কমিউনিটি ক্লিনিকের প্রশংসা করলেন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রধান

বিডিসংবাদ অনলাইন ডেস্ক: গ্রাম পর্যায়ের মানুষের স্বাস্থ্য সেবার মানোন্নয়নে কমিউনিটি ক্লিনিকের সাফল্যের প্রসংশা করে এই কার্যক্রম পরিদর্শনের আগ্রহ দেখিয়েছেন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মহাপরিচালক ড.তেদ্রোস আধানম গেব্রিয়েসাস।

তিনি বলেন, তৃণমুল পর্যায়ে জনগনের প্রাথমিক চিকিৎসা নিশ্চিত করতে বাংলাদেশের কমিউনিটি ক্লিনিক গুলো যে সফলতা দেখিয়েছে তা বিশ্বের অনেক দেশের জন্য অনুস্মরণীয় ও দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে।

আজ সোমবার সুইজারল্যান্ডের জেনেভায় প্যালেস ডি নেশনস্ বাংলাদেশের স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম তার সাথে সৌজন্য সাক্ষাৎ করতে গেলে তিনি এ কথা বলেন।

এ সময়ে তেদ্রোস আধানম বাংলাদেশের মানুষের দোরগোড়ায় স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে সাফল্যের জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও স্বাস্থ্যমন্ত্রীর প্রসংশা করে বলেন, মিয়ানমার থেকে আগত প্রায় ১১ লাখ রোহিঙ্গাদের স্বাস্থ্য সেবায় সফলতা দেখিয়ে বাংলাদেশ প্রমাণ করেছে সম্প্রতি সময়ে বাংলাদেশের স্বাস্থ্য সেবার মান যথেষ্ট উন্নতি সাধিত হয়েছে। এ সময়ে স্বাস্থ্য খাতের এই অগ্রযাত্রা ধরে রাখতে বাংলাদেশকে সকল ধরনের সহযোগিতা অব্যাহতা রাখার আশ্বাস প্রদান করেন তিনি।

স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম বাংলাদেশের স্বাস্থ্য খাতের উন্নয়নের বিভিন্ন দিক তুলে ধরেন এবং বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে তাকে বাংলাদেশ সফরের আমন্ত্রণ জানান।

তিনি বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নিতিনির্ধারণী পর্যায়ে বাংলাদেশের প্রতিনিধি রাখার জন্য মহাপরিচালকের প্রতি আহবান জানান। বৈঠকে সংস্থার মহাপরিচালক বাংলাদেশের টিকাদান কর্মসূচির সাফল্যের প্রসংশা করলে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশেও এখন আন্তর্জাতিক মানের টিকা উৎপাদন হচ্ছে। বাংলাদেশের তৈরি টিকাগুলোকে আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি প্রদানের জন্য বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মহাপরিচালকের প্রতি আহবান জানান।

সাক্ষাৎকালে বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থার দক্ষিণ এশিয়া অঞ্চলের পরিচালক ড. পুনম ক্ষেত্র পাল সিং, বাংলাদেশের স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের সচিব সিরাজুল হক খান, বাংলাদেশ চিকিৎসা গবেষণা পরিষদের চেয়ারম্যান ডা. সৈয়দ মোদাচ্ছের আলী, সুইজারল্যান্ডে নিযুক্ত বাংলাদেশের হাই কমিশনার এম শামীম আহসান, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব হাবিবুর রহমান, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ডা. শারফুদ্দিন আহমেদ, বাংলাদেশ হোমিওপ্যাথি বোর্ডের চেয়াম্যান ডা. দিলীপ রায় প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

এর আগে রোববার রাতে বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থার কার্যালয়ে মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়ে ইভেন্টের বক্তৃতাকালে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জানান, বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া মিয়ানমারের নির্যাতিত প্রায় ১১ লাখ রোহিঙ্গাদের মানিসক স্বাস্থ্য সেবাপ্রদানে বাংলাদেশ বিশেষ আগ্রধিকার প্রদান করেছে। বিশেষ করে মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর নির্যাতনের মানসিক আঘাত দ্রুত কাটিয়ে উঠতে রোহিঙ্গাদের সেবা দিয়েছেন আমাদের চিকিৎসক, নার্সসহ স্বাস্থ্যকর্মীরা।

মোহাম্মদ নাসিম বলেন, আসংক্রমক রোগ নিয়োন্ত্রণে সমস্যা মোকাবেলায় মানসিক স্বাস্থ্যের উপর গুরুত্ব দিয়ে চিকিৎসকদের পেশা গত প্রশিক্ষণের উদ্যোগ নিয়েছে সরকার।

বিশ্বব্যাপী মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়ে যে সব দেশগুলো দৃষ্টান্তমূলক সাফল্য দেখিয়েছে তাদের সমন্বয়ে কানাডার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এই ইভেন্টের আয়োজন করে। কানাডার স্বাস্থ্যমন্ত্রী জিনেট টেউলর এতে সভাপতিত্বে করেন।
মানসিক স্বাস্থ্য ও অটিজোম বিষয়ে বিশ্বব্যাপী জনমত গড়ে তুলতে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মানসিক স্বাস্থ্য সংস্থার বিশেষ প্যানেলের সদস্য সায়মা ওয়াজেদ পুতুলের অবদানের কথাও এ সময়ে তুলে ধরেন মোহাম্মদ নাসিম।

তিনি বলেন, সম্প্রতি বাংলাদেশে মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়ক আইন প্রণয়ন করছে সরকার, যা শিগগিরই জাতীয় সংসদে পাস হবে।
এ দিকে আজ সোমবার জেনেভার প্যালেস ডিনেশনস্ েবিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ৭১তম সম্মেলনের উদ্বোধন করেন সুইজারল্যান্ডের রাষ্ট্্রপতি আ্যঁলা বেরসে।