চট্টগ্রামে ঘূর্ণিঝড় ‘মোরা’র ক্ষয়ক্ষতি এড়াতে জেলা প্রশাসনের দূর্যোগ ব্যবস্থানা কমিটির জরুরী সভায় ব্যাপক প্রস্তুতি

ডাক্তার নার্সদের ছুটি বাতিল

চট্টগ্রাম প্রতিনিধি: চট্টগ্রাম উপকূলীয় ধেয়ে আসা ঘূর্ণিঝড় ‘মোরা’র সম্ভাব্য ক্ষয়ক্ষতি এডিয়ে জানমাল রক্ষার জন্য সার্বিক প্রস্তুুতি নিয়েছে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন।
উপকূলীয়এলাকার মানুষের জীবন বাঁচাতে সব স্কুল, কলেজ, সরকারী অফিস, খুলে দেয়া হবে বলে জানিয়েছেন চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক জিল্লুর রহমান। তিনি বলেন, ইতোমধ্যে চট্টগ্রামের উপকূলীয় এলাকার সব আশ্রয় কেন্দ্র খুলে দেয়া হয়েছে।

আজ সোমবার দুপুর পৌনে ১২টায় চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক সম্মেলন কক্ষে দূর্যোগ ব্যবস্থানা কমিটির এক জরুরী সভায় তিনি এসব তথ্য জানান। তিনি বলেন, ধেয়ে আসা ঘূর্ণিঝড়ে সম্ভাব্য ক্ষয়ক্ষতি মোকাবিলায় আমাদের সব ধরণের প্রস্তুতি নেয়া রয়েছে। খোলা হয়েছে কন্ট্রোল রুম (০৩১-৬৩৪৮৪৩)। এছাড়াও নগরীতে ঝুঁকিপূর্ণ পাহাড়ে বসবাসরত ভাসমান নাগরিকদের সরিয়ে নিতে কাজ শুরু করা হয়েছে। ইতোমধ্যে ঝুঁকিপূর্ণ পাহাড়ে বসবাসকারীদের সরিয়ে নিতে ম্যাজিস্ট্রেট পাঠানো হয়েছে। সেখানে বসবাসরতদের সরে যেতে মাইকিং করা হচ্ছে।

সভায় জেলা সিভিল সার্জন ডা. মো. আজিজুর রহমান সিদ্দিকী বলেন, ঘূর্ণিঝড় আঘাত হানবে এমন আশঙ্কায় চট্টগ্রামের সব চিকিৎসক ও নার্সদের ছুটি বাতিল করা হয়েছে।
তিনি বলেন, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ডা. আবুল কালাম আজাদ সকালে ছুটি বাতিল সংক্রান্ত চিঠি পাঠিয়েছেন। সেই চিঠির বার্তা ইতিমধ্যে সব উপজেলায় পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত সব চিকিৎসক ও নার্সকে নিজ নিজ কর্মস্থলে থাকতে বলা হয়েছে।

সিভিল সার্জন বলেন, প্রতিটি উপজেলায় ১৬-২৫টি মেডিকেল টিম গঠন করা হয়েছে। সিভিল সার্জনের পক্ষ থেকে কন্ট্রোল রুম (নম্বর: ০৩১ ৬৩৪৮৪৩) খোলা হয়েছে। ঘূর্ণিঝড়ে কেউ আহত হলে কিংবা আঘাত পেলে কন্ট্রোল রুমে যোগাযোগের পরামর্শ দেন তিনি

আবহাওয়া অধিদপ্তর জানায়, দক্ষিণ বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট নিম্নচাপটি ঘূর্ণিঝড়ে রূপান্তরিত হয়েছে। এই ঘূর্ণিঝড়টির নামকরণ করা হয়েছে “মোরা)”। গত ২৪ ঘণ্টায় বেশ কয়েকবার গতিপথ পরিবর্তন করেছে। চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার সমুদ্র বন্দরসমূহকে ৪ নম্বর স্থানীয় হুঁশিয়ারি সংকেত নামিয়ে তার পরিবর্তে ৭ নম্বর পুনঃ ৭ নম্বর বিপদ সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।

কৃত্রিম ভূ-উপগ্রহ থেকে প্রাপ্ত চিত্র ও আবহাওয়া পূর্বাভাষ মডেল অনুসারে ঘূর্ণিঝড় “মোরা” ফেনী, চট্টগ্রাম, ও কক্সবাজার জেলার উপকূলীয় এলাকার উপর দিয়ে অতিক্রম করার সম্ভাবনা খুবই বেশি। উপকূল অতিক্রম করার সময় ঘূর্ণিঝড়টির সর্বোচ্চ গতিবেগ থাকতে পারে ঘণ্টায় ১০০ থেকে ১৩০ কিলোমিটার।

সেই সাথে স্বাভাবিকের চেয়ে ১০-১৪ ফুট উঁচু জলোচ্ছ্বাস হতে পারে। ঘূর্ণিঝড় মোরা বর্তমানে (বাংলাদেশ সময় সোমবার দুপুর ০১ টা) চট্টগ্রাম, ও কক্সবাজার জেলা থেকে প্রায় ৬০০ কিলোমিটার দূরে অবস্থান করছে।