রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় হল সংস্কারের দাবিতে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ, ভাংচুর

রাবি প্রতিনিধি: সংস্কার না হওয়া, অস্বাস্থ্যকর খাবারসহ হলের নানা অব্যবস্থাপনা বিষয়ে বার বার অভিযোগের পরও প্রভোস্ট ও হল প্রশাসন কর্ণপাত না করায় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি আবাসিক হলে বিক্ষোভ ও ভাংচুর করেছে হলটির আবাসিক শিক্ষার্থীরা। রোববার দুপুর ১ টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের নবাব আব্দুল লতিফ নামের হলটিতে এই বিক্ষোভ কর্মসূচি ও ভাংচুর চালানো হয়।

হলের আবাসিক শিক্ষার্থী আব্দুল্লাহ আল মামুন জানান, বেশ কিছুদিন ধরের হল প্রভোস্টের কাছে সংস্কার, সুপেয় পানির ব্যবস্থা, ডাইনিং এ খাবারের মান বৃদ্ধি, ওয়াশরুমগুলো সংস্কার, দেয়ালে রং করা, নিরবিচ্ছিন্ন ওয়াইফাই, পাঠাগার ব্যবস্থাসহ বিভিন্ন যৌক্তিক দাবি জানিয়ে আসছে শিক্ষার্থীরা। তবে সে ব্যাপারে হলের কোন উদ্যোগ দেখা যায়নি। গতকাল খাবারের ভিতরে জীবন্ত পোকা পাওয়ায় শিক্ষার্থীরা ক্ষুদ্ধ হয়ে এ আন্দোলন করছে।

ঘটনার বিষয়ে ডাইনিং কর্মচারী আব্দুল খালেক বলেন, গতকাল শনিবার খাবারের ভিতরে পোকা পায় এক শিক্ষার্থী। সে কিছু না বলেই টাকা দিয়ে ডাইনিং ত্যাগ করে। তবে আজকে এসে কিছু না বলেই খেতে বসে বিভিন্ন বিষয়ে অভিযোগ দিতে থাকেন। এবং ডাইনিং বন্ধ করতে বলেন অন্য শিক্ষার্থীরা। এর পর টেবিল, বেসিন ভাঙচুর করে। পরে তালা আটকে বন্ধ করে দেয় তারা। আমাদের চলে আসতে বলায় আমরা চলে এসেছি।’

সরেজমিনে দেখা যায়, ডাইনিং এর বেসিনগুলো ভেঙে গুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। টেবিল চেয়ারগুলো উল্টানো। ডাইনিং তালাবদ্ধ। পরে হলের প্রধান ফটক আটকে বিভিন্ন দাবি দাওয়া উপস্থাপন করতে শুরু করে শিক্ষার্থীরা।

বেলা আড়াইটার এর দিকে দিকে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন বিশ্ববিদ্যালয় প্রক্টর অধ্যাপক ড. লুৎফর রহমান ও হল প্রভোস্ট অধ্যাপক বিপুল কুমার বিশ্বাস।

তাদের কাছে খাবার মানসম্মতকরণ, রিডিং রুমের ব্যবস্থা, ওয়াই ফাই, ডাস্টবিন স্থাপন, পত্রিকারুমের উন্নয়ন, ওয়াশরুম সংস্কার, গেমসরুমে পর্যাপ্ত উপকরণ, টিভি রুম সংস্কার, মসজিদে মাইক সংস্কার, টিউবওয়েলের ব্যবস্থা, কর্মকর্তা কর্মচারীদের শোভনীয় আচরণ, হল অভ্যন্তরে আলোর পর্যাপ্ত ব্যবস্থাসহ ১২ টি দাবিতে একটি আবেদন করেন শিক্ষার্থীরা।

দাবির প্রেক্ষিতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রক্টর অধ্যাপক ড. লুৎফর রহমান বলেন, ‘আমি হলটি ঘুরে দেখেছি বিভিন্ন সমস্যা রয়েছে। হল প্রশাসনকে নির্দেশ দিয়েছি আগামী বৃহস্পতিবারের মধ্যে শিক্ষার্থীদের দাবি মেনে নিয়ে হলের সংস্কারের জন্য এবং আবারও সেখানে উপস্থিত হয়ে বিষয়টি পর্যবেক্ষন করব বলে জানিয়েছি।’

এ বিষয়ে লতিফ হল প্রভোস্ট অধ্যাপক বিপুল কুমার কুমার বিশ্বাস প্রক্টরের সাথে একমত হয়ে আগামী ৫ দিনের মধ্যে শিক্ষার্থীদের দাবি দাওয়া পূরণ করার আশ্বাস দেন।