পাকিস্তানে গ্রিড বিপর্যয় : বড় বড় শহর বিদ্যুৎবিহীন

বিডিসংবাদ অনলাইন ডেস্কঃ

জাতীয় গ্রিডে বড় ধরনের বিপর্যয়ের জেরে সোমবার (২৩ জানুয়ারি) সকালে পাকিস্তান জুড়ে লাখ লাখ বাড়িতে ও প্রতিষ্ঠানে বিদ্যুৎ চলে যায়।

দেশের বৃহত্তম শহর করাচী, রাজধানী ইসলামাবাদ, লাহোর ও পেশোয়ারের মতো প্রধান শহরগুলোও বিদ্যুৎবিহীন হয়ে পড়ে।

পাকিস্তানের বিদ্যুৎমন্ত্রী বলেন, দেশের দক্ষিণাঞ্চলে বিদ্যুৎ উৎপাদন ও সরবরাহ লাইনে কিছু সমস্যার কারণে জাতীয় গ্রিডে বিপর্যয় ঘটে।

তবে মন্ত্রী খুররম দস্তগির বলেন, এটি ‘বড় কোনো সংকট নয়’ এবং বিদ্যুৎ দ্রুত ফিরে আসবে।

পাকিস্তানে বিদ্যুৎ সংকট নতুন কিছু নয়। অব্যবস্থাপনা ও বিনিয়োগের অভাবকেই এর জন্য দায়ী করা হয়।

শেষবার ব্যাপক মাত্রার এ ধরনের বিপর্যয় ঘটেছিল অক্টোবর মাসে। বিদ্যুৎ ফিরিয়ে আনতে সে সময় কয়েক ঘণ্টা লেগে যায়।

বিদ্যুৎ মন্ত্রণালয় জানায়, সকাল সাড়ে ৭টার দিকে জাতীয় গ্রিডে ‘ফ্রিকোয়েন্সি’ ওঠা-নামা শুরু হলে বড় ধরনের সংকট দেখা দেয়।। তবে তারা জানায়, উৎপাদন ও সরবরাহ পুনরুদ্ধারে দ্রুত কাজ শুরু করা হয়।

গ্রিডের কিছু কিছু অংশ সচল হয়েছে এবং দেশের বেশ কিছু এলাকায় বিদ্যুৎ ফিরে এসেছে।

বিদ্যুৎমন্ত্রী বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে বলেন, স্থানীয় সময় রাত ১০টার মধ্যে সব জায়গায় বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক হবে।

তবে তিনি পাকিস্তানে টিভি চ্যানেল জিও টিভিকে বলেন, শীতে বিদ্যুতের চাহিদা কমে যাওয়ার অর্থ বাঁচাতে রাতের বেলা অনেক জায়গায় বিদ্যুৎ উৎপাদন বন্ধ রাখা হয়েছিল।

তিনি বলেন, সে কারণে সকালের দিকে যখন স্বাভাবিক বিদ্যুৎ সরবরাহ শুরু করা হয় – তখন দেশের দক্ষিণাঞ্চলে ‘ফ্রিকোয়েন্সি এবং ভোল্টেজ ওঠানামা’ করতে শুরু করে এবং তার জেরেই বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রগুলো এক এক করে বন্ধ হয়ে যায়।

এর ফলে, পাকিস্তান জুড়ে বিদ্যুৎ চলে যায়, সড়কে ট্রাফিক বাতিগুলো নিভে যায়।

লাহোর শহরে মেট্রো রেল চলাচল স্থগিত করা হয় বলে পরিবহন দফতরের কর্মকর্তারা বিবিসিকে জানান।

পাকিস্তানে লোডশেডিং ও ভোল্টেজ ওঠা-নামা নৈমিত্তিক ব্যাপার। বহু বাড়ি, ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে নিজস্ব জেনারেটর রয়েছে। বিদ্যুৎ চলে গেলে সেগুলো চালু করা হয়।

সোমবার বিদ্যুৎ বিপর্যয়ের সময় বিমানবন্দরগুলো সচল ছিল বলে জানিয়েছে বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ। কারণ, তাদের নিজস্ব জরুরি বিদ্যুৎ উৎপাদন ব্যবস্থা রয়েছে।

খাইবার-পাখতুনখোয়া প্রদেশের রাজধানী পেশোয়ারের রেডিং হাসপাতালের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, তাদের নিজস্ব জেনারেটর থাকায় বিদ্যুৎ বিভ্রাট সত্বেও তারা মোটামুটি স্বাভাবিকভাবেই কাজ চালিয়ে গেছেন।

এ মাসের গোড়ার দিকে পাকিস্তানের সরকার বিদ্যুৎ সাশ্রয়ে রাত সাড়ে ৮টার মধ্যে সমস্ত শপিং মল ও বাজার বন্ধ করে দেয়ার নির্দেশ দেয়। রেস্তোরাঁগুলোকে রাত ১০টার মধ্যে বন্ধ করতে বলা হয়।

পাকিস্তানের সরকার জানিয়েছে, এই কড়াকড়ির ফলে ৬২০০ কোটি রুপি সাশ্রয় হবে। সরকারি অফিসগুলোকেও বিদ্যুতের ব্যবহার ৩০ শতাংশ কমাতে বলা হয়েছে।

পাকিস্তানের বিদ্যুৎ উৎপাদন হয় প্রধানত আমদানি করা জ্বালানি দিয়ে।

গত বছর আন্তর্জাতিক জ্বালানির বাজারে দাম অনেকটা বেড়ে যাওয়ায় পাকিস্তানের বৈদেশিক মুদ্রার ওপর বড়রকম চাপ তৈরি হয়েছে।

সূত্র : বিবিসি

বিডিসংবাদ/এএইচএস