চুয়েটে ৭৭ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত হচ্ছে‘আইটি বিজনেস ইনকিউবেটর’

চট্টগ্রাম প্রতিনিধি: দেশের বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ের প্রথম ‘আইটি বিজনেস ইনকিউবেটর’ স্থাপিত হচ্ছে চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (চুয়েটে)। এ প্রকল্পে ব্যয় হচ্ছে প্রায় ৭৭ কোটি টাকা।

তথ্য-প্রযুক্তি খাতকে দেশীয় সক্ষমতা যুগোপযোগী করতে এবং দক্ষ জনবল গড়ে তুলতে এ প্রকল্পের অনুমোদন দেয়া হয় বলে মন্তব্য করেছেন চুয়েটের ভাইস চ্যান্সেলর অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ রফিকুল আলম।

এদিকে এই প্রকল্প অনুমোদনের পরপরই ফেসবুক স্ট্যাটাসে ইনকিউবেটরের নকশার দুটি ছবি প্রকাশ করে আইসিটি পরিবারের পক্ষ থেকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ধন্যবাদ জানান তথ্য ও যোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী জনাব জুনাইদ আহমেদ পলক।

প্রকল্প সম্পর্কে চুয়েটের ভাইস চ্যান্সেলর অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ রফিকুল আলম বলেন, বর্তমান সরকার “ডিজিটাল বাংলাদেশ” গঠনের লক্ষে তথ্য প্রযুক্তির উপর দেশব্যাপী অনেক প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে। এরই অংশ হিসেবে  সরকারের ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্য-যোগাযোগ প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের অধীনে বিজ্ঞান ও প্রকৌশল মনস্ক জাতি বিনির্মাণের লক্ষে অত্র বিশ্ববিদ্যালয়ে দেশের বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ের প্রথম (‘আইটি বিজনেস ইনকিউবেটর’) স্থাপন একটি যুগান্তকারী পদক্ষেপ। এ প্রকল্পের সম্ভাবনা ও গুরুত্ব অনুধাবণ করে এর বাজেট ৭৭ কোটি থেকে প্রয়োজনে আরো বাড়ানোর জন্যও একনেক সভা থেকে পরামর্শ প্রদান করা হয়। এ প্রকল্প অনুমোদন করায় আমরা মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি। একই সঙ্গে এই প্রকল্প প্রণয়ণ ও অনুমোদনে সংশ্লিষ্ট সকলের প্রতিও ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি।
অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ রফিকুল আলম আরো বলেন, এ বিশ্ববিদ্যালয়ের তথ্য-প্রযুক্তি শিক্ষায় শিক্ষিত গ্রাজুয়েটদের উদ্যোক্তা হিসেবে গড়ে তুলতে, একাডেমিক কার্যক্রমকে শিল্পের চাহিদানুসারে তৈরি করার সংযোগ স্থাপন, বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুষদ এবং শিক্ষার্থীদের জন্য গবেষণা ও উদ্ভাবনী কার্যক্রমের সুযোগ সৃষ্টি এবং ভৌত অবকাঠামোসহ আনুষঙ্গিক সুবিধা নিশ্চিত করবে এই প্রকল্প।

তিনি আরো বলেন, চুয়েটের অগ্রযাত্রায় বর্তমান সরকার অত্যন্ত আন্তরিকভাবে সহযোগিতা করে যাচ্ছে।

গত ফেব্রুয়ারিতে ৩২০ কোটি টাকার একটি ডিপিপি (ডেভলপমেন্ট প্রজেক্ট প্ল্যান) একনেক সভায় অনুমোদিত হয়েছে। এসব বড় প্রকল্পগুলো সুন্দরভাবে বাস্তবায়নের মাধ্যমে সরকারের প্রয়াসগুলোকে সফল ও সার্থক করে গড়ে তুলতে হবে। এজন্য আমি চুয়েট পরিবারসহ সংশ্লিষ্ট সকলের সার্বিক সহযোগিতা কামনা করছি।

প্রসঙ্গত, জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক) এর ২৬তম সভায় গতকাল ৬ জুন (মঙ্গলবার), ২০১৭ ইং একনেক চেয়ারম্যান ও  প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রকল্পটির অনুমোদন দেন। বাংলাদেশ হাইটেক পার্ক কর্তৃপক্ষের তত্ত্বাবধানে প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হবে। সম্পূর্ণ সরকারি (জিওবি) অর্থায়নে ৭৬ দশমিক ৯১ কোটি টাকা প্রাক্কলিত ব্যয়ে এ প্রকল্পটি জুলাই, ২০১৬ থেকে জুন, ২০১৯ পর্যন্ত মেয়াদে বাস্তবায়িত হবে।

এ প্রকল্পের আওতায় চুয়েট ক্যাম্পাসে ১০ তলা ভবনের ৭ তলা পযন্ত ইনকিউবেশন ভবন তৈরি হবে। ৭ তলা ভবনটির প্রতি ফ্লোরে ৫ হাজার বর্গফুট করে মোট ৩৫ হাজার বর্গফুট স্পেস থাকবে।

এছাড়া ৬ তলা ভিত্তিসহ ৪ তলা পর্যস্ত ২ টি ডরমেটরি ভবন যার প্রতি ফ্লোরে ৫ হাজার করে দুটি ভবনে মোট ৪০ হাজার বর্গফুট এবং ৮ তলা ভিত্তির ৬ তলা পর্যন্ত মাল্টিপারপাস প্রশিক্ষণ ভবন যার প্রতি ফ্লোরে ৬ হাজার বর্গফুট করে মোট ৩৬ হাজার বর্গফুট জায়গা থাকবে।

প্রকল্পটি বাস্তবায়নের মাধ্যমে দেশীয় আইটি খাতে সফল উদ্যোক্তা তৈরি এবং বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে উদ্ভাবনী কার্যক্রমকে উৎসাহিত করার পাশাপাশি আইটি শিল্পে বিশ্বব্যাপী বাংলাদেশের সুযোগ আরও অবারিত করার মাধ্যমে তথ্যপ্রযুক্তি খাতের আয় প্রত্যাশিত মাত্রা অর্জন করতে সক্ষম হবে আশা করছে সরকারের তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগ।