বিদ্যুৎকেন্দ্র হচ্ছে রামপালে, সুন্দরবনে নয়: প্রধানমন্ত্রী

রামপালে বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ নিয়ে আন্দোলনকারীদের কাঠোর সমালোচনা করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আন্দোলনকারীরা কোনদিনও রামপালের নির্মাণাধীন প্রকল্প পরিদর্শন করে নাই। এমনকি এটি আদৌ সুন্দরবেনের কোনো ক্ষতি করবে কিনা সে বিষয়েও তারা নিশ্চিত নয়।’

তিনি বলেন, রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র সুন্দরনের পরিবেশে আদৌ কোনো ক্ষতিকর প্রভাব ফেলবে না। রামপালে বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে সুন্দরবনের দূরত্ব তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী প্রকল্পের স্বপক্ষে তাঁর যুক্তি তুলে ধরে বলেন, ‘রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র করা হচ্ছে রামপালে, সুন্দরবনে নয়।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, এই প্রকল্পটি সুন্দরবনের বহিঃসীমার ১৪ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত এবং সুন্দরবনের ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ অঞ্চল হিসেবে স্বীকৃতি পাওয়া এলাকা থেকে ৭০ কিলোমিটার দূরে। ‘কাজেই এই প্রকল্পের দ্বারা সুন্দরবনের কোনো ক্ষতির সম্ভাবনা নেই, ’ যোগ করেন প্রধানমন্ত্রী।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শনিবার দুপুরে প্রকৌশলীদের সংগঠন ইনস্টিটিউশন অব ইঞ্জিনিয়ার্স’র (আইইবি) এর চট্টগ্রাম কেন্দ্রে সংগঠনের ৫৭ তম জাতীয় কনভেশন উপলক্ষ্যে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির ভাষণে এ কথা বলেন।

অনুষ্ঠানে আইইবি সভাপতি প্রকৌশলী কবির আহমেদ ভূইয়া এবং সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ আব্দুস সবুর বক্তৃতা করেন।

চট্টগ্রাম আইইবি কেন্দ্রের সভাপতি প্রকৌশলী সাদেক মোহাম্মদ চৌধুরী অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তৃতা করেন এবং চট্টগ্রাম আইইবি কেন্দ্রের সাধারণ সম্পাদক প্রবীর সেন অনুষ্ঠানে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন।

তাঁর সরকার দেশ জনগণের জন্য কাজ করে যাচ্ছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এই সময়েই একটি গোষ্ঠী রামপাল বিদ্যুত্ কেন্দ্র নির্মাণ নিয়ে রাজধানীতে বসে কথা তুলছে এবং বিশ্বব্যাপী এই প্রকল্পের বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাচ্ছে। ‘তারা রাজধানীতে বসেই প্রচার চালিয়ে যাচ্ছে। …যদিও এদের মধ্যে অনেকেই কোনদিনও রামপালে যায়নি’, বলেন প্রধানমন্ত্রী।

সম্প্রতি সুন্দরবনের কাছে এক হাজার মেট্রিক টন কয়লা বোঝাই একটি বার্জ ডুবে যাবার প্রসঙ্গ উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সে সময় পরিবেশবিদরা কি করেছেন, তারা কি কোন পরীক্ষা-নীরিক্ষা করে দেখেছেন-এতে কি ক্ষতি হতে পারে।’ প্রধানমন্ত্রী প্রশ্ন তোলেন, তাদের কি সে সময় সুন্দরবনে গিয়ে বিষয়টি দেখার প্রয়োজন ছিলা না ?

শেখ হাসিনা বলেন, তাঁর সরকার সুন্দরবন এবং তদসংলগ্ন এলাকার পরিবেশ এবং জীব বৈচিত্রের সুরক্ষায় প্রায় সকল ধরণের পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে । সুন্দরবনের পরিবেশ সুরক্ষার উদ্যোগ প্রসংগে প্রধানমন্ত্রী বলেন, কভার্ড বার্জে করেই গভীর সমুদ্র থেকে কয়লা বিদ্যুত্ কেন্দ্রে পরিবহন করতে হবে। স্বল্প শব্দ তৈরী করে এমন ইঞ্জিন বার্জে ব্যবহার করা হবে এবং দূষণ প্রতিরোধের সবরকমের ব্যবস্থা থাকবে।

বড় পুকুরিয়ার কয়লা ভিত্তিক বিদ্যুত্ কেন্দ্রের প্রসঙ্গে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সেখানে দুটি সাব ক্রিটিক্যাল পাওয়ার প্লান্ট থাকার পরেও সেখানকার ঘনবসতিপূর্ণ এবং সবুজ এলাকার পরিবেশে কোন বিরুপ প্রভাব পড়েনি। উপরন্তু জমির উর্বরতা বেড়েছে এবং সেখানে এখন প্রচুর ধান উত্পাদন হয়। খবর বাসসের।