চট্টগ্রামে হাত-পা বাঁধা আইনজীবীর লাশ উদ্ধার

চট্টগ্রাম প্রতিনিধি: চট্টগ্রাম মহানগরীর বাকলিয়া এলাকায় ভাড়া বাসায় পরিকল্পিত হত্যাকান্ডের শিকার হয়েছেন ওমর ফারুক বাপ্পী (৪০) নামে চট্টগ্রাম আদালতের এক আইনজীবি। এ আইনজীবিকে গোপন অঙ্গন কেটে এবং শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়েছে বলে পুলিশ জানায়। নিহত আইনজীবি বাপ্পি বান্দরবান জেলার আলীকদম উপজেলার চৌমুহনী গ্রামের আলী আহমেদের ছেলে। তিনি দীর্ঘদিন ধরে চট্টগ্রাম আদালতে আইন পেশায় জড়িত ছিলেন।

আজ শনিবার সকালে নগরীর চকবাজার থানা পুলিশ হাত-পা ও মুখ বাধা অবস্থায় তার লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। পুলিশের ধারণা স্ত্রীর সাথে মামলা মোকদ্দমা এবং বিরোধের জের ধরে এ হত্যাকান্ডের ঘটনা ঘটে থাকতে পারে।
পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন এ হত্যাকান্ডের তদন্ত শুরু করেছে।

হত্যাকান্ডের বিষয়টি নিশ্চিত করে চকবাজার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি নূরুল হুদা জানান, হত্যাকান্ডের কোন ক্লু এখনো পাওয়া যায়নি।

চট্টগ্রাম আইনজীবি সমিতির সভাপতি অ্যাডভোকেট আবু হানিফ জানান, স্ত্রী রাশেদার সাথে ওমর ফারুক বাপ্পীর সম্পর্ক ভালো ছিল না। ২০১৪ সালের ডিসেম্বরে নগরীর বাকলিয়া থানায় এবং ২০১৭ সালের এপ্রিলে কোতোয়ালী থানায় বাপ্পী তার স্ত্রী রাশেদার বিরুদ্ধে দুইটি মামলা দায়ের করেছিলেন। চলতি বছরের জানুয়ারিতে স্ত্রী রাশেদা বেগমও বাপ্পীর  বিরুদ্ধে যৌতুকের জন্য নির্যাতনের অভিযোগে একটি মামলা দায়ের করেন।

তিনি জানান বাপ্পী ২০১৩ সালে তিনি আইনজীবি সমিতির সদস্য অন্তর্ভুক্ত হন। আজ সকালে নগরীর চকবাজার থানার কে বি আমান আলী রোডে বড় মিয়া মসজিদের সামনে একটি ভবনের নিচতলার বাসা থেকে মরদেহটি উদ্ধার করেছে পুলিশ। তবে কিভাবে বা কারা এ হত্যাকান্ড ঘঠিয়েছে তা এখনো জানা যায়নি।
ঘটনাস্থলে থাকা পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) পরিদর্শক (মেট্রো) সন্তোষ কুমার চাকমা জানান, বাড়ির মালিক জানিয়েছেন এক সপ্তাহ আগে এক নারী বাসাটা ভাড়া নেয়। তবে নারীর কোন ঠিকানা তারা রাখেন নি।

আজ ভোরে বাড়ীর দারোয়ান বাসার দরজা খোলা দেখে বাসার ভেতরে গিয়ে তিনি একটি লাশ পড়ে থাকতে দেখেন। পরে বাড়ীর মালিক পুলিশে খবর দিলে পুলিশ লাশ উদ্ধার করে।  পুলিশের ধারণা তাকে শ্বাসরোধ করে খুন করা হয়েছে।

এদিকে স্থানীয় সুত্রে জানাগেছে, আইনজীবি ওমর ফারুক বাপ্পীর সাথে বিভিন্ন ব্যাক্তির বিরোধ ছিল। কিছুদিন আগে এলাকায় তার নামে পোষ্টার সাঁটা হয়। সচেতন জনতার নামে এ পোষ্টারে আইনজীবি বাপ্পীকে নারী লোভেী প্রতারক হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়। এবং তার বিরুদ্ধে নারী নির্যাতন মামলায় গ্রেফতারে ছবি ও স্ত্রীর সাথে বিয়ের ছবি দিয়ে লেখা হয় প্রতারক বাপ্পী বিনা পয়সায় বিভিন্ন নারীদের আইনের সহায়তা দিয়ে তাদের কাছে টেনে নারীদের সাথে সম্পর্ক গড়ে তোলে।
তার স্ত্রীর সাথে তালাকের বিষয়টি ৭ মাস গোপন রেখে এক সাথে রাত কাটানোর কথাও উল্লেখ করা হয় পোষ্টারে।

এলাকাবাসীর ধারণা স্ত্রী রাশেদার সাথে সম্পর্ক ছিন্ন এবং বিরোধের জের ধরে স্ত্রীর পক্ষে এসব পোষ্টার সাঁটা হয়। এ বিষয়ে তদন্ত করলে হত্যাকান্ডের রহস্য উদঘাটন হতে পারে বলে এলাকাবাসী ধারণা।