বিনা বিচারে ১৭ বছর কারাভোগের পর খালাস

এক হত্যা মামলায় অজ্ঞাত পরিচয়ে আসামি হিসেবে গ্রেফতারের পর বিচারিক কার্যক্রম শেষ না করে দীর্ঘ ১৭ বছর কারাভোগের শেষে সূত্রাপুরের মো. শিপনকে খালাস দিয়েছেন বিচারিক (নিম্ন) আদালত।

গত ৩ এপ্রিল ঢাকার পরিবেশ আপিল আদালতের বিশেষ দায়রা জজ বিচারক মশিউর রহমান চৌধুরীর এ রায় দেন।

ওই রায়ের একটি অনুলিপি নিয়ে বৃহস্পতিবার (১১ মে) সুপ্রিম কোর্টে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন আইনজীবী। রায়ে আদালত বলেছেন,আসামিদের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ সন্দেহতীতভাবে প্রমাণিত না হওয়ায় তাদের খালাস দেয়া হয়েছে। বিচার শেষে খালাস পেলেও শিপনের জীবন থেকে চলে গেছে ১৭টি বছর।

এ বিষয়ে সুপ্রিম কোর্ট লিগ্যাল এইড কমিটির প্যানেল আইনজীবী কুমার দেবুল দে সাংবাদিকদের বলেন, বিচারে বিলম্ব হওয়ায় দীর্ঘদিন আটক থাকায় এখন শিপনের পক্ষে আমরা ক্ষতিপূরণ মামলা করব। শিপনের সঙ্গে যোগাযোগ করে এ আবেদন করা হবে।

১৯৯৪ সালে পুরান ঢাকার সূত্রাপুরে দুইপক্ষের মধ্যে মারামারিতে একজন নিহত হন। এ ঘটনায় স্থানীয় মো. জাবেদ বাদী হয়ে সূত্রাপুর থানায় ওই বছরের ২৫ অক্টোবর একটি মামলা করেন।

ওই মামলায় দুই নম্বর আসামি মো. শিপন। কিন্তু এফআইআরে তার বাবার নাম ছিলো অজ্ঞাত।

পরে অভিযোগপত্রে (চার্জশিট) তার বাবার নাম দেয়া হয় মো. রফিক। ঠিকানা লেখা হয়- ৫৯, গোয়ালঘটা লেন, সূত্রাপুর। পরবর্তীতে ২০০০ সালে গ্রেফতার হন শিপন। এরপর ওই বছরের ৭ নভেম্বর থেকে কাশিমপুর কারাগার পার্ট-২ তে বন্দি ছিলেন তিনি।

গত বছরে একটি বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেলে বিনাবিচারে শিপনের বন্দি থাকা নিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রচারিত হয়। সেই প্রতিবেদন আদালতের নজরে আনেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী কুমার দেবুল দে। এরপর তা আমলে নিয়ে ২০১৬ সালের ৩০ অক্টোবর শিপনকে আদালতে হাজির করতে কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দেন আদালত।

ওই বছরের ৮ নভেম্বর তাকে আদালতে হাজির করা হলে হাইকোর্টের বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহীম ও বিচারপতি জে বি এম হাসানের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ তাকে জামিন দেন। একই সঙ্গে ৬০ দিনের মধ্যে এ মামলার বিচার শেষ করার নির্দেশ দেয়া হয়।