সন্দ্বীপে ইঞ্জিন বোট ডুবি ৪ জনের মরদেহ উদ্ধার নিখোঁজ রয়েছে আরো ১৭ জন

চট্টগ্রাম প্রতিনিধি

চট্টগ্রামের সন্দ্বীপে ইঞ্জিন বোট ডুবির ঘটনায় ৪ জনের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। রবিবার দিবাগত রাত সাড়ে ১২টায় ঘটনাস্থল গুপ্তছড়া থেকে তিন কিলোমিটার দুরে সাগরে ৩টি লাশে উদ্ধার করা হয়।

আজ সোমবার সাড়ে ৮টায় সন্দ্বীপের কাছিয়াপাড় এলাকা থেকে একজনের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে।

৪টি লাশ উদ্ধারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক শামসুল আরেফিন এবং সন্দ্বীপ থানার ওসি মো. সামশুল ইসলাম এবং ফায়ার সার্ভিসের উপ সহকারী পরিচালক জসিম উদ্দিন।  তবে উদ্ধার করা এসব লাশের পরিচয় পাওয়া যায়নি।

সন্দ্বীপ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. সামশুল ইসলাম  জানান, ঘটনাস্থল থেকে ৩ কিলোমিটার দুরে রাত সাড়ে ১২টার দিকে ফায়ার সার্ভিস কোস্টগার্ড ৩ জনের লাশ পাওয়া যায়। আমরা তাদের স্বজনদের মাধ্যমে পরিচয় নিশ্চিত হওয়ার চেষ্টা করছি।

ফায়ার সার্ভিস চট্টগ্রামের উপ সহকারী পরিচালক মো. জসিম উদ্দিন জানান, আজ সকাল সাড়ে ৮টার দিকে উদ্ধারকারী দল সন্দ্বীপের কাছিয়ারপাড় এলাকা খেকে এক ব্যাক্তির লাশ উদ্ধার করেছে। এনিয়ে মোট ৪ জনের মৃতদেহ এবং ২৬ জনকে জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে।

উল্লেখ্য রবিবার সন্ধ্যার দিকে সন্দ্বীপ গুপ্তছড়া ঘাটের কাছে লালবোট নামে ছোট ইঞ্জিন চালিত বোট ডুবে যায়। বোটটিতে ঠিক কতজন যাত্রী ছিল তা কেউ সুনির্দ্দিষ্ট করে বলতে পারেননি।

তবে কোস্টগার্ড এবং স্থানীয়রা জানান, বোটটিতে অন্তত ৪০ থেকে ৫০ জন যাত্রী ছিল। তার মধ্যে মধ্যরাত পযন্ত ২৬ জনের মত উদ্ধার হয়েছে জানাগেছে।
কোস্টগার্ড পূর্ব জোনের কর্মকর্তা ক্যাপ্টেন শহিদুল ইসলাম বলেন, সীতাকুন্ডের কুমিরা থেকে রবিবার বিকালে এমভি সালাম নামে একটি সী ট্রাক প্রায় ৩শ যাত্রী নিয়ে সন্দ্বীপ যায়। এটি গুপ্তছড়া ঘাটের অদূরে নোঙ্গর করার পর যাত্রীরা লাল বোটে উঠার সময় প্রচন্ড বাতাসের কারণে বোটটি ডুবে যায়। এসময় বোটটিতে ৪০ জনের মত ছিল। ইতোমধ্যে ২৬ জনের মত উদ্ধার হয়েছে। ঘটনাস্থলে আমাদের কোষ্টগার্ড টিম উদ্ধার কাজ চালাচ্ছে।
এদিকে বঙ্গোপসাগরের চট্টগ্রামের সন্দ্বীপের গুপ্তছড়া ঘাটে ইঞ্জিন চালিত বোট ডুবির ঘটনায় এখনো পর্যন্ত ১৭ জন যাত্রী নিখোঁজ রয়েছে।

নিখোঁজ ব্যক্তিরা হলেন পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপসহকারী প্রকৗশলী তানভীর মো. জুবায়ের, মাষ্টার ওসমান গনি, মাষ্টার আনোয়ার হোসেনর, মাষ্টার মো. ইউছুফ, হাজী আমিন রসুল, শান্তু, মিজান, কামরুজ্জামান, তাহসিন (৭), নেহা (৫), হাফেজ উল্লাহ, মাঈনুদ্দিন, ইউছুফ, মাসুদ, রাবেয়া আক্তার, সামান্তা, হাসান ।
এদিকে দুর্ঘটনার পর মরদেহ উদ্ধার নিয়ে ভিন্ন ভিন্ন তথ্য পাওয়া যাচ্ছে। ৬ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে বলে স্থানীয়া দাবী করলেও সন্দ্বীপ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা গোলাম জাকারিয়া জানান উদ্ধারকৃত মরদেহের সংখ্যা ৪ জন। কোস্ট গার্ডের দাবী এ পর্যন্ত ৫ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে।
রবিবার সন্ধ্যা সোয়া ৬ টার দিকে ছোট ইঞ্জিন বোটটি ডুবে যায়। মৃতদের মধ্যে যে ৪ জনের পরিচয় জানা গেছে তারা হলেন, বড় দা জলদাশ (৫০), সালাউদ্দিন (২৭), সতীন্দ্র জলদাশ (৫৫), হাজী রুহুল আমিন (৫০) ।

স্থানীয়রা জানান বোটটিতে অন্তত ৪০ থেকে ৫০ জন যাত্রী ছিল। তার মধ্যে সোমবার সকাল পর্যন্ত ৩২ জনের মত উদ্ধার হয়েছে।

আজ সোমবার সকালে বাংলাদেশ নৌবাহিনীর দুটি ডুবুরি দলের আট সদস্য স্পিড বোট নিয়ে উপকুলে টহল দিচ্ছে যাতে কোনো লাশ ভাসতে  দেখলে উদ্দার করা যায়। এছাড়া বনৌ বাহিনীর জাহাজ অপরাজেয়’ উদ্ধার অভিযানে অংশ নিয়েছে। কিন্তু সাগরে আবহাওয়া খারাপ থাকায় উদ্ধার কাজে ব্যহত হচ্ছে।
সন্দ্বীপ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা গোলাম জাকারিয়া জানান, এ পর্যন্ত মোট ৩২ জনকে জীবিত এবং ৪ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। সাগর উত্তাল থাকায় উদ্ধার কাজে ব্যাঘাত ঘটছে চরম ভাবে।

এদিকে নিখোঁজদের সন্ধানে তাদের আত্মীয় স্বজনরা সাগর পাড়ে ভিড় জমিয়েছে। সন্দ্বীপের সাংসদ মাহফুজুর রহমান মিতা, উপজেলা চেয়ারম্যান মাষ্টার শাহজাহান বিএসহ প্রশাসনের কর্মকর্তারা উদ্ধার কাজ তদারকি করছেন বলে জানান ইউএনও গোলাম জাকারিয়া।