নারায়ণগঞ্জের রেললাইনের দু’পাশ জুড়ে অবৈধ দোকান-পাট যেন মরণ ফাঁদ

স্টাফ রিপোর্টার, নারায়ণগঞ্জ

নারায়ণগঞ্জ নগরীর চাষাড়া রেল লাইন থেকে শুরু করে ২নং রেলটের দুই পাশে গড়ে উঠেছে অবৈধভাবে দোকানপাট। যা অত্যান্ত ঝুঁকিপূর্ণ বলেই দাবি করেছে নগরবাসী। রেলওয়ে পুলিশসহ সংশ্লিষ্টরা এসব দোকান থেকে প্রতিদিন চাঁদা নিচ্ছে বলে দোকানীরা জানিয়েছে।

এসব দোকানপাটের কারনে প্রায়শ: ঘটছে দুর্ঘটনা। ট্রেনে কাটাও পড়ছে মানুষ। এরমধ্যে বৃহস্পতিবার রাতে রেল লাইন দখল করে গড়ে উঠা দোকানে ফল কিনতে এসে নিহত হয়েছেন অজ্ঞাত এক ব্যক্তি।
এদিকে বিপদজনক হওয়া সত্বেও এসব দোকাপাটের সংখ্যা দিনদিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। তা একমাত্র সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের নজরদারির অভাবে। এর ফলে এসব স্থানে প্রায়ই ঘটছে প্রাণহানিসহ অঙ্গহানির ঘটনা। নারায়ণগঞ্জবাসী দীর্ঘদিন ধরেই এসব দোকানপাট উচ্ছেদের দাবি জানিয়ে আসলেও সংশ্লিষ্ট বিভাগ কোনো রকম ব্যবস্থা গ্রহণ করছে না বলেই অভিযোগ উঠেছে। তবে মাঝে মধ্যে লোক দেখানো উচ্ছেদ অভিযান চলে।

সরেজমিনে দেখা যায়, চাষাড়া থেকে নারায়ণগঞ্জ ষ্টেশনগামী পুরো রেললাইনের পাশেই চলছে দখদারিত্বের রাম রাজত্ব। রেললাইনের আশপাশকে ঘিরে গড়ে উঠছে ঝুট ব্যবসাসহ বিভিন্ন স্থাপনা। রেল লাইনের উভয় পাশঘেঁষে বিপদজনকভাবে বিভিন্ন প্রকার ফল, হলুদ, মরিচ, শুঁটকি, আসবাবপত্র ও কাঁচাবাজারসহ প্রায় শতাধিক অবৈধ দোকানপাট বসেছে। এখানে রেললাইনের সঙ্গে লাগিয়ে বিভিন্ন ঝুড়ি রাখা হয়। ট্রেন আসলে ক্রেতা-বিক্রেতারা লাইন থেকে সরে দাঁড়ায়। অনেক সময় অসাবধনতা বসত তাড়াহুড়ো করে কেউ কেউ সরতেও পারেন না। যার ফলে ট্রেনে কাটা পড়েন অনেকে। এমন ঘটনা নারায়ণগঞ্জে অসংখ্য ঘটেছে।
যার প্রমাণ হচ্ছে গত বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ৯ টার দিকে ঢাকা থেকে নারায়ণগঞ্জগামী একটি ট্রেন আসার সময় ১ নং রেল গেইটে কাটা পড়ে অজ্ঞাত এক ব্যক্তি নিহত হয়। নিহত ওই ব্যক্তি এসময় ট্রেন লাইনের পাশে থাকা ফলের দোকানে ফল ক্রয় করছিলেন। হঠাৎ ট্রেন এসে পড়ায় সে দিশেহারা হয়ে ট্রেনের নিচে কাটা পড়ে যায়। ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়।
জামাল মিয়া নামে এক ক্রেতা জানায়, সস্তা দামে ক্রয়ের আশায় জীবনের ঝুঁকি নিয়েই কেনা-কাটা করতে আসি। কিন্তু কি করবো এছাড়া নগরীর অন্য কোথাও এই দামে পন্য সামগ্রী পাওয়া যায় না।

নারায়ণগঞ্জ রেলওয়ে ষ্টেশন মাষ্টার গোলাম মোস্তফা জানায়, চাষাড়া থেকে ২নং রেলগেট পর্যন্ত রেল লাইনের উভয় পাশে গড়ে ওঠা সবগুলো দোকানপাটই অবৈধ। আমাদের একার পক্ষে উচ্ছেদ করা সম্ভব নয়। এজন্য বিভাগীয় ভূ-সম্পত্তি কর্মকর্তার কাছে চিঠি দেওয়া হয়েছে। তারাও এসে উচ্ছেদ করেছে। এছাড়া নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন থেকেও উচ্ছেদ করা হয়েছে। তারপরেও উচ্ছেদ হচ্ছে না, সকালে উচ্ছেদ করলে বিকেলে আবার দখল হয়ে যায়। আমি নিজেও অনেকবার চেষ্টা করেছি, কিন্তু কোন ফল হয়নি।