বীরশ্রেষ্ঠ কলেজ গভর্নিং বডির বিরুদ্ধে বিস্তার অভিযোগ

বরিশাল ব্যুরো: প্রধানমন্ত্রীর সম্মতিক্রমে সরকারী করণের দ্বারপ্রান্তে থাকা বীরশ্রেষ্ঠ ক্যাপ্টেন মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীর কলেজের ১০জন প্রভাষক ও চারজন কর্মচারী গণপদত্যাগের হুমকি প্রদর্শণ করে বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত আবেদন করেছেন। কলেজের প্রতিষ্ঠাতা অধ্যক্ষকে স্বপদে বহাল রাখার দাবিতে একই আবেদনের সাথে স্থানীয় সুশীল সমাজের শতাধিক ব্যক্তির স্বাক্ষর সংযুক্ত করা হয়েছে।

সূত্রমতে, বরিশাল জেলার বাবুগঞ্জ উপজেলার বীরশ্রেষ্ঠ জাহাঙ্গীর নগর (আগরপুর) ইউনিয়নের অবস্থিত বীরশ্রেষ্ঠ ক্যাপ্টেন মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীর কলেজর অনুদানের ফান্ড থেকে দূর্নীতির মাধ্যমে হাতিয়ে নেয়া প্রায় সাড়ে ১১ লাখ টাকা ও কলেজের সম্পত্তি আত্মসাত, অবৈধপন্থায় কলেজের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য পদ টিকিয়ে রাখা, কলেজের নির্বাহী কমিটির মেয়াদের মধ্যে গবনিং বডির কার্যক্রমে ব্যর্থ হওয়ায় মন্ত্রী রাশেদ খান মেনন এমপির সুপারিশক্রমে অধ্যক্ষ কর্তৃক এডহক কমিটি গঠনের জন্য শিক্ষাবোর্ডের চেয়ারম্যানের কাছে আবেদন করা ও শিক্ষক নিয়োগে মোটা অংকের টাকা ঘুষ ব্যানিজ্যের জন্য কলেজ গবনিং বডির সভাপতি এবং কতিপয় সদস্য কর্তৃক মনগড়াভাবে কলেজের প্রতিষ্ঠাকালীন অধ্যক্ষকে সরিয়ে এক প্রভাষককে অধ্যক্ষ বানানোর ষড়যন্ত্র করা হয়।

এর প্রতিবাদে ওই কলেজের প্রভাষক ও কর্মচারীরা গণপদত্যাগের হুমকি দিয়েছেন। ২০১১ সালে প্রতিষ্ঠিত বীরশ্রেষ্ঠ ক্যাপ্টেন মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীর কলেজে সরকারী বিধি মোতাবেক নিয়োগপ্রাপ্ত (শুরু থেকে অদ্যবর্ধি বিনাবেতনে কর্মরত) ১০জন প্রভাষক ও চারজন কর্মচারীর আবেদনে জানা গেছে, কলেজ গবনিং বডির সভাপতি গোলাম ফারুক খান, বিদ্যোৎসাহী সদস্য এনামুল হক শামীম ও দাতা সদস্য হাজী ছিদ্দিকুর রহমান তাদের অসৎ উদ্দেশ্য হাসিল করার জন্য তৎপর হয়ে উঠেছেন। তারই ধারাবাহিকতায় কোন কারণ ছাড়াই শুধু ওই তিনব্যক্তির বিভিন্ন অনিয়মের প্রতিবাদ করায় কলেজের প্রতিষ্ঠাকালীন অধ্যক্ষ মোঃ মোফাজ্জেল হোসেনকে সরিয়ে মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে তারস্থলে একই কলেজের প্রভাষক আলাল হোসেনকে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ করা হয়েছে বলে ঘোষণা করেন।

সূত্রে আরও জানা গেছে, কাউকে কিছু না জানিয়ে মনগড়াভাবে কমিটির ওই তিনজনে এ সিদ্ধান্ত ঘোষণা করার পর পরই কলেজের ১০ প্রভাষক ও চার কর্মচারী এর তীব্র প্রতিবাদ করে গণপদত্যাগের হুমকি প্রদর্শন করেন। সে অনুযায়ী ওই প্রভাষক ও কর্মচারীরা প্রতিষ্ঠাকালীন অধ্যক্ষ মোঃ মোফাজ্জেল হোসেনকে সরিয়ে তারস্থলে প্রভাষক আলাল হোসেনকে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ করা হলে গণপদত্যাগের হুমকি দিয়ে বৃহস্পতিবার বরিশাল শিক্ষাবোর্ডের চেয়ারম্যানসহ সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় বরাবর লিখিত আবেদন করেন। আবেদনে উল্লেখ করা হয়, শিক্ষা দিক্ষায় সুনামের সাথে পরিচালিত বীরশ্রেষ্ঠর কলেজের প্রতিষ্ঠাতা অধ্যক্ষকে সরিয়ে প্রভাষক আলাল হোসেনকে অধ্যক্ষ করা হলে শিক্ষাক্ষেত্রে পুরো কলেজটি ধ্বংষ হয়ে যাবে।

একই সাথে পৃথক একটি আবেদনে সম্পূর্ণ অবৈধপন্থায় ও ভূয়া কাগজপত্রের মাধ্যমে বীরশ্রেষ্ঠ ক্যাপ্টেন মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীর কলেজের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য দাবীদার এবায়দুল হক শাহিনের সদস্যপদ বাতিলসহ তার বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্যও বোর্ড চেয়ারম্যানের কাছে আবেদন করা হয়। ওই আবেদনে উল্লেখ করা হয় কলেজ প্রতিষ্ঠার পর একাডেমীক স্বীকৃতির জন্য পাশ্ববর্তী আগরপুর ডিগ্রী কলেজের অধ্যক্ষ এবায়দুল হক শাহিনের কাছ থেকে ধারবাবদ (তিনটি স্বাক্ষরিত ব্যাংক চেকের মাধ্যমে) কলেজ ফান্ডে ১০ লাখ টাকা জমা রাখা হয়। তিনদিন ওই টাকা ব্যাংকে জমা রাখার পর কৌশলে শাহিদ মূল টাকার সাথে সুদসহ আরও সাড়ে ১২ হাজার টাকা ব্যাংক থেকে উত্তোলণ করে নেয়।

পরবর্তীতে প্রতারনার মাধ্যমে তিনি (শাহিন) তার ইচ্ছে অনুযায়ী রেজুলেশন লিখে তাতে নিজেকে বীরশ্রেষ্ঠ কলেজের প্রতিষ্ঠাকালীন সদস্য দাবী করে শিক্ষাবোর্ডে জমা দেন। উল্লেখ্য, অবৈধপন্থায় প্রতিষ্ঠাতা সদস্য দাবীদার এবায়দুল হক শাহিন কলেজের বিদ্যোৎসাহী সদস্য এনামুল হক শামীমের সহদর।

স্থানীয়রা বীরশ্রেষ্ঠর নামের কলেজকে ধ্বংষ করার ষড়যন্ত্রকারীদের বিরুদ্ধে সঠিক তদন্তপূর্বক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ ও প্রতিষ্ঠাতা অধ্যক্ষ মোঃ মোঃ মোফাজ্জেল হোসেনকে তার স্বপদে বহাল রাখার জন্য প্রধানমন্ত্রী, শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও বরিশাল শিক্ষাবোর্ডের চেয়ারম্যানের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন। সকল অভিযোগ অস্বীকার করে কলেজ গবনিং বডির বিদ্যোৎসাহী সদস্য এনামুল হক শামীম বলেন, একটি মহল আমাদের বিরুদ্ধে মিথ্যে অপপ্রচার শুরু করেছে।