ড্যাফোডিল বিশ্ববিদ্যালয় ‘নেশন, পিপল অ্যান্ড পলিটিক্স’ বইয়ের ওপর আলোচনায় অধ্যাপক আবদুল মান্নান

ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির ৭১ মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত ‘একটি জাতির গঠন, তার জনগণ ও রাজনীতি : ভিন্ন চোখে দেখা ’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখছেন বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের চেয়ারম্যান অধ্যাপক আবদুল মান্নান।

বিডিসংবাদ ডেস্কঃ  ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটিতে আজ বুধবার (২০ ডিসেম্বর ২০১৭) বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের চেয়ারম্যান অধ্যাপক আবদুল মান্নান প্রণীত ‘নেশন, পিপল অ্যান্ড পলিটিক্স’ বইয়ের উপর এক আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়েছে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের ৭১ মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত ‘একটি জাতির গঠন, তার জনগণ ও রাজনীতি : ভিন্ন চোখে দেখা ’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন  বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের চেয়ারম্যান অধ্যাপক আবদুল মান্নান। ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির উপাচার্য অধ্যাপক ড. ইউসুফ মাহবুবুল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত আলোচনায় অংশ নেন ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির কোয়ালিটি অ্যাসুরেন্স বিভাগের উপদেষ্টা ড. মার্ক বার্থলোমেউ এবং উপ-উপাচার্য প্রফেসর ড. এস এম মাহাবুব উল হক মজুমদার। স্টুডেন্ট অ্যাফেয়ার্সের পরিচালক সৈয়দ মিজানুর রহমানের সঞ্চালনায় অন্যান্যের মধ্যে আরও উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ হামিদুল হক খান, রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ড. প্রকৌশলী এ কে এম ফজলুল হক, প্রাক্তন উপাচার্য ও এমিরিটাস অধ্যাপক ড. এম লুৎফর রহমান, বিভিন্ন অনুষদের ডিন, বিভাগীয় প্রধান, শিক্ষক, কর্মকর্তা ও শিক্ষার্থীবৃন্দ।

নিজের লেখা বই সম্পর্কে অধ্যাপক আবদুল মান্নান বলেন, পৃথিবীর মধ্যে বাংলাদেশই একমাত্র দেশ যেখানে সরকার পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বদলে যায়। এদেশে মুক্তিযুদ্ধের ওপর মনগড়াভাবে লেখা বইয়ের ছড়াছড়ি । আমি তাই চেষ্টা করেছি মুক্তিযুদ্ধকে নিরপেক্ষভাবে উপস্থাপন করার, যাতে তরুণ প্রজন্ম মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস জানতে পারে। এসময় তিনি ড্যাফোডিল ইউনিভার্সিটিকে ধন্যবাদ জানান এ রকম একটি আলোচনা অনুষ্ঠান আয়োজন করার জন্য।

ড্যাফোডিল বিশ্ববিদ্যালয় ‘নেশন, পিপল অ্যান্ড পলিটিক্স’ বইয়ের ওপর আলোচনায় অধ্যাপক আবদুল মান্নানঅধ্যাপক আবদুল মান্নান তাঁর বক্তব্যে মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের আত্মত্যাগকে গভীরভাবে স্মরণ করেন। তিনি বলেন, একাত্তর সালের ২৬ মার্চে পৃথিবীর ইতিহাসের সবচেয়ে জঘন্যতম গণহত্যা চালায় পাকিস্তান। তারপরই মুক্তিযুদ্ধ শুরু হয়। বিশ্বের আর কোনো দেশের মুক্তিযুদ্ধ এত ভয়াবহভাবে শুরু হয়নি বলে মন্তব্য করেন ইউজিসি চেয়ারম্যান। তিনি বলেন, ৪৬ বছরের পথচলা মোটেও সহজ ছিল না। বিভিন্ন চড়াই উৎরাই পেরিয়ে বাংলাদেশেকে সামনে এগুতে হচ্ছে। তবে সমস্যার চেয়ে বাংলাদেশের অর্জনই বেশি। সবচেয়ে বড় অর্জন নিজেদের অর্থায়নে পদ্মাসেতুর মতো মেগা প্রজেক্ট বাস্তবায়ন করা বলে উল্লেখ করেন অধ্যাপক আবদুল মান্নান। এ সময় তরুণ শিক্ষার্থীদেরকে মুক্তিযুদ্ধের শহীদ রুমি, বদি, আজাদদের জীবন থেকে শিক্ষা নেওয়ার আহ্বান জানান ইউজিসি চেয়ারম্যান।

অনুষ্ঠানে ড. মার্ক বার্থলোমেউ বলেন, বাংলাদেশের সবচেয়ে গৌরবের ইতিহাস হচ্ছে একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ। সেই মুক্তিযুদ্ধ ও বাংলাদেশের জন্মের ইতিহাস নিয়ে বই লিখেছেন প্রফেসর মান্নান, যাতে তরুণ প্রজন্ম মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস জানতে পারে। বইটির সম্পাদনার সঙ্গে জড়িত ছিলেন ড. মার্ক। এজন্য তিনি নিজেকে পরম সৌভাগ্যবান বলে মনে করেন। তিনি বলেন, প্রফেসর মান্নানের সঙ্গে আমার পরিচয় দীর্ঘ দিনের। তার লেখা বই, বিশেষ করে মুক্তিযুদ্ধের বই সম্পাদনার সঙ্গে জড়িত থাকতে পেরে আমি সত্যিই গর্ব বোধ করছি।

দীর্ঘদিন বাংলাদেশের ব্রিটিশ কাউন্সিল কার্যালয়ে কর্মরত ছিলেন ড. মার্ক। সেই সময়ের স্মৃতি উল্লেখ করে বলেন, কাজের সুবাদে বাংলাদেশের প্রায় সব ইংলিশ মিডিয়াম স্কুল পরিদর্শনের সুযোগ হয়েছে আমার। শিক্ষার্থীরা ২১ ফেব্রুয়ারি, ২৬ মার্চ ও ১৬ ডিসেম্বরে আড়ম্বরপূর্ণ অনুষ্ঠান করে থাকে। কিন্তু বছরব্যাপী মুক্তিযুদ্ধের চর্চা হয় না। তরুণ প্রজন্মকে মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস জানাতে হলে ছোটবেলা থেকেই তাদেরকে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসের সঙ্গে পরিচিত করাতে হবে বলে মন্তব্য করেন ড. মার্ক।
ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির ৭১ মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত ‘একটি জাতির গঠন, তার জনগণ ও রাজনীতি : ভিন্ন চোখে দেখা ’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখছেন বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের চেয়ারম্যান অধ্যাপক আবদুল মান্নান।