প্রেস ক্লাবকে সংঘর্ষের ঢাল বানানো অপরাধের শামিল : তথ্যমন্ত্রী

বিডিসংবাদ অনলাইন ডেস্কঃ

নিরপেক্ষ জাতীয় প্রতিষ্ঠান প্রেস ক্লাবকে কোনো অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা বা সংঘর্ষের ঢাল হিসেবে অপব্যবহার করা অপরাধের শামিল বলে মন্তব্য করেছেন তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ।

তিনি বলেন, ‘প্রেস ক্লাবকে ঢাল হিসেবে ব্যবহার করে ছাত্রদল হাজার হাজার ইট পাথরের টুকরা পুলিশের ওপর নিক্ষেপ করে হামলা চালিয়েছে। প্রেস ক্লাবকে ঢাল হিসেবে ব্যবহার করে এ ধরণের অনাকাঙ্খিত ঘটনা ঘটানো কখনই উচিত নয় এবং এটি অপরাধের শামিল। এ ধরনের ঘটনা অবশ্যই অনভিপ্রেত, দুঃখজনক, অনুচিত এবং কেউ যাতে এভাবে প্রেস ক্লাবকে অপব্যবহার করতে না পারে, সেজন্য আমাদেরকে সতর্ক থাকতে হবে।’

সোমবার সচিবালয়ে তথ্য মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে সিনেমা হল নির্মাণ-সংস্কারে সহজে ব্যাংক ঋণ চালু হওয়ায় তথ্যমন্ত্রীকে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র প্রদর্শক সমিতির পক্ষ থেকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী এ কথা বলেন।

ড. হাছান বলেন, ‘ছাত্রদল রোববার দেশে একটি ঘটনা ঘটানোর চেষ্টা করেছে, একটি অনাকাঙ্খিত ঘটনাকে কেন্দ্র করে দেশে একটি মহল পানি ঘোলা করার চেষ্টা করছে। এ অপচেষ্টা অতীতেও হয়েছে, কোনো লাভ হয় নাই, এবারো কোনো লাভ হবে না।’

ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন নিয়ে আন্তর্জাতিক অঙ্গণের তথ্য-উপাত্ত তুলে ধরে তথ্যমন্ত্রী বলেন, আমাদের দেশের এ আইনের ৬ষ্ঠ অধ্যায়ে যে শাস্তির বিধান রয়েছে, তা ভারতের ইনফরমেশন টেকনোলজি অ্যাক্টের ১১তম অধ্যায়ে এবং পাকিস্তানের প্রোটেকশন অব ইলেকট্রনিক ক্রাইমস অ্যাক্টের ১৮ ধারায় আছে। এছাড়া যুক্তরাষ্ট্রে কম্পিউটার ফ্রড এন্ড এবিউজ অ্যাক্ট, যুক্তরাজ্যে কম্পিউটার মিসইউজ অ্যাক্ট, নেপালে ইলেক্ট্রনিক ট্রানজেকশন অ্যাক্ট, সংযুক্ত আরব আমিরাতে ফেডারেল ডিক্রি ল’ অফ ২০১২ অন কমব্যাটিং সাইবার ক্রাইমস, জার্মানীতে নেটওয়ার্ক এনফোর্সমেন্ট অ্যাক্ট ২০১৭, অস্ট্রেলিয়াতে সাইবার ক্রাইম লেজিসলেশন অ্যামেন্ডমেন্ট অ্যাক্ট ২০১২, সিঙ্গাপুরে সাইবার সিকিউরিটি অ্যাক্ট ২০১৮ এ ধরণের আইন আছে।

তিনি বলেন, এখানে শুধু কয়েকটা দেশের উদাহরণ মাত্র। উন্নত দেশগুলোতেও এ ধরনের অপরাধের ক্ষেত্রে গ্রেপ্তার এবং শাস্তি বিধান করা হয়। তবে অবশ্যই আমিও আপনাদের মতো এই আইনের যাতে কোনো অপপ্রয়োগ না হয় সেজন্য সতর্ক থাকার পক্ষে।

লেখক মুশতাক আহমেদের মৃত্যু নিয়ে হাছান মাহমুদ বলেন, ‘উনার মৃত্যু কীভাবে হয়েছে সেটা আমাদের জানা নেই। মৃত্যুর কারণ নিরূপণের জন্য যে তদন্ত কমিটি হয়েছে, তাদের রিপোর্টে বেরিয়ে আসবে তিনি কোনো ড্রাগ ব্যবহার করতেন কি না বা উনার কিভাবে মৃত্যু হয়েছে, কিংবা কারা কর্তৃপক্ষের কোনো গাফলতি ছিল কি না। তবে এই মৃত্যুর জন্য আমি নিজেও ব্যথিত এবং এটি অবশ্যই অনভিপ্রেত।’

এর আগে সিনেমা হল নির্মাণ-সংস্কারে সহজে ব্যাংক ঋণ চালু হওয়ায় বাংলাদেশ চলচ্চিত্র প্রদর্শক সমিতির পক্ষে প্রধান উপদেষ্টা সুদীপ্ত কুমার দাস তথ্যমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করলে ড. হাছান বলেন, দেশের চলচ্চিত্রশিল্পের যুগান্তকারী উন্নয়নের লক্ষ্যেই প্রকৃতপক্ষে আমাদের মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে বাংলাদেশ ব্যাংকে একটি বিশেষ তহবিল গঠনের জন্য প্রস্তাব দেয়া হয়েছিল। বিষয়টি প্রধানমন্ত্রীকেও অবহিত করি। প্রধানমন্ত্রী অত্যন্ত গুরুত্ব সহকারে বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেন। সে কারণেই আজকে একটি বিশেষ তহবিল গঠিত হয়েছে।

মন্ত্রী জানান, বাংলাদেশ ব্যাংক আপাতত ৫০০ কোটি টাকার তহবিল গঠন করেছে যা প্রয়োজনে ১ হাজার কোটি টাকা বা তারও বেশি করা যাবে এবং সাধারণভাবে ৮ বছরে পরিশোধযোগ্য এই ঋণ গ্রহণের ১ বছর পর থেকে শোধ করা শুরু হবে। এ তহবিল আসলে প্রণোদনা প্যাকেজ। তফসিলি ব্যাংকের মাধ্যমে এটি বিতরণ হবে। বাংলাদেশ ব্যাংক ১.৫ শতাংশ সুদে অর্থটা তফসিলভুক্ত ব্যাংকগুলোকে দেবে। ব্যাংকগুলো জেলা-উপজেলায় সেটি ৪.৫ শতাংশ আর ঢাকা, চট্টগ্রামসহ বিভাগীয় শহরগুলোতে ৫ শতাংশ সুদে ভোক্তাদের কাছে এই ঋণ বিতরণ করবে।

‘ঋণ তারাই পাবে যারা সিনেমা হল সংস্কার করতে চায়, বন্ধ হয়ে গেছে এমন সিনেমা হল পুনরায় চালু করতে চায় অথবা নতুন সিনেমা হল বানাতে চায় এবং একইসাথে কোনো মার্কেটের ভেতরে যদি কোনো সিনেপ্লেক্স, সিনেমা হল কেউ করতে চায় সেই ক্ষেত্রেও পাবে,’ বলেন তথ্যমন্ত্রী। সূত্র : ইউএনবি