তেলের সর্বোচ্চ মূল্য বেঁধে দেয়ায় প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান মস্কোর

বিডিসংবাদ অনলাইন ডেস্কঃ

রাশিয়ার তেলের ওপর সর্বোচ্চ মূল্য বেঁধে দেয়ার ব্যাপারে ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন এবং শিল্পোন্নত দেশগুলোর জোট জি-সেভেনকে সতর্ক করে দিয়েছে মস্কো। রাশিয়া ওই প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে বলেছে, তারা পাল্টা পদক্ষেপ গ্রহণ করবে।

পশ্চিমা দেশগুলো রাশিয়ার এক ব্যারেল তেলের সর্বোচ্চ দাম ৬০ ডলার নির্ধারণ করে দেয়ার ব্যাপারে সম্মত হয়, যদিও ইউক্রেন চেয়েছিল এই মূল্য ৩০ ডলার করা হোক। আগামী সপ্তাহ থেকে এই সিদ্ধান্ত কার্যকর হওয়ার কথা রয়েছে।

ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ শনিবার বলেছেন, রাশিয়া এই দর বেঁধে দেয়াটা মেনে নেবে না। তিনি বলেন, রাশিয়া পরিস্থিতি পর্যালোচনা করে সুনির্দিষ্ট পদক্ষেপ গ্রহণ করবে।

অন্যদিকে রুশ পার্লামেন্টের নিম্ন-কক্ষের পররাষ্ট্রনীতি বিষয়ক কমিটির প্রধান লিওনিদ স্লাটস্কি বলেছেন, এরকম করা হলে ইউরোপীয় ইউনিয়ন তাদের নিজেদের জ্বালানি নিরাপত্তাকে ঝুঁকির মুখে ফেলে দেবে।

মূল্য বেঁধে দেয়ার পাশ্চাত্যের এই পরিকল্পনার উদ্দেশ্য হচ্ছে জ্বালানির বিশ্ববাজারকে ক্ষতিগ্রস্ত না করে রুশ অর্থনীতিকে আঘাত করা।

যুক্তরাষ্ট্রের অর্থমন্ত্রী জ্যানেট ইয়েলেন বলেছেন, রাশিয়ার তেলের সর্বোচ্চ মূল্য বেঁধে দেয়ার ফল তাৎক্ষণিকভাবেই মস্কোর রাজস্বের ওপর পড়বে।

কেন এই সিদ্ধান্ত
পাশ্চাত্যের দেশগুলো রাশিয়ার কাছ থেকে সর্বোচ্চ কত দামে জ্বালানি তেল কিনতে পারবে- তার সীমা বেঁধে দিয়ে এক যৌথ বিবৃতিতে শিল্পোন্নত দেশগুলোর জোট জি-সেভেনের সদস্য দেশসমূহ, ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন এবং অস্ট্রেলিয়া বলেছে, ৫ ডিসেম্বর থেকে দামের এই ঊর্ধ্বসীমা কার্যকর হবে বলে আনুষ্ঠানিকভাবে স্থির হয়েছে।

এ পরিকল্পনা অনুযায়ী রাশিয়ার কাছ থেকে অশোধিত তেল কেনার জন্য প্রতি ব্যারেল ৬০ ডলারের বেশি দাম দেয়া যাবে না। সেপ্টেম্বর মাসে জি-সেভেন জোট এ প্রস্তাবের কথা জানিয়েছিল ।

এর লক্ষ্য ছিল ইউক্রেন যুদ্ধের প্রেক্ষাপটে রাশিয়া যেভাবে তেল রপ্তানি করে লাভবান হচ্ছে – তা ঠেকানো।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বলেছে, এই পদক্ষেপের ফলে রাশিয়া যেভাবে ইউক্রেনে যুদ্ধ চালানোর জন্য অর্থসংস্থান করছে তাকে সীমিত করবে।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বলেছে, এই পদক্ষেপের ফলে রাশিয়া যেভাবে ইউক্রেনে যুদ্ধ চালানোর জন্য অর্থসংস্থান করছে তাকে সীমিত করবে।

মার্কিন অর্থমন্ত্রী জ্যানেট ইয়েলেন বলেন, ‘তেল বিক্রির ঊর্ধ্বসীমা বেঁধে দেবার ফলে পুতিনের আয়ের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ উৎসের ওপর তাৎক্ষণিকভাবে আঘাত লাগবে।’

রাশিয়ার প্রতিক্রিয়া
এর পর ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন ও জি-সেভেনের উদ্দেশ্যে সতর্কবাণী উচ্চারণ করে মস্কো।

রাশিয়া বলেছে, কোনো দেশ এই ঊর্ধ্বসীমা কার্যকর করলে তার কাছে তারা তেল পাঠাবে না।

রাশিয়ার পার্লামেন্টের নিম্ন-কক্ষের পররাষ্ট্রনীতিবিষয়ক কমিটির প্রধান লিওনিদ স্লাটস্কি বলেন, এই ঊর্ধ্বসীমা কার্যকর করলে ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন তার নিজের জ্বালানি নিরাপত্তাকেই হুমকির মুখে ফেলবে।

আগামী ৫ ডিসেম্বর থেকে আরো একটি নিষেধাজ্ঞা কার্যকর হচ্ছে, যার ফলে ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের কোনো দেশ সমুদ্রপথে রুশ অশোধিত তেল আমদানি করতে পারবে না।

শিপিং বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ভারত ও চীনের কাছে আরো বেশি অশোধিত তেল রফতানির জন্য রাশিয়া ১০০টিরও বেশি জাহাজের ব্যবস্থা করেছে।

সূত্র : আলজাজিরা ও বিবিসি

বিডিসংবাদ/এএইচএস