নরসিংদীতে ঘুষ গ্রহণে জেলা হাসপাতালের প্রধান সহকারিসহ ২ কর্মচারী গ্রেফতার

নরসিংদী প্রতিনিধি: সিভিল সার্জনের নামে নেয়া ঘুষের এক লক্ষ টাকাসহ হাতেনাতে ধরা পড়েছে নরসিংদী জেলা হাসপাতালের প্রধান সহকারী আশরাফুল ইসলাম পাঠান ও প্যাথলজি সহকারী রেজাউল করিম।

গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে দুর্নীতি দমন কমিশন ঢাকা-২’র পরিচালক মো: নাসিম আনোয়ারের নেতৃত্বে দুদকের একটি দল তাদেরকে তাদের হাসপাতালের নিজ নিজ অফিস কক্ষ থেকে গ্রেফতার করে। দুদক এ সময় তার নিকট থেকে এক হাজার টাকার মূল্যমানের ১০০টি নোট প্যাকেট অবস্থায় উদ্ধার করে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, জেলা হাসপাতালের প্রধান করনিক মো. আশরাফুল ইসলাম পাঠান, নরসিংদীর সিভিল সার্জন ডা. সুলতানা রাজিয়ার নামে ঠিকাদারসহ বিভিন্ন ক্ষেত্র থেকে ঘুষ আদান প্রদান করে থাকে। ঠিকাদাররা বিল নিতে গেলেই সে সিভিল সার্জনের নামে মোটা অংকের টাকা দাবী করে।

কিছুদিন পূর্বে জেলা হাসপাতালের লন্ড্রী ঠিকাদার, মায়ের দোয়া ট্রেডার্সের মালিক নাসির মিয়া কাপড় ধোলাই করার বিল করা হয় ৪ লাখ ৬৮ হাজার টাকা। ঠিকাদার নাসির বিল আনতে গেলে প্রধান করনিক আশরাফুল তাকে জানায় যে, সিভিল সার্জন সুলতানা রাজিয়া এই বিল থেকে দেড় লাখ টাকা ঘুষ দাবী করেছেন। এই টাকা না দিলে বিল দেয়া যাবে না। নাসির মিয়া বাধ্য হয়ে তাকে নগদ ১ লাখ ৩০ হাজার টাকা নগদ ঘুষ প্রদান করে এবং বাকী টাকা পরে দিবে বলে চলে যায়। পরে বাকী ২০ হাজার টাকার জন্য আশরাফুল বার বার ঠিকাদার নাসিরকে ফোন করতে থাকে। এই অবস্থায় নাসির বিষয়টি তার কয়েকজন সহযোগিকে জানালে তারা আশরাফুলের বক্তব্য মোবাইলে রেকডিং করে। সম্প্রতি লন্ড্রী ঠিকাদারীর জন্য পূনরায় টেন্ডার আহবান করলে নাসির মিয়া দরপত্র দাখিল করে।

এরপর প্রধান করনিক তাকে ডেকে নিয়ে জানায় যে, সিভিল সার্জন জানিয়েছেন এক লাখ টাকা ঘুষ দিলে তিনি কাজ পাইয়ে দিবেন। এ অবস্থায় নাসির মিয়া বাধ্য হয়ে তার সহযোগিদের সাহায্যে বিষয়টি দুদক কর্মকর্তাদেরকে অবহিত করে।পরে দুদক ঘুষের ১ লক্ষ টাকা বান্ডিলের মধ্যে মার্ক দিয়ে টাকাগুলো নাসিরের হাতে দিয়ে দেয়। ঠিাকাদার নাসির দুদক কর্মকর্তাদের ফন্দি অনুযায়ী মঙ্গলবার বিকেলে দুদকের মার্ক করা ১ লক্ষ টাকার বান্ডেল নিয়ে জেলা হাসপাতালে যায়। এ সময় দুদক কর্মকর্তাগণ হাসপাতালের বিভিন্ন স্থানে উৎপেতে বসে থাকেন। ঘুষের ১ লক্ষ টাকার বান্ডেল আশরাফুলের হাতে দেয়ার সাথে সাথে কর্মকর্তাগণ ভিতরে ঢুকে তাকে গ্রেফতার করে। পরে তার স্বীকারোক্তিমতে পার্শবর্তী কক্ষে প্যাথলজি সহকারী রেজাউল করিমের নিকট থেকে মার্ক করা এক লক্ষ টাকার বান্ডেল উদ্ধার করে।

এ ব্যাপারে সিভিল সার্জন ডা. সুলতানা রাজিয়ার সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, আমার নামে কেউ টাকা চেয়েছে এ কথা কেউ আমাকে জানায়নি। আর কেউ বললেই তা সত্য হয়ে যায় না।