নির্যাতনের অভিযোগে আদালতে মামলা করলেন কার্টুনিস্ট কিশোর

বিডিসংবাদ অনলাইন ডেস্কঃ

নির্যাতনের অভিযোগ তুলে অজ্ঞাত আসামিদের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করেছেন কার্টুনিস্ট কিশোর।

বাংলাদেশে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে ১০ মাস ধরে কারাভোগের পর জামিনে মুক্তি পাওয়া কার্টুনিস্ট কিশোর বুধবার দুপুরে ঢাকার মহানগর দায়রা জজ আদালতে এই মামলাটি করেন।

কিশোরের বড় ভাই আহসান কবির বিবিসিকে বলেন, তার ভাইকে ২০২০ সালের ২ মে বাসা থেকে তুলে নিয়ে যায় অজ্ঞাত ব্যক্তিরা। তিন দিন নির্যাতনের পর তাকে ৫ মে র‍্যাবের কাছে হস্তান্তর করা হয়। তাকে ২ মে কারা তুলে নিয়ে গিয়েছিল পরের তিন দিন কারা নির্যাতন করেছিল, তা যেহেতু তারা জানেন না, তাই অজ্ঞাত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে মামলাটি করেছেন তারা।

ভয়াবহ নির্যাতনের বর্ণনা:
গত ৪ মার্চ কারাগার থেকে মুক্তি লাভের পর ঢাকার স্থানীয় পত্রিকার কাছে তার ওপর নির্যাতনের ভয়াবহ বর্ণনা দেন কিশোর।

তিনি বলেন, কীভাবে কোনো ওয়ারেন্ট কিংবা কোনো পরিচয়পত্র না দেখিয়ে তাকে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে যাওয়া হয় এবং কীভাবে গোপন বন্দিশালায় তার ওপর নির্যাতন চালানো হয়। এরপর তাকে কোনো জামিন না দিয়ে ১০ মাস কারাগারে আটক রাখা হয়।

এই নির্যাতনের জেরে তার কানের পর্দা ফেটে যায়। তার দেহে মারাত্মক আঘাতের চিহ্নও তিনি সাংবাদিকদের দেখিয়েছেন।

এক রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়, পুলিশের এফআইআরে লেখা হয়েছে তাকে ৫ মে ভোরবেলা গ্রেফতার করা হয়। এর অর্থ অন্তত ৬০ ঘণ্টা সময় ধরে তাকে বেআইনিভাবে আটক রাখা হয়েছিল। এ বিষয়ে র‍্যাবের সাথে যোগাযোগ করা হলে সংস্থাটির মিডিয়া ও আইন বিষয়ক পরিচালক লে. কর্নেল আশিক বিল্লাহ্ জানান, আইন মেনেই আহমেদ কবির কিশোরকে আটক করা হয়েছে। ‘একজন আসামি যা খুশি তাই বলতে পারে।’

সরকারের বক্তব্য:
কিন্তু আহমেদ কবির কিশোরের এই নির্যাতনের অভিযোগের প্রেক্ষাপটে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান বিবিসিকে বলেন, কারাগারে কোনো নির্যাতন হয়নি এবং অন্য কোথাও হয়ে থাকলে তা খতিয়ে দেখা হবে।

তিনি আরো বলেন, ‘তাকে কোথায় নির্যাতন করলো, আমরা জানবো কী? আটক অবস্থায়তো কোনো নির্যাতন হয়নি। এখন কোথায় হয়েছে, আমি তাদের স্টেটমেন্ট…। আমাদের জেলখানায় কোনো নির্যাতন কাউকে করা হয় নাই। আমরা না দেখে বলতে পারবো না।’

গত বছর ডিজিটল নিরাপত্তা আইনে কার্টুনিস্ট আহমেদ কবির কিশোর ও লেখক মুশতাক আহমেদ আটক করে কারাগারে রাখা হয়েছিল। তাদেরকে ছবার জামিন আবেদন নাকচ করা হয়।

এরই একপর্যায়ে গত মাসে কারাগারে থাকা অবস্থায় অসুস্থ হয়ে মুশতাক খান মারা যান। এর পরই গত ৩ মার্চ কিশোরকে জামিন দেয়ার আদেশ দেন আদালত। আর ৪ মার্চ মুক্তি পান তিনি। সূত্র : বিবিসি