রাবি প্রশাসনে তিন মাসে সাত কর্তাব্যক্তির পদত্যাগ

রাবি প্রতিনিধি: রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি) তিন মাসের ব্যাবধানে প্রসাশনের গুরুত্বপূর্ণ পদ হতে সাত কর্তাব্যক্তির পদত্যাগের ঘটনা ঘটেছে।

পদত্যাগের অধিকাংশ পদে থাকা কর্মকর্তারা সেচ্ছায় এ পদত্যাগ পত্র জমা দিয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় ফলিত পদার্থবিজ্ঞান ও ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষক প্রফেসর এম আব্দুস সোবহান রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ভিসি হিসেবে দ্বিতীয় মেয়াদে নিয়োগের তিন মাসের ব্যবধানে এ সাত কর্মকর্তা অব্যাহতি চান।

পদত্যাগ করা প্রশাসনিক কর্মকর্তারা সকলে  বিগত ভিসি প্রফেসর মুহম্মদ মিজানউদ্দিনের সময় নিয়োগপ্রাপ্ত প্রশাসনের সাতটি পদের কর্তাব্যক্তিরা সেচ্ছায় পদত্যাগ করেছেন। রেজিস্ট্রার, পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক, গ্রন্থাগার প্রশাসক, কলেজ পরিদর্শক, প্রক্টর ও জনসংযোগ প্রশাসকের পদত্যাগের পর বুধবার সকালে সেচ্ছ্য়া পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র-উপদেষ্টা প্রফেসর ড. মিজানুর রহমান।

সূত্রে জানা যায়, সাধারণত ভিসির পছন্দমতো শিক্ষকরাই এই পদগুলোর দায়িত্ব পেয়ে থাকেন। তারই ধারাবাহিকতায় গত ৭ মে প্রফেসর এম আবদুস সোবহান ভিসি হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের পরদিন পদত্যাগ করেন বিগত প্রশাসনের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার প্রফেসর মুহাম্মদ এন্তাজুল হক। কিন্তু তাৎক্ষনিক গ্রহণ না করলেও ৫৩ দিন পরে ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের শিক্ষক প্রফেসর এম এ বারীকে রেজিস্ট্রারের দায়িত্ব দেন। এরপর গত ১৪ জুন হেকেপের অর্থ দূর্নীতির অভিযোগ উঠলে তদন্তের স্বার্থে পদত্যাগ করেন কেন্দ্রীয় গ্রন্থগার প্রশাসক ও বাংলা বিভাগের শিক্ষক প্রফেসর ড. সফিকুন্নবী সামাদী। গত ১ জুলাই কলেজ পরিদর্শকের পদ থেকে পদত্যাগ করেন প্রফেসর বিধান চন্দ্র দাস। পরে গত ৪ আগস্ট ব্যক্তিগত কারণ দেখিয়ে রাবির ভারপ্রাপ্ত পরীক্ষা নিয়ন্ত্রকের দায়িত্ব থেকে পদত্যাগ করেন প্রফেসর আসাবুল হক। এর ঠিক দুইদিন পর গত ৬ আগস্ট মনোবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক প্রফেসর মজিবুল হক আজাদ প্রক্টরের পদ থেকে পদত্যাগ করেন। পদত্যাগের তিন ঘণ্টার মাথায় গণিত বিভাগের শিক্ষক প্রফেসর ড. মো. লুৎফর রহমানকে নতুন প্রক্টর হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়।

গত ১৩ই আগস্ট রোববার বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার প্রফেসর ড. এম এ বারীর কাছে সেচ্ছায় পদত্যাগপত্র জমা দেন জনসংযোগ দপ্তরের প্রশাসক ও গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মশিহুর রহমান। সর্বশেষ বুধবার সকালে পদত্যাগ করেন ছাত্র-উপদেষ্টা প্রফেসর মিজানুর রহমান। এদিকে জনসংযোগ প্রশাসক ও ছাত্র-উপদেষ্টা পদত্যাগ করলে, উক্ত দুই পদে এখনো নতুন কাউকে নিয়োগ দেওয়া হয়নি বলে জানা গেছে। এর ফলে নতুন নিয়োগ না হওয়া পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করতে হবে সংশ্লিষ্ট অব্যহতি চাওয়া ব্যাক্তিদেরকে।

পদত্যাগের বিষয়ে জানতে চাইলে প্রফেসর মিজানুর রহমান বলেন, ‘স্বেচ্ছায় দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি চেয়ে সকালে রেজিস্ট্রার বরাবর পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছি। পরবর্তীতে প্রশাসনের পক্ষ থেকে আমাকে আনুষ্ঠানিকভাবে কিছু জানানো হয়নি। এ পদে নতুন নিয়োগ না হওয়া পর্যন্ত আমাকে দায়িত্ব পালন করে যেতে হবে।’

এ ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয় ভিসি প্রফেসর এম আব্দুস সোবহানের সাথে যোগাযোগ করা হলে তার ব্যাক্তিগত সহকারী ফোন রিসিভ করে বলেন, ‘স্যার মিটিংয়ে ব্যস্ত আছেন।’ অন্যদিকে প্রো-ভিসি প্রফেসর ড. আনন্দ কুমার সাহা বলেন, ‘ছাত্র-উপদেষ্টার পদত্যাগের ব্যাপারে আনুষ্ঠানিকভাবে কিছুই জানানো হয়নি আমাকে।