সারাদেশে বন্দুকযুদ্ধে নিহত ৮

বিডিসংবাদ অনলাইন ডেস্কঃ  মাদকবিরোধী যৌথ অভিযানে কথিত বন্দুকযুদ্ধে রাজধানীতে একজনসহ সারাদেশে আটজন নিহত হয়েছে। রাজধানী ছাড়া অন্যদের মধ্যে রয়েছে, কুমিল্লা, ঝিনাইদহ, ময়মনসিংহ, সাতক্ষীরা, কক্সবাজার, ঝিনাইদহ, নেত্রকোনায় একজন করে মোট সাতজন। বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে এসব ঘটনা ঘটে।

ঢাকা
তেজগাঁও বিজি প্রেস এলাকায় র‍্যাব-২-এর সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ কামরুল ইসলাম (৩৫) নামের এক ব্যক্তি নিহত হয়েছেন। র‍্যাব বলছে, নিহত কামরুল মাদক ব্যবসায়ী। তার বাসা রাজধানীর মহাখালীর দক্ষিণপাড়ায়।

তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মিজান রাত দেড়টার দিকে কামরুলকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান। কর্তব্যরত চিকিৎসক কামরুলকে মৃত ঘোষণা করেন।

নিহত ব্যক্তির লাশ হাসপাতালের জরুরি বিভাগের মর্গে রয়েছে।

কুমিল্লা
আমাদের কুমিল্লা সংবাদদাতা জানিয়েছেন, কুমিল্লায় থানা ও ডিবি পুলিশের মাদক বিরোধী যৌথ অভিযান চলাকালে মাদক ব্যবসায়ীদের সাথে পুলিশের ‘বন্দুকযুদ্ধে’ গুলিবিব্ধ হয়ে কামাল হোসেন প্রকাশে ফেন্সি কামাল (৫১) নামের তালিকাভুক্ত এক মাদক ব্যবসায়ী নিহত হয়েছে।

নিহত কামাল হোসেন জেলার আদর্শ সদর উপজেলার রাজমঙ্গলপুর গ্রামের হিরন মিয়ার পুত্র। নিহত ওই মাদক ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে বুড়িচং ও কোতয়ালী মডেল থানায় ১২টির অধিক মাদকের মামলা রয়েছে।

বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত সোয়া ১২টার দিকে বুড়িচং উপজেলার ষোলনল ইউনিয়নের মহিষমারা এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। ঘটনাস্থল থেকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন অভিযানে অংশ নেয়া কুমিল্লা ডিবির এসআই শাহ কামাল আকন্দ পিপিএম।

পুলিশ সূত্রে জানা যায়, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে মাদক উদ্ধার করতে জেলার বুড়িচং থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মনোজ কুমার এবং ডিবির ওসি নাছির উদ্দিন মৃধার নেতৃত্বে ডিবি ও থানা পুলিশের দুটি টিম জেলার বুড়িচং উপজেলার মহিষমারা এলাকায় অবস্থান নেয়। বৃহস্পতিবার রাত সোয়া ১২টার দিকে তালিকাভুক্ত মাদক ব্যবসায়ী ফেন্সি কামাল ও তার সহযোগিরা ওই এলাকা দিয়ে মাদক পাচারকালে পুলিশ তাদের আটকের চেষ্টা চালায়। ডিবির এসআই শাহ কামাল আকন্দ পিপিএম জানান, পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে মাদক ব্যবসায়ীরা পুলিশকে লক্ষ্য করে গুলি চালায়। এ সময় পুলিশও আত্মরক্ষায় পাল্টা ৩৪ রাউন্ড গুলি চালায়। উভয় পক্ষের গুলি বিনিময়ের ঘটনায় মাদক ব্যবসায়ী ফেন্সি কামাল গুরুতর আহত হয়। তাকে উদ্ধার করে কুমেক হাসপাতালে নেয়ার পর ডাক্তার তাকে মৃত ঘোষণা করেন। অভিযানের সময় ডিবির এসআই নন্দন চন্দ্র সরকার, এএসআই সাহাবুল হোসেন ও কনস্টেবল সুমন মিয়া আহত হন।

ঝিনাইদহ
ঝিনাইদহ সংবাদদাতা জানান, ঝিনাইদহের কালীগঞ্জের পৌর এলাকার আড়পাড়া নামক স্থানে পুলিশের সাথে কথিত বন্দুকযুদ্ধে শামীম সরদার (৪৫) নামের এক মাদক ব্যবসায়ী নিহত হয়েছে। এসময় ৩ পুলিশ সদস্য আহত হয় এবং ঘটনাস্থল থেকে ১টি পিস্তল, ৩ রাউন্ড গুলি, ৫০০ পিস ইয়াবা ও ১৭ বোতল ফেন্সিডিল উদ্ধার করা হয়।

বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত সাড়ে ১১টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। নিহত শামীম আড়পাড়া এলাকার মমিন সরদারের ছেলে।

কালীগঞ্জ থানার ওসি মিজানুর রহমান জানান, রাতে মাদক উদ্ধারে উপজেলার পৌর এলাকার আড়পাড়া নামক স্থানে অভিযান চালায় পুলিশ। এসময় পুলিশকে লক্ষ করে মাদক ব্যবসায়ীরা গুলি ছোড়ে। পুলিশও পাল্টা গুলি ছুড়লে বন্দুকযুদ্ধ শুরু হয়। পরে মাদক ব্যবসায়ীরা পালিয়ে গেলে ঘটনাস্থল থেকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় শামীম সরদার নামের এক মাদক ব্যবসায়ীকে উদ্ধার করে কালীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হলে কর্তব্যরত ডাক্তার তাকে মৃত বলে ঘোষণা করে। লাশ কালীগঞ্জ থানায় রাখা হয়েছে।

ময়মনসিংহ
ময়মনসিংহ অফিস জানায়, ময়মনসিংহ শহরের পুরোহিত পাড়ায় বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত পৌনে দুইটার দিকে ডিবি পুলিশের সাথে বন্দুকযুদ্ধে মাদকসম্রাট রাজন নিহত হয়। এ সময় ডিবির ওসিসহ দুইজন আহত হন।

ডিবির ওসি আশিকুর রহমান জানান, শহরের পু‌রোহিত পাড়া রেলও‌য়ে ক‌লোনি ভাঙ্গা ওয়াল এলাকায় রেনু বেগ‌মের বাড়ির দ‌ক্ষিণ-প‌শ্চিম কো‌ণে পুকুরপা‌ড়ে ময়মন‌সিং‌হের শীর্ষ মাদক ব্যাবসায়ী আলালসহ এলাকায় কতিপয় মাদক ব্যবসায়ী মাদক ভাগাভাগি করছে এমন তথ্যের ভিত্তিতে বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত পৌনে দুইটার দিকে তার নেতৃত্বে ডিবির টিম রেনু বেগ‌মের বাড়ির সাম‌নে পৌঁছলে মাদক ব্যবসায়ীরা পুলিশের উপস্হিতি টের পেয়ে পুলিশকে লক্ষ্য করে গুলিবর্ষণ করলে পুলিশও আত্মরক্ষার্থে পাল্টা গুলি ছোড়ে। এক পর্যায়ে মাদক ব্যবসায়ীরা পালিয়ে গেলে ঘটনাস্হলে গুলিবিদ্ধ অবস্হায় মাদক সম্রাট রাজনকে পাওয়া যায়। তাকে চিকিৎসার জন্য ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক আহত রাজনকে মৃত ঘোষণা করেন। ঘটনাস্থল তল্লাশি করে ৪০০ পিস ইয়াবা, ‌তিন‌টি গু‌লির খোসা, একটি চাই‌নিজ কুড়াল ও একটি ধারা‌লো হাসুয়া উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় তিনি ও পুলিশ সদস্য কাওছার গুরুতর আহত হন। আহত পুলিশদ্বয় পুলিশ হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন। এ বিষয়ে মামলা রুজু প্রক্রিয়াধীন। মৃত রাজ‌নের বিরু‌দ্ধে মাদকসহ অন্যান্য আই‌নে ৮/৯ টি মামলা আছে।

সাতক্ষীরা
সাতক্ষীরা সংবাদদাতা জানান, সাতক্ষীরায় কলারোয়ায় মাদক ভাগাভাগি নিয়ে দুই গ্রুপের মধ্যে বন্দুকযুদ্ধে ইউনুস আলী দালাল (৪৫) নামে এক মাদক ব্যবসায়ী নিহত হয়েছেন। ঘটনাস্থল থেকে পুলিশ একটি ওয়ান শ্যুটারগান, ২ রাউন্ড গুলি ও ৭০ বোতল ভারতীয় ফেনসিডিল উদ্ধার করেছে।

শুক্রবার ভোর রাত দুইটার দিকে উপজেলার সোনাবাড়িয়া ইউনিয়নের রামকৃষ্ণপুর গ্রামে এ বন্দুকযুদ্ধের ঘটনা ঘটে।

নিহত ইউনুস আলী দালাল উপজেলার দক্ষিণ ভাদিয়ালি গ্রামের আব্দুল্লাহ দালালের ছেলে।

কলারোয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বিপ্লব কুমার নাথ জানান, ভোর রাত দুইটার দিকে সোনাবাড়িয়া ইউনিয়নের রামকৃষ্ণপুর-বড়ালি পাকা রাস্তার পাশে সীমান্ত এলাকায় দুইদল মাদক ব্যবসায়ীর মধ্যে গোলাগুলি হচ্ছে বলে তারা খবর পান। তাৎক্ষণিক পুলিশের একটি টহল দল ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে সেখানে ৫ রাউন্ড ফাঁকা শর্টগানের গুলি ছোড়ে। এতে দুইপক্ষই ছত্রভঙ্গ হয়ে পালিয়ে যায়। পরে বিলের মধ্যে তল্লাসী চালিয়ে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় ইউনুসকে পাওয়া যায়। এরপর তাকে দ্রুত উদ্ধার করে কলারোয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক শফিকুল ইসলাম তাকে মৃত ঘোষণা করেন। ঘটনাস্থল থেকে পুলিশ একটি ওয়ান শ্যুটার গান, দুই রাউন্ড গুলি ও ৭০ বোতল ভারতীয় ফেনসিডিল উদ্ধার করে। তিনি আরও জানান, নিহত ইউনুস আলী দালাল একজন শীর্ষ মাদক ব্যবসায়ী। তার নামে একাধিক মাদক মামলা রয়েছে। নিহতের লাশ উদ্ধার করে সাতক্ষীরা সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে।