক্ত আম কিনতেই বাধ্য হচ্ছেন।

এদিকে, বিক্রেতাদের দাবি তারা প্রাকৃতিকভাবে পাকা আমই বিক্রি করছেন। ঢাকার বনানীতে রাশেদুল ইসলাম নামে এক আম বিক্রেতা জানান, সাতক্ষিরাসহ দেশের যেসব অঞ্চলে আগে আগে আম পেকেছে তারা সেসব অঞ্চল থেকে আম এনে বিক্রি করছেন।

একই কথা জানান রাজশাহীর বিক্রেতা। তবে রাজশাহীর আম বাজারে আসতে আরো দুই সপ্তাহ লাগবে বলে জানান তিনি।

গত কয়েকদিনে ঢাকার পাইকারি ও খুচরা ফলের বাজারে অভিযান চালিয়ে কৃত্রিমভাবে পাকানো কয়েক হাজার মণ আম জব্দ করার পর তা নষ্ট করে ঢাকার ভ্রাম্যমান আদালত। রাসায়নিক দিয়ে পাকানো এসব স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর হওয়ায় এই অভিযান চালানো হয়েছে বলে জানান র‍্যাবের নির্বাহী মেজিস্ট্রেট সারোয়ার আলম।

কোন মওসুমে কোন আম

বাংলাদেশের জাতীয় ফল কাঁঠাল হলেও উৎপাদন, বাণিজ্য বিশেষ করে ভোক্তাদের চাহিদার ক্ষেত্রে কয়েক গুন এগিয়ে আছে ফলের রানী আম। উদ্যানতত্ত্ব গবেষণা বিভাগের তথ্যমতে, বাণিজ্যিক ভিত্তিতে ২১ জাতের আম উৎপাদন হয়। এর মধ্যে অর্ধেক আম উন্নত প্রজাতির।

মূলত মে থেকে সেপ্টেম্বর মোট ৫ মাস আমের মৌসুম থাকে। সবচেয়ে বেশি আম পাওয়া যায় জুন থেকে জুলাই মাসে। তবে কোন আমটি কোন সময় পাওয়া যাবে সে বিষয়ে বেশিরভাগের সঠিক কোন ধারণা নেই।

এ বিষয়ে ফল বিভাগের মুখ্য বিজ্ঞানী মদন গোপাল সাহা জানান, বাংলাদেশের আমের মৌসুমকে মূলত তিন ভাগে ভাগ করা যায় । আগাম জাত, মধ্য মৌসুমি জাত এবং নাবি জাত।

মে মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহ থেকে জুনের মাঝামাঝি সময়ে পাকে আগাম জাতের আম। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল গোপালভোগ, গোবিন্দভোগ, বৃন্দাবনি, গুলাবখাশ, রানীপছন্দ, হিমসাগর, ক্ষীরশাপাত ও বারি-১।

জুনের মাঝামাঝি থেকে পাকতে শুরু করে মধ্য মৌসুমি আম এগুলো হল ল্যাংড়া, হাঁড়িভাঙ্গা, লক্ষণভোগ, খুদিক্ষীরশা, বারি-২, বোম্বাই, সুর্যপুরী ইত্যাদি।

জুলাই মাস থেকে সেপ্টেম্বরের প্রথম সপ্তাহ পর্যন্ত পাকে নাবি জাতের আম। সেগুলো হল ফজলি, আম্রপালি, মোহনভোগ, আশ্বিনা, গৌড়মতি, বারি-৩, বারি-৪, ইত্যাদি।

এক্ষেত্রে আম বাগান মালিকদের সঠিক সময়ে সঠিক আম বাজারে সরবরাহের আহ্বান জানান বিজ্ঞানী মদন গোপাল সাহা। এক্ষেত্রে বিক্রেতাদের বাণিজ্যিক মানসিকতা থেকে বেরিয়ে আসার পাশাপাশি ভোক্তাদের সচেতন ভূমিকা পালনের আহ্বান জানান তিনি।

গোপাল সাহা জানান, বাইরে থেকে কোনটা কেমিক্যালযুক্ত আম সেটা বোঝা কঠিন। তবে ক্রেতারা যদি কোন মৌসুমে কোন আম পাওয়া যাবে এ বিষয়ে সঠিক ধারণা রাখেন এবং রাসায়নিক দেয়া আম কেনা থেকে বিরত থাকেন তাহলে অনেকাংশেই অসাধু ব্যবসায়ীদের প্রতারণা থেকে বাঁচা সম্ভব।