উখিয়া-টেকনাফ সংসদীয় আসনে আ.লীগের টিকেট পাচ্ছেন মো.ইসমাইল সিআইপি

কক্সবাজার প্রতিনিধিঃ আওয়ামীলীগের মনোনয়ন পেতে যে সকল যোগ্যতার প্রয়োজন হবে, তার চেয়ে বেশি গুনের অধিকারী কক্সবাজারের টেকনাফ শাহপরীর দ্বীপের ঐহিত্যবাহি আওয়ামী লীগ পরিবারের সন্তান, ত্যাগী ও স্বচ্ছ রাজনীবিদ মো. ইসমাইল সিআইপি।

এই আসনটিতে বিএনপির অংশগ্রহণের মধ্য দিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ একাদশ  সংসদ নির্বাচন আওয়ামী লীগের এমপি নির্বাচনের টিকেট পাচ্ছেন মো. ইসমাইল সিআইপি, এমন গুঞ্জন শুনা যাচ্ছে সর্বত্র।

তবে মো. ইসমাইল আনুষ্টানিক ভাবে এখনো কিছু জানাননি। বর্তমান দলীয় সংসদ সদস্য আবদুর রহমান বদিকে নিয়ে শুরু থেকেই বিব্রত অবস্থায় রয়েছে সরকার।

ইয়াবার তালিকায় বার বার নাম আসা, বির্তকিত সব কর্মকান্ড, দুদকের মামলা সহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে দলীয় হাই কমান্ডও তার উপর অনেকটা নাখোশ, এমনটাই জানিয়েছেন একাধিক সুত্র। এছাড়া টেকনাফের কমিশনার একরাম হত্যা কান্ড ইস্যুতে এমপি বদিকে নিয়ে অনেক বির্তক উঠেছে। আগামী একাদশ সংসদীয় নির্বাচনে আবদুর রহমান বদি মনোনয়ন পাবে কি পাবে না, এনিয়েও চলছে নানান কানা ঘুষা। এ আসনে ক্লিন ইমেজের প্রার্থী সংকটে ভুগলেও সাম্প্রতিক সময়ে আলোচনায় উঠে এসেছে প্রবাসী আওয়ামী লীগ নেতা মো. ইসমাইল সিআইপি।

আগামী নির্বাচনে জয়লাভ করতে আওয়ামী লীগ প্রার্থী ঠিক করার সময় মনোনয়ন প্রত্যাশীর ৬টি গুণ আছে কিনা তা যাচাই করা হবে । মনোনয়ন প্রত্যাশীর শুধু অর্থবিত্ত থাকলেই হবে না, তাকে এলাকায় জনপ্রিয় ও জনসম্পৃক্ত হতে হবে। দলীয় নেতা-কর্মীদের সঙ্গে সুসম্পর্ক থাকা বাধ্যতামূলক। থাকতে হবে ব্যক্তিগত ইমেজ, দলের জন্য ত্যাগী হওয়া চাই, তাকে হতে হবে শিক্ষিত ও ভদ্র। সরকারি ও বেসরকারি এবং দলীয় জরিপে যিনি এগিয়ে থাকবেন তিনিই পাবেন দলীয় মনোনয়ন। দলের নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের একাধিক নেতা এমন তথ্য নিশ্চিত করেছেন। এই ৬টি গুন ছাড়াও আরো বহুমাত্রিক গুনের অধিকারী মো. ইসমাইল সিআইপি।
দলীয় সূত্রমতে, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ হবে-এটা অনেকটাই নিশ্চিত। সে কারণে টানা তৃতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় আসতে প্রতিটি সংসদীয় আসনে সবচেয়ে জনপ্রিয় ও গ্রহণযোগ্য ব্যক্তিকে দলীয় মনোনয়ন দেবে আওয়ামী লীগ। এ জন্য বর্তমান এমপি বা মন্ত্রিপরিষদে থাকা অনেক নেতাই মনোনয়ন থেকে বাদ পড়বেন। বিশেষ করে ২০১৪ সালের নির্বাচনে যারা বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়ে এলাকার খোঁজখবর রাখেননি, ব্যক্তিস্বার্থে দলীয় কোন্দল সৃষ্টি করেছেন, বিতর্কিত কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে দল ও সরকারকে বিব্রতকর পরিস্থিতিতে ফেলেছেন, তাদের এবার নৌকায় তোলা হবে না।

তাই দলীয় প্রধান শেখ হাসিনা এসব আসনে জনপ্রিয় মুখ খুঁজছেন। ইতিমধ্যে কয়েক দফা জরিপ সম্পন্ন করেছেন তিনি। প্রধানমন্ত্রীর নিজস্ব একটা টিমের বিভিন্ন সংস্থার এবং দলীয় জরিপে যার প্লাস পয়েন্টের পরিমাণ বেশি তিনিই ‘যোগ্য’। তাকেই দলীয় টিকিট দেওয়া হবে।

টানা তৃতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় আসতে চ্যালেঞ্জের নির্বাচনে মুখ দেখে কাউকে মনোনয়ন দেওয়া হবে না। ইতিমধ্যে আওয়ামী লীগ সভানেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কয়েক দফা দলীয় কার্যনির্বাহী সংসদ ও দলের সংসদীয় দলের বৈঠকে এমপিদের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন, কারও মুখ দেখে এবার মনোনয়ন দেওয়া হবে না। একই সঙ্গে কাউকে পাস করানোর দায়িত্ব তিনি নেবেন না। নিজ যোগ্যতায় প্রার্থীকে বিজয়ী হয়ে আসতে হবে। এ জন্য তিনি নিজ নিজ এলাকায় গিয়ে গণসংযোগ ও নেতা-কর্মীদের সঙ্গে সুসম্পর্ক বাড়ানোর তাগিদ দেন।

আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারকরা জানান, অতীতের যে কোনো নির্বাচনের চেয়ে এবার বড় চ্যালেঞ্জের নির্বাচন। টানা দুই মেয়াদে ক্ষমতায় থেকে আবার ভোটের মাধ্যমে সরকার গঠন করা বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে কঠিন। অতীতে এমন ঘটেনি। তাই প্রার্থী মনোনয়নের বিষয়টিকে সবচেয়ে গুরুত্ব দেওয়া হবে। কমপক্ষে ৬টি গুণ থাকতেই হবে।

দলটির নেতারা জানান, বিগত নির্বাচনে মনোনয়ন দেওয়ার ক্ষেত্রে এসব যোগ্যতা তেমন আমলে নেওয়া হয়নি। ফলে গত ৯ বছরে প্রায় প্রত্যেকটি আসনেই দ্বন্দ্ব, কোন্দল চরম আকার ধারণ করেছে। অনেক নির্বাচনী আসনে নেতা-কর্মীরা এমপির কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। এবার সেই বিতর্কিত এমপিদের বাদ দেওয়া হবে। নেতা-কর্মীদের সঙ্গে তিক্ততা সৃষ্টিকারী এমপিরা কিছুতেই মনোনয়ন পাবেন না। এবার মনোনয়ন দেওয়ার ক্ষেত্রে দলীয় প্রধান শেখ হাসিনা গভীরভাবে বিচার-বিশ্লেষণ করবেন।
‘যারা দলীয় নেতা-কর্মী ও জনগণের আস্থা হারিয়েছেন, ভালোবাসা হারিয়েছেন তাদের দলীয় মনোনয়ন দেওয়া হবে না। দলীয় সভানেত্রী বিভিন্ন জরিপ থেকে তথ্য সংগ্রহ করছেন। আওয়ামী লীগ যোগ্য, এলাকায় দলীয় নেতা-কর্মী ও সাধারণ মানুষের সঙ্গে জনসম্পৃক্তা রয়েছে, নিষ্কলুষ ইমেজ আছে এমন প্রার্থীকে মনোনয়ন দেবে। এক্ষেত্রে শিক্ষিত, ভদ্র ও তরুণ নেতৃত্বকে উৎসাহিত করা হবে। ’দলের নেতারা জানান, বর্তমানে প্রায় শতাধিক দলীয় এমপি বিভিন্ন কর্মকাণ্ডের কারণে দল এবং দলের বাইরে বিতর্কিত। বিএনপি-জামায়াত নেতা-কর্মীকে আশ্রয়-প্রশ্রয় দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে অনেকের বিরুদ্ধে। যেসব এমপি অনৈতিক কর্মকাণ্ডে জড়িত আগামী নির্বাচনে তাদের মনোনয়ন না দেওয়ার চিন্তা-ভাবনা করছেন হাইকমান্ড। সেক্ষেত্রে বিকল্প প্রার্থী খোঁজার কাজও চলছে।

সব মিলিয়ে দেশের অন্যান্য জেলার মতো কক্সবাজারের উখিয়া-টেকনাফ আসনে এবারের প্রার্থী হিসেবে মানুষ চাচ্ছেন মো. ইসমাইল সিআইপিকে। তার রয়েছে যতেষ্ট ব্যক্তিগত ইমেজ, দলের জন্য ত্যাগী , শিক্ষিত ও ভদ্র এবং ক্লিন ইমেইজের রাজনীতিবিদ।

রাজনীতির পাশাপাশি মো. ইসমাইল একজন সফল ব্যবসায়িও। সংযুক্ত আরব আমিরাত আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সভাপতি, কক্সবাজারের টেকনাফ শাহপরীর দ্বীপের ঐতিহ্যবাহি রাজনৈতিক পরিবারের সন্তান, বাংলাদেশ কমিউনিটির সিনিয়ার ও সংযুক্ত আরব আমিরাত আওয়ামী লীগের সর্ব সিনিয়ার নেতা, বিশিষ্ট ব্যবসায়ী মোহাম্মদ ইসমাইল, বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক সিআইপি নির্বাচিত হন। বিদেশে গিয়ে পরিশ্রম করে আয় করা অর্থ বৈধভাবে বাংলাদেশে পাঠিয়ে এ মর্যাদা তিনি পেয়েছেন ।
দলীয় হাই কমান্ডের সবার সাথে তার রয়েছে ভালো যোগাযোগ এবং সুসম্পর্ক।

এ সময় সৌদি প্রবাস জীবনে হতাশাগ্রস্ত এই মানুষটি দেশে ফিরে এসেছিলেন। দেশে ফিরে নানা সামাজিক কর্মকান্ডে জড়িয়ে ফেলার পাশাপাশি সেই তরুণ ভাবতে থাকে, কিভাবে বিদেশ বিভুইয়ে গিয়ে নিজের দেশের জন্য, দেশের মানুষের জন্য সম্মান আনা যায়! এসব ভাবনা আর বৃহৎ উদ্দেশ্য নিয়ে পরিকল্পনা করতে সময় পেরিয়ে যেতে থাকে। ২০০৪ সাল,সেই যুবক আবার পাড়ি দেয় প্রবাসে তবে এবারের গন্তব্য ছিল দুবাই।

২০০৮ সালে নিজেই ব্যবসা প্রতিষ্ঠান খুলে বসে বাংলাদেশ কক্সবাজার জেলার সেই টগবগে যুবক মোহাম্মদ ইসমাইল।
সে ইসমাইল  নিজের প্রচেষ্টায় ধীরে ধীরে গড়ে তুলেছেন দশ-দশটি আবাইয়া / লেডিস গাউন ড্রেস এর দোকান। সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাইয়ের বিখ্যাত আবাইয়া মার্কেট নামে পরিচিত আবু হাইল সেন্টারে তার শ্রেষ্ঠত্ব রয়েছে গত ১৫/১৬ বছর ধরে।
অসীম দেশপ্রেম আর পারিবারিক সুত্রে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অনুসারী পরিবারে জন্ম নেয়া যুবক মো. ইসমাইল, দুবাই গিয়ে শুধু ব্যবসা নিয়েই আটকে থাকেনি। নিজেকে জড়িয়েছেন রাজনীতিসহ নানাবিধ ভালো কর্মকান্ডের সাথে, উদ্দেশ্য দেশের জন্য ভালো কিছু করে বিদেশের মাটিতে দৃষ্টান্ত স্থাপন করা। দিনে দিনে মোহাম্মদ ইসমাইল হয়ে উঠেছেন সংযুক্ত আরব আমিরাত আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সভাপতি, বাংলাদেশ কমিউনিটির সিনিয়ার ও সংযুক্ত আরব আমিরাত আওয়ামী লীগের সর্ব সিনিয়ার নেতা।

মোহাম্মদ ইসমাইল শুধু প্রবাসেই নিজের সক্ষমতা জাহির করে থেমে থাকেননি বাংলাদেশের ঢাকা, চট্টগ্রাম এবং কক্সবাজারেও রয়েছে তার মালিকানাধীন বিভিন্ন ব্যবসা ও সামাজিক প্রতিষ্ঠান, এখানেও তার অধীনে কাজ করছে শত শত কর্মকর্তা কর্মচারী। রয়েছে বিভিন্ন দাতব্য প্রতিষ্ঠান।

মোহাম্মদ ইসমাইল গত ১৫/১৬ বছর ধরেই বাংলাদেশ সরকারকে সর্বাধিক রেমিট্যান্স দিয়ে দেশের উন্নয়নের কাজে নিজেকে সম্পৃক্ত রেখেছেন। ইতোপূর্বে চারবার সর্বোচ্চ রেমিট্যান্স দাতা হিসেবে সরকারী ভাবে শ্রেষ্ঠত্বের স্বীকৃতি এবং সম্মাননাও পেয়েছেন।
অত্যন্ত ভদ্র সদালাপী এবং বন্ধুবৎসল  মোহাম্মদ ইসমাইল শতভাগ সততা নিয়ে দেশের উন্নয়নের স্বার্থে সরকারের সাথে হাতে হাত মিলিয়ে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে। বাংলাদেশের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ সরকার ২০১৬ সালের জন্য ‘বাংলাদেশে বৈধ চ্যানেলে সর্বাধিক বৈদেশিক মুদ্রা প্রেরণকারী অনাবাসী বাংলাদেশি’ ক্যাটাগরিতে ২৯ জন এবং বিদেশে বাংলাদেশি পণ্যের আমদানিকারক অনাবাসী বাংলাদেশি ক্যাটাগরিতে ছয়জনসহ মোট ৩৫ জন অনাবাসী বাংলাদেশিকে বাণিজ্যিক গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি সিআইপি হিসাবে নির্বাচিত করেন। এদের মধ্যে ৩ নাম্বার আছেন মো. ইসমাইল। ৫ জুন রাজধানীর একটি কনভেনশন সেন্টারে তাকে সম্মাননা দেয় প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়।

২০১৬ সালের নির্বাচিত সিআইপিদের মধ্যে বাংলাদেশে বৈধ চ্যানেলে সর্বাধিক বৈদেশিক মুদ্রা প্রেরণকারী অনাবাসী বাংলাদেশি’ ক্যাটাগরিতে যে ৩৫ জনকে সিআইপি কার্ডের দেয়া হয়েছে তাদের মধ্যে মোহাম্মদ ইসমাইলও রয়েছেন।
সিআইপি সম্মাননা কার্ড বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. নমিতা হালদার এনডিসি’র সভাপতিত্বে স্বাগত বক্তব্য রাখেন, মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মো. আমিনুল ইসলাম।