বাঁধ সংস্কার না করায় ঝুঁকিতে ভোলার প্রায় ৫ লাখ মানুষ

ভোলা সংবাদদাতাঃ  প্রায় ৩’শ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ থাকলেও দীর্ঘদিন সংস্কার না করায় ঝূঁকির মধ্যে রয়েছে, ভোলার  মেঘনা ও তেঁতুলিয়া নদী পাড়ের প্রায় ৫ লাখ মানুষ। এরই মধ্য জোয়ারের পানির চাপে ভেঙ্গে গেছে ৪১ কিলোমিটার বাঁধ। যা দিয়ে প্রতিনিয়ত পানি প্রবেশ করায়, চরম দুর্ভোগে দিন কাটছে নদী তীরের বাসিন্দাদের। বাঁধ সংস্কার করে উঁচু বাধ নির্মাণের দাবি উপকূলবাসীর। আর পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তা বলছে ক্ষতিগ্রস্ত বাধঁগুলো সংস্কার করা হচ্ছে। আর বেড়ীবাঁধ আরো উচু করার জন্য একটি প্রকল্প দেয়া হয়েছে।

মেঘনা ও তেঁতুলিয়া নদী বেষ্টিত জেলা ভোলা। সত্তরের ভয়াবহ বন্যার পর, নদী দুটির তীরে ৩’শ কিলোমিটার বাঁধ নির্মাণ করা হয়। কিন্তু দীর্ঘদিন সংস্কার না করায়, জোয়ারের পানির চাপে এরই মধ্যে নদীর পেটে গেছে ৪১ কিলোমিটার বাঁধ। ভাঙা অংশ দিয়ে পানি ডুকে ফসল নষ্টের পাশাপাশি তলিয়ে যাচ্ছে বিস্তীর্ণ এলাকা। যাতে প্রতি বছরই পানিবন্দী হয়ে পড়েন, লাখো মানুষ। এমন পরিস্থিতিতে বর্ষা এলে অনেকেরই ঠাই হয় বিভিন্ন আশ্রয় কেন্দ্রে।

স্থানীয়রা বলছে বাঁধগুলো টেকসই না হওয়াতে প্রতিনিয়ত পানির চাপে বেড়ীবাঁধ ভেঙ্গে যাচ্ছে। ফলে দিনে দিনে ঝুঁকিরপূর্ণ বেড়ীর্বাধের স্থানের সংখ্যা বাড়ছে।
তাই বেড়ীবাঁধগুলোকে রক্ষার জন্য বেড়ীবাঁধের বাইরে ব্লক ফেলে শক্ত উচুঁ বেড়ীবাঁধের দাবী এলাকাবাসীর।

ধনিয়া ইউনিয়নের সাবেক মেম্বার মাহাবুবুল আলম শানু বলেন, আমরা যারা মেঘনা নদীর পাড়ে বসবাস করছি তারা খুব আতংকের মধ্যে বসবাস করি। কারন সিডর, আইলা, মহাসেন, রোয়ানুতে বেড়ীবাঁধগুলো অনেক ক্ষতি হয়। কিন্তু সঠিকভাবে সংস্কার না করায় বর্ষা মৌসূম আসলেই পানির চাপ পড়লে বেড়ী বাঁধের উপর দিয়ে পানি লোকালয় প্রবেশ করে। তাই বেড়ীবাঁধগুলো পূর্নাঙ্গ রুপে সংস্কার করার দাবী জানায়।

মনপুরা উপজেলার সাংবাদিক মো: শহিদ জানায়, এই উপকূলের মানুষ শুষ্ক মৌসুমে নিরাপধে থাকলেও বর্ষা মৌসুম শুরু হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ঝুঁকির মধ্যে পড়ে গেছে। এই উপজেলার বেড়িগুলো অনেক নিচুঁ। ফলে ৬/৭ ফিট পানি উঠে সব এলাকা প্লাবিত হয়। ফলে ফসলের ক্ষতির পাশাপাশি মানুষের বসবাস ডুবে গিয়ে বসবাস করতে অনেক কষ্ট হয়।

মনপুরা উপজেলার প্রেসক্লাবের  এর সভাপতি মো: আলমগীর বলেন, টেকসই ও মজবুত বেড়ী বাধেঁর পাশাপাশি বেড়ি বাধঁগুলোকে রক্ষার জন্য ব্লক ডেপিং করে এই বেড়ীবাঁধগুলো রক্ষার জন্য জোর দাবী জানাচ্ছি।

ভোলা জেলা হিউম্যান রাইটস ডিফেন্ডার ফোরামের সাধারন সম্পাদক মো: হোসেন বলেন, উপকূল জেলা ভোলা বাসীর দাবী বেড়িবাঁধগুলো রক্ষার জন্য এক সঙ্গে বাজেট দিয়ে সরকারের সেনাবাহিনী দিয়ে কাজ  করানোর দাবী জানায়।

আর পানি উন্নয়ন বোর্ড নির্বাহী প্রকৌশলী মো: কাইছার আলম বলেন, বিভিন্ন ভাঙনের ফলে প্রায় ৪১ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এই বাঁধগুলো মধ্যে আমরা ২০ কি.মি. সংস্কার করছি। আর বাকি বেড়ীবাঁধ সংস্কার ও আরো উচুঁ করার জন্য একটি প্রকল্প দেয়া হয়েছে।
জোয়ারের চাপে মনপুরায় ১৫, ভোলা সদরে ১১, চরফ্যাশনে ৭ তজুমদ্দিনে ৫ ও লালমোহনে ৩ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ ভেঙে গেছে।