রায়পুরার দুর্গম চরাঞ্চল বাঁশগাড়ীতে লাঠিয়ালরা বাড়ীঘরে অগ্নি সংযোগ ও লুটপাট চালচ্ছে

নরসিংদী প্রতিনিধিঃ নরসিংদীর রায়পুরা উপজেলার দুর্গম চরাঞ্চল বাঁশগাড়ী ইউনিয়নের দাঙ্গা বিধস্ত ৭টি গ্রামে থম থমে অবস্থা বিরাজ করছে। গত বুধববার সারাদিনব্যাপী দুই লাঠিয়াল বাহিনীর সংঘর্ষে ২ জন নিহত ও অর্ধশত লোক আহত হয়। বাঁশগাড়ী ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি হাফিজুর রহমান সাহেদ সরকারের সাথে বর্তমান ইউপি চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সদস্য সিরাজুল হকের মধ্যে বিদ্ধমান বিরোধ ও শত্র“তাকে কেন্দ্র করে এ সংঘর্ষের সৃষ্টি হয়। ইতিপূর্বে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে উভয় পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষে ২ জন নিহত ও বহুলোক আহত হয়। গত বুধবারের ঘটনায় রায়পুরা থানায় পৃথক দুটি হত্যামামলা দায়ের করা হয়েছে। একটি মামলার বাদী হয়েছে নিহত মাসুদের স্ত্রী রাবেয়া আক্তার। এতে আসামী করা হয়েছে হাফিজুর রহমান সাহেদ সরকারসহ ৩০ জনকে। অপর পক্ষে সাহেদ সরকারের সমর্থক নিহত শারফিন হত্যাকান্ডের ব্যাপারে একটি এজাহার দাখিল করা হয়েছে গত শুক্রবার রাতে। এজাহারটি গ্রহণ করেছেন রায়পুরা থানার ডিউটি অফিসার এসআই জহিরুল ইসলাম। রাতে এজাহার গ্রহণ করে সকালে পুলিশ অস্বীকার করছে।

এ অভিযোগ করে নিহত শারফিনের স্ত্রী জানায়, ‘দায়েরকৃত এজাহারে চেয়ারম্যান সিরাজুল হককে প্রধান আসামী করা হয়েছিল। সে মাথায় পিস্তল ঠেকিয়ে শারিফনকে গুলি করে হত্যা করেছে। এমপি সাহেবের মদদপুষ্ট বিধায় চেয়ারম্যান সিরাজুল হক’র বিরুদ্ধে পুলিশ মামলা নেয়নি। পক্ষান্তরে সিরাজুল হককে আসামী করে বাড়ীঘর ভাংচুর, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায় অপর একটি মামলা দায়ের করা হয়েছিল। এ ক্ষেত্রে পুলিশ বাদীকে ডেকে এনে এজাহার সংশোধন সাপেক্ষে চেয়ারম্যান সিরাজ’র নাম বাদ দিয়ে দায়সারাভাবে মামলাটি গ্রহণ করে। এব্যাপারে ওসি আজাহারের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি ঘটনার সত্যতা অস্বীকার করেন। তিনি বলেন, আমরা এখনো পর্যন্ত শারফিন হত্যার ব্যাপারে কোন এজাহার পায়নি। এজাহার পেলে অবশ্যই মামলা গ্রহণ করা হবে।

এদিকে গত শুক্রবার (২১ এপ্রিল) মাসুদের লাশ এলাকায় নিয়ে আসলে সাহেদ সরকারের লোকেরা লাশ দাফনে বাধাঁ প্রদান করে। এসময় অবস্থা বেগতিক দেখে পুলিশের সহযোগিতায় লাশ দাফন করা হয়। ঘটনাস্থল থেকে ওইদিন পুলিশ উভয় পক্ষের ৭ জন আসামীকে গ্রেফতার করে।

এদিকে সাহেদ সরকারের লাঠিয়াল বাহিনী বাশঁগাড়ী এলাকা দখলে নিয়ে ব্যাপক চাঁদাবাজীতে লিপ্ত রয়েছে। সন্ত্রাসীরা বাড়ী বাড়ী যেয়ে চাঁদা দাবী করছে। চাঁদা দিতে ব্যর্থ হলেই বাড়ীঘর লুটপাটসহ আগুন লাগিয়ে পুড়িয়ে দিচ্ছে। প্রতিদিনই লাঠিয়ালদের অমানবিক উৎপীড়নে জনগন অতিষ্ট হয়ে পড়েছে। সরেজমিন পরিদর্শনকালে দল নিরপেক্ষ এলাকাবাসী জানান  সাহেদ সরকারের লাঠিয়াল বাহিনীর হাত থেকে সাধারণ লোকেরাও রেহাই পাচ্ছে না। এলাকায় বদলবাড়ী নামে ট নিরপেক্ষ একটি বাড়ী হিসেবে পরিচিত। লাঠিয়াল বাহিনীর সদস্যরা এ বাড়ীর ৮টি ঘর পুড়িয়ে দিতেও কুণ্ঠা বোধ করেনি । এ ব্যাপারে বদলবাড়ীর লোকজন সাহেদ সরকারের লাঠিয়াল নেতাদের সাথে যোগাযোগ করলে তারা জানায়, অনেক লাঠিয়ালকে বাহির থেকে ভাড়া করে আনা হয়েছে। আগত ভাড়াটিয়ারা এলাকায় কে নিরপেক্ষ আর কে পক্ষে তা জানেনা বিধায় বদলবাড়ীসহ অন্যান্য বাড়ীতে হামলা, ভাংচুর, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগ চালিয়ে আসছে।

#

এম এ সালাম রানা

নরসিংদী

২৩-৪-১৭