‘খান’দানের কাছে হেরে গেলেন ‘বচ্চন’রা?

বিডিসংবাদ অনলাইন ডেস্কঃ  টেক্কা দিলেন খান দম্পতি। বচ্চনদের নাকি কয়েক গোলে হারালেন তারা!

ঐশ্বরিয়া রাই বচ্চন এবং অভিষেক বচ্চনকে টেক্কা দেয়াটা কিন্তু সহজ কথা নয়। কিন্তু সেই কাজটাই নাকি সহজে করে ফেললেন এরা, একেবারে খানদানি মেজাজে। আসলে টেক্কা কারা দিচ্ছেন, সেটাও তো বিচার করতে হবে! টেক্কা দিলেন কারিনা কাপুর খান ও সাইফ আলি খান। তারাই বা কম যান কীসে!

ইদানিং কেরিয়ারভিত্তিক প্রায় সব লড়াইতেই নাকি এগিয়ে খানেরা। এই যেমন ধরুন, বিজ্ঞাপন। অভিনয় ছাড়া বিজ্ঞাপন থেকে একটা বড় রোজগার করেন সেলেবরা। সম্প্রতি একটি গার্হস্থ্য দ্রব্যের বিজ্ঞাপন থেকে ঐশ্বরিয়া-অভিষেককে সরিয়ে নাকি জায়গা করে নিয়েছেন কারিনা-সাইফ! ক্যাচ নিউজের খবর অনুযায়ী, গত বছর ওই বিশেষ দ্রব্যের বিজ্ঞাপন করেছিলেন বচ্চন দম্পতি। এ বছরও সেই কনট্র্যাক্ট নাকি রিনিউ করার কথা ছিল। তবে শেষ মুহূর্তে নাকি মত বদল করেন ওই সংস্থার মার্কেটিং টিম। শোনা যাচ্ছে, অ্যাশ-অভির জায়গায় এ বার ওই অফার পাচ্ছেন কারিনা ও সাইফ। ওই সংস্থার মতে, এই মুহূর্তে জনপ্রিয়তার শীর্ষে রয়েছেন খান দম্পতি। তাদের দিয়ে বিজ্ঞাপন করালে প্রডাক্ট বিক্রির ক্ষেত্রে সুবিধে হবে বলে মনে করছে সংশ্লিষ্ট সংস্থা। ফলে অ্যাশ-অভির হাত গলে বেরিয়ে গেল কোটি কোটি টাকার বিজ্ঞাপন!

শুধু একটা উদাহরণ নয়। ইদানিং বেশ কিছু ক্ষেত্রে নাকি ঐশ্বরিয়া-অভিষেককে টেক্কা দিচ্ছেন করিনা-সাইফ। গুগল ট্রেন্ডও সে ইঙ্গিতই দিচ্ছে।

দেখুন, গত এক বছরে গুগল ট্রেন্ডের হিসেব। লাল গ্রাফটি সাইফ আলি খান ও কারিনা কপূরের গুগল সার্চের হিসেব। নীল গ্রাফটি বুঝিয়ে দিচ্ছে ঐশ্বর্যা রাই বচ্চন ও অভিষেক বচ্চনের সার্চ রেজাল্ট। গ্রাফেই পরিস্কার, কোন দম্পতির জনপ্রিয়তা এই মুহূর্তে বেশি। গড় হিসেবে খান দম্পতি বচ্চনদের তুলনায় বেশ কিছুটা এগিয়ে। অর্থাত্ সইফ-করিনাকে নিয়ে আগ্রহ থাকলেও অভিষেক-ঐশ্বরিয়াকে নিয়ে নাকি ইদানিং তেমন আগ্রহ দেখাচ্ছেন না দর্শক। কিন্তু কেন?

কী কারণে এগিয়ে সাইফ-কারিনা?
সাইফ-কারিনাকে নিয়ে সবচেয়ে বেশি সার্চ হয়েছিল ২০১৬-এর ডিসেম্বরে। কারণ হিসেবে অনেকেরই মনে হয়, ২০ ডিসেম্বর জন্ম হয়েছিল সাইফ-কারিনার প্রথম সন্তান তৈমুর আলি খানের। তাকে নিয়ে সাধারণ মানুষের কৌতূহল ছিল তুঙ্গে। কেন ছেলের নাম তৈমুর রাখলেন খান-দম্পতি, তা নিয়েও বিতর্ক কম হয়নি। এ ছাড়াও অন্তঃসত্ত্বা থাকাকালীনও কারিনাকে নিয়ে তুমুল চর্চা হয়েছিল।

২০১৬-এ তার মুক্তিপ্রাপ্ত ছবি ‘কি অ্যান্ড কা’তে দর্শকদের প্রশংসা পেয়েছিলেন করিনা। প্রেগন্যান্সি পিরিয়ডে ‘ভিরে দে ওয়েডিং’-এর শুটিং করেও লাইমলাইটে ছিলেন করিনা। অন্য দিকে চলতি বছরের ২৪ ফেব্রুয়ারি মুক্তি পায় ‘রঙ্গুন’। ছবিটি বক্স অফিসে সাফল্যের মুখ না দেখলেও সাইফ আলি খানের অভিনয় ভালো লেগেছিল সকলের। তাই কেরিয়ার হোক বা ব্যক্তিজীবন সব কিছু নিয়ে গত এক বছরে লাইমলাইটে ছিলেন সাইফ আলি খান ও কারিনা কাপুর খান।

সত্যিই কি পিছিয়ে গেলেন অভিষেক-ঐশ্বরিয়া?
অন্য দিকে ২০১৫-এ ‘জজবা’ দিয়ে চার বছরের বিরতি কাটিয়ে বড় পর্দায় ফিরেছিলেন ঐশ্বরিয়া রাই বচ্চন। সে ছবি বক্স অফিসে মোটামুটি ভালোই ব্যবসা করেছিল। কিন্তু তার ঠিক পরের বছর ‘সর্বজিত’ বক্স অফিসে মুখ খুবড়ে পড়েছিল। ২০১১-এ আরাধ্যার জন্মের আগে ঐশ্বরিয়ার শেষ ছবি ছিল ২০১০-এ মুক্তিপ্রাপ্ত ‘গুজারিশ’। ফলে দীর্ঘ দিন বড় পর্দায় ছিলেন না ঐশ্বরিয়া। ব্যস্ত ছিলেন ব্যক্তিগত জীবনে। মাস কয়েক আগে বাবা কৃষ্ণরাজ রাই প্রয়াত হওয়ার পর পরিবারকে আরও বেশি করে সময় দেন বচ্চন-বধূ। আর ধারে ও ভারে কেরিয়ারের দিক থেকে যে অভিষেক এদের থেকে অনেকটাই পিছিয়ে তা স্বীকার করে নেন বলি ইন্ডাস্ট্রির একটা বড় অংশ। ২০১৬-এ মুক্তিপ্রাপ্ত ‘হাউসফুল ৩’-এ অভিষেককে নিয়ে কিছুটা আশা ছিল সিনে ইন্ডাস্ট্রির। তবে সেখানেও তিনি আশা পূরণ করতে পারেননি বলে মনে করেন বি-টাউনের একটা বড় অংশ। বরং গড় হিসেবে গত বছর অক্টোবর নাগাদ তুলনামূলক ভাবে ঐশ্বরিয়া-অভিষেককে নিয়ে সাধারণ মানুষের আগ্রহ ছিল। যার কারণ হিসেবে অনেকে মনে করছেন, সে সময় দিওয়ালি ছিল। আর দিওয়ালি সেলিব্রেশনের ছবি তারকারা শেয়ার করেছিলেন সোশ্যাল মিডিয়ায়।

ফলে ব্র্যান্ড এন্ডোর্সমেন্টের চাহিদার নিরিখে যে সাইফ-কারিনার থেকে অভিষেক-ঐশ্বরিয়া পিছিয়ে থাকবেন এ যেন স্বাভাবিক। গুগলও সেই প্রমাণ দিল।

সূত্রঃ আনন্দবাজার পত্রিকা