রাবিতে সাংবাদিককে পেটালো ছাত্রলীগ

রাবি প্রতিনিধি: রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মরত (রাবি) ডেইলি স্টারের প্রতিনিধিকে মারধর করে গুরুতর জখম করেছে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। সোমবার বাস ভাঙচুরের আলোকচিত্র তোলার সময় বেলা ১১টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনে ঢাকা- রাজশাহী মহাসড়কে এ ঘটনা ঘটে।

মারধরের শিকার সাংবাদিক আরাফাত রহমান বিশ্ববিদ্যালয়ের গণয়োগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থীএবং রাবি রিপোর্টার্স ইউনিটির কার্যনির্বাহী সদস্য। গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তার চোঁখে মারাত্মক জখম হয়েছে।

মারধরকারী ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা হলেন, বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি আহমেদ সজীব, সাংগঠনিক সম্পাদক আবিদ আল হাসান লাবন ও আইন বিষয়ক সম্পাদক সাইফুল ইসলাম বিজয়।

প্রত্যক্ষদর্শীরা বলেন, সকালে চট্টগ্রাম থেকে রাজশাহীগামী দেশ ট্রাভেলসের একটি বাসে ক্যাম্পাসে আসছিলেন বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের আইন বিষয়ক সম্পাদক সাইফুল ইসলাম বিজয়। কুমিল্লায় ভাড়া নিয়ে বাসের সুপারভাইজারের সঙ্গে তার কথা কাটাকাটি হয়। পরে বাসে বিজয় সিগারেট খাওয়া নিয়ে ফের সুপারভাইজারের সঙ্গে কথাকাটাকাটি হয়।

পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের মেইন গেটে জড়ো হন ছাত্রলীগের ১৫-২০ জন নেতাকর্মী। বাসটি সেখানে আসলে বাসের হেলপার ও সুপারভাইজারকে মারধর করতে উদ্যত হন ও বাস ভাঙচুর করতে থাকে। এসময় সাংবাদিক আরাফাত তার মোবাইলের ক্যামেরা দিয়ে ছবি তুলতে গেলে তাকে বাধা দেন ছাত্রলীগের নেতাকর্র্মীরা। কথা কাটাকাটির একপর্যায়ে তাকে বেধড়ক মারধর করেন ৭-৮ জন নেতাকর্মী।

পরে মেইন গেটে দায়িত্বরত পুলিশরা আরাফাতকে উদ্ধার করে বিশ্ববিদ্যালয় মেডিকেল সেন্টারে ভর্তি করে।  রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে হাসাপাতালের ৮ নম্বর ওয়ার্ডে ভর্তি করানো হয়।

দেশ টাভেলস’র রাজশাহী কাউন্টারের ইনচার্জ মাসুদ রানা বলেন, ‘চট্টগ্রাম থেকে রাজশাহী আসার জন্য বিজয় আমাদের গাড়িতে ওঠেন। তিনি বাসের এফ১ সিটের যাত্রী ছিলেন। গাড়ির মধ্যে ধূমপান করতে গেলে যাত্রীদের কথা ভেবে তাকে বাধা দেয় সুপারভাইজার। এসময় তার সঙ্গে কথা কাটাকাটি হয় বিজয়ের। এতে ক্ষুব্ধ হন বিজয়। গাড়িটি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকে পৌঁছালে, তারা গাড়িটি থামিয়ে ভাঙচুর করে।

অভিযোগ অস্বীকার করে আহমেদ সজীব, হাসান লাবণ ও বিজয় বলেন, আমরা মারধর বা ভাঙচুরের ঘটনায় জড়িত ছিলাম না। সাধারণ শিক্ষার্থীরা এ ঘটনা ঘটিয়েছে।

জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ফয়সাল আহমেদ রুনু বলেন, কয়েকজন সাধারণ শিক্ষার্থীর সঙ্গে বাসের সুপারভাইজারের ঝামেলা হয়েছিল। আমি ও সভাপতি ঘটনাটি জানার সঙ্গে সঙ্গেই সেখানে গিয়ে খোঁজ-খবর নিয়েছি।

সাংবাদিককে মারধরের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘ওখানে সিভিল ড্রেসে থাকা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কিছু সদস্য তাকে মারধর করেছে বলে শুনেছি। আমাদের ছাত্রলীগের কেউ তাকে মারধর করেনি। আর যদি মারধরের সঙ্গে ছাত্রলীগের কেও জড়িত থাকে তবে তার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়া হবে।’

এ বিষয়ে মতিহার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হুমায়ুন কবির বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকজন শিক্ষার্থী বাসটিতে হালকা ভাঙচুর করেছে। এখন পরিস্থিতি স্বাভাবিক।

সাংবাদিককে মারধরের বিষয়ে তিনি বলেন, ঘটনাস্থলে সিভিল ড্রেসে কোন পুলিশ সদস্য উপস্থিত ছিলেন। আর পুলিশ কেন তাকে মারধর করতে যাবে? বরং একজনকে মারধর করতে দেখে পুলিশ সদস্যরাই তাকে উদ্ধার করেছে।