নরসিংদীর গাবতলীর সন্দেহভাজন জঙ্গী আস্তানার অভিযান সমাপ্ত

নরসিংদী  প্রতিনিধিঃ  নরসিংদীর গাবতলী উত্তরপাড়ায় সন্দেহভাজন জঙ্গী আস্তানায় র‌্যাবের অভিযান সমাপ্ত ঘোষণা করা হয়েছে। রবিবার সকাল সোয়া ১০ টায় অভিযান শুরু হয় এবং মাত্র ২০ মিনিটের মধ্যে সকাল ১০ টা ৩৫ মিনিটে এ অভিযান শেষ হয়। এসময় বাড়ীর ভিতরে থাকা সন্দেহভাজন ৫ জঙ্গী এক এক করে র‌্যাবের কাছে আত্মসমর্পণ করে। তারা হলো মাসুুদুর রহমান, আবু জাফর, মশিউর রহমান, বাশিরুল ইসলাম ও সালাহ উদ্দিন।

তাদের মধ্যে সালাহ উদ্দিন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজ বিজ্ঞান বিভাগের ছাত্র বলে জানা গেছে। সে সিলেটে আতিয়া মহলে জঙ্গী আস্তানার সাথে জড়িত ছিল বলে র‌্যাবের ধারণা। অন্য ৪ জনের সঠিক কোন তথ্য পাওয়া যায়নি। তবে র‌্যাব তাদের ৫ জনকে আটক করে গাড়ীতে তুলে ঢাকার দিকে নিয়ে যায়। শনিবার বিকেল ৪ টা থেকে র‌্যাব-১১ কর্তৃক ঘিরে রাখা দুবাই প্রবাসী মঈন উদ্দিন আহমেদের এক তলা বাড়ীর অভিযান রোববার সকাল ১১ টায় র‌্যাবের মিডিয়া ইউং’র পরিচালক মুফতি মাহমুদ খান আনুষ্ঠানিকভাবে মিডিয়ার সামনে সমাপ্ত ঘোষনা করেছেন। শ্বাষরুদ্ধকর ১৯ ঘন্টার এ অভিযানটি কোন রক্তপাত ছাড়াই সম্পন্ন হয়েছে। নরসিংদীবাসী স্বস্থির নিশ্বাষ ফেলেছেন। র‌্যাব’র মিডিয়া ইউং’র পরিচালক মুফতি মাহমুদ খান মিডিয়া কর্মীদের বলেন, শনিবার রাত ১০ টার দিকে ওই বাড়ীতে জঙ্গী সন্দেহে আটক থাকা লোকদের স্বজনরা আমাদের সংগে যোগাযোগ করেছেন।

আমরা সহযোগিতা চাইলে তারাও আমাদেরকে সহযোগিতা করেছেন। আমরা তাদের সহযোগিতা নিয়েই আজ সকাল ৯ টা ২৫ মিনিটে তাদেরকে আত্মসমর্পণের কথা বলি। এতে তারা সম্মতি দিলে আমরা একে একে ৫ জনকে বের করে নিয়ে এসেিেছ এবং আমাদের হেফাজতে নিয়েছি। তিনি আরো জানান, র‌্যাব সুনির্দিষ্ট তথ্যের ভিত্তিতেই এ বাড়ীটিকে ঘিরে রেখেছিল এবং র‌্যাবের কাছে তথ্য ছিল যে সিলেটের আতিয়া মহলের জঙ্গীদের সঙ্গে এবাড়ীতে বসবাস কারীদের যোগসাজস রয়েছে। যারা এখানে থাকার কথা তাদের অনেকেই নেই। আবার যারা আছে তাদের অনেকেই নতুন এসেছে। এখন আটককৃতদের সঙ্গে জঙ্গীদের কোন যোগাযোগ আছে কি না তা এখনই বলা যাচ্ছে না।  তবে বাড়ীটি তল্লাশী করে কোন অস্ত্র ও গোলা-বারোদ পাওয়া যায়নি।

আটককৃতদের স্বজনদের মধ্যে সাইদুর রহমান নামে এক অভিভাবক জানান, আটককৃতরা হলেন, তার ভাগনে (১) মাসুদুর রহমান, সে জামেয়া কাসেমিয়া কামিল মাদ্রাসারর দশম শ্রেণীর ছাত্র। তার বাড়ী গাজীপুর বোর্ডবাজার এলাকায়।

মাসুদুর রহমান তার ভগ্নিপতি আজহার ইবনে মাহফুজ নামে এক শিক্ষক যিনি গাবতলী এলাকায় মাওলানা কামালুদ্দিন জাফরী’র বাড়ীর দ্বিতীয় তলায় ভাড়া থাকেন, তার হেফাজত থেকে ওই মাদ্রাসায় পড়াশুনা করে। সে শনিবার বিকেল পৌনে ৪ টায় বাসা থেকে বোনের কাছে প্রাইভেট পড়ার জন্য যাচ্ছে বলে বেরিয়ে যায় এবং এ বাসায় থাকা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইংরেজীতে অনার্স ও মাস্টার্স করা আবু জাফর স্যারের নিকট প্রাইভেট পড়ে। (২) আবু জাফর, (৩) মশিউর রহমান, (৪) বাশিরুল ইসলাম ও (৫) সালাহ উদ্দিন।

নরসিংদী জেলা প্রশাসক ড. সুভাষ চন্দ্র বিশ্বাস’র কাছে জানতেই চাইলে তিনি বলেন, র‌্যাবের পক্ষ থেকে এখন পর্যন্ত আনুষ্ঠানিকভাবে আমাকে কিছু জানানো হয়নি। তারা আমাকে আনুষ্ঠানিকভাবে অভিযান শেষের কথা জানালে পরে ১৪৪ ধারা প্রত্যাহার করা হবে।