বরিশালের জেলখাল উদ্ধারে মেলেনি সরকারী বরাদ্দ

বরিশাল প্রতিনিধি: নগরীর ‘লাইফ লাইন’ হিসেবে পরিচিত জেল খালটি ফের ময়লার ভাগাড়ে পরিণত হওয়ায় উদ্ধার অভিযানে নেমেছে জেলা প্রশাসন। দখলদারদের থাবায় মৃত প্রায় জনগুরুতপূর্ণ এ খালটি গতবছর অর্ধলাখ মানুষের অংশগ্রহণে উদ্ধার অভিযান চালিয়েছিলো জেলা প্রশাসন। তখন জেলা প্রশাসনের এ পদক্ষেপ প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে দেশের সর্বত্র ব্যাপক প্রশংসিত হয়।

সূত্রমতে, ওইসময় খালটি খননের জন্য সরকারের পক্ষ থেকে বরাদ্দেরও আশ্বাস দেওয়া হয়েছিলো। কিন্তু অদ্যবর্ধি কোন বরাদ্দ মেলেনি। বরং শুকনো মৌসুমে খালটি ময়লার ভাগাড়ে পরিনত হয়েছে।

ফলে জেলা প্রশাসন পূর্ণরায় বেসরকারি কোম্পানি ও সিটি কর্পোরেশনের সহায়তা নিয়ে খাল রক্ষার জন্য মাঠে নেমেছে। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, সরকারী বরাদ্দের অভাবে ও সঠিক তত্ত্বাবধান এবং জনসচেতনতা না থাকায় ঐতিহ্যবাহী এ জেল খাল আবারও ময়লার ভাগাড়ে পরিণত হচ্ছে। নগরবাসী মনে করছেম, জেলা প্রশাসনের খালটি সিটি কর্পোরেশনের তত্ত্বাবধানে থাকলেও সিটি কর্পোরেশন বা সরকারী সংশ্লি¬ষ্ট দপ্তরগুলো কোনো উদ্যোগ গ্রহণ না করায় জেলা প্রশাসনের পক্ষে খালটিকে বহমান করে তোলা সম্ভব হচ্ছেনা।

ঐতিহ্যবাহী এ খাল দিয়ে একসময় বহনকারী গয়না নৌকা চলাচল করতো। নগরীর পাশ্ববর্তী এলাকায় পণ্য পরিবহনের অন্যতম মাধ্যম ছিলো এ খালটি। ৩ দশমিক ২ কিলোমিটার দৈর্ঘ্য এ খালটির একাংশের পুরোটাই দখল করে ঘর বাড়িসহ নানা স্থাপনা তৈরি করেছে দখলদাররা। বাকী অংশটুকু ময়লার স্তুপ আর দুইপাশের লোকজনের নানা স্থাপনা তৈরি করায় খালটি এখন মৃত প্রায়।

নগরবাসীর মতে, খালটিকে জেলা প্রশাসন বাঁচানোর চেষ্টা করলেও তা সংরক্ষণ করে দীর্ঘ মেয়াদী কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ না করায় পুনরায় অচল হয়ে পরেছে। বরিশালের তরুন সাংবাদিক তানভির আহম্মেদ অভি বলেন, জেলা প্রশাসক ড. গাজী মোঃ সাইফুজ্জামান স্যার খালটি উদ্ধারের উদ্যোগ গ্রহণ করলেও পুনরায় খালের দুইপাড়ের লোকজন ময়লা আর্বজনা ফেলে তা আবার ময়লার ভাগাড়ে পরিণত করেছে। মানুষ সচেতন না হলে খালটি বাঁচিয়ে রাখা সম্ভব হবেনা।

বাংলাদেশ পরিবেশ আইনজীবী সমিতির (বেলা) বরিশালের সমন্বয়ক এ্যাডভোকেট লিংকন বলেন, নগরীর যে খালগুলো ভরাট হয়ে গেছে তা জনসচেতনতার অভাবে ধীরে ধীরে এভাবেই নিশ্চিহ্ন হয়ে গেছে। সচেতন নগরবাসী জনগুরুতপূর্ণ জেল খালসহ অন্যান্য খালগুলো রক্ষার জন্য সরকারী অর্থ বরাদ্দের জোর দাবি করেছেন।