হরিণাকুন্ডুর মেলায় রমরমা জুয়ার হাট, অশ্লিলতার বিষে হতাশ এলাকাবাসী !

ঝিনাইদহ প্রতিনিধিঃ ঝিনাইদহের হরিণাকুন্ডু উপজেলার ভবানীপুরে মেলার নামে চলছে উলঙ্গ নৃত্য। মেলার ঐতিহ্য ভেঙ্গে অশ্লিলতার বিষ ছড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে। যুবতী মেয়েরা মঞ্চে উলঙ্গ হয়ে নাচছে। আর নগ্নতার শেষ দৃশ্য পর্যন্ত অবলোকন করছে যুব সমাজ। ফলে বেসামাল যুব সমাজ যাত্রা ও ভ্যারাইটি শোর নামে আয়োজিত অপসাংস্কৃতি দেখতে ছুটছে হরিণাকুন্ডু উপজেলার ভবানীপুর বাজারের মেলায়।

নগ্নতার পাশাপাশি চালু আছে গাজা, মদ, ইয়াবা, ফেন্সিডিল, জুয়ার আসর, হাউজি, চরকি, ওয়ানটেন, ফোরগুটি ও দৈনিক স্বাধীনতা নামের লটারি। জুয়াড়ি মেহমানদের ফূর্তি মারার জন্য বাইরে থেকে যুবতী মেয়েদের আনা হয়েছে বলেও গুজব ছড়িয়ে পড়েছে। আয়োজকদের এ সব কর্মকান্ডে চারিদিকে ছি ছি রব উঠেছে যে, হরিণাকুন্ডুর ভবানীপুরের মেলায় হচ্ছেটা কি? আয়োজকদের এই ঘৃনিত কর্মকান্ডে মেলায় ভাল মানুষের সমাগম কমে এসেছে।

এছাড়া এইচএসসি পরীক্ষা শেষ হবে আগামী ১৫ মে। একদিকে এইচএসসি পরীক্ষা অন্যদিকে হরিণাকুন্ডু সন্ত্রাস কবলিত উপজেলা। এর মধ্যে প্রশাসনের যাত্রার অনুমতি দেয়ায় হতবাক হয়েছেন শিক্ষার্থীদের অভিভাবক ও এলাকার সাধারন মানুষ। এছাড়া এ উপজেলাতে গাজী ওমর ফারুক নামে এক পুলিশ সদস্যকে কুপিয়ে হত্যা করে জামায়াত-শিবির।

সম্প্রতি কায়েতপাড়া বাওড়ের সভাপতি জিয়াকে গুলি করে হত্যা করে সন্ত্রাসীরা। ভবানীপুর সন্ত্রাস কবলিত ৩ উপজেলার সিমান্ত হওয়ায় মেলাকে কেন্দ্র করে বড় ধরনের অঘটন ঘটতে পারে বলে ধারনা করছেন এলাকাবাসী। মেলাকে কেন্দ্র করে সন্ত্রাসীদের আনাগোনা বৃদ্ধি পেয়েছে। এলাকাবাসি জানায়, হরিণাকুন্ডু উপজেলা শহরে গত কয়েক মাস আগে থানার ২০০ গজ দুরে এ মেলার নামে নগ্ন নৃত্য, জুয়া, হাউজি, ওয়ানটেন খেলা হয়েছিল।

আগে মেলা বসাতে সরকারের কোন অনুমতি প্রয়োজন ছিল না, কিন্তু এখন লাগে। হরিণাকুন্ডু উপজেলার ভবানীপুরের অবৈধ্য বাজার কমিটির ব্যানারে ২৩ এপ্রিল থেকে মেলার নামে ভ্যারাইটিজ ও জুয়ার আসর বসে গেছে। উপজেলার ভবানীপুর এলাকার সারু মিয়া, হারুন, নজরুল মিয়া, জাপি,পপ্পু, বাচ্চু মোল্লা, আতিয়ার হোটেল ও শরিফুল মামলা সহ কিছু প্রভাবশালীদের তত্বাবধানে মুলত অপকর্ম পরিচালিত হচ্ছে। মেলার নামে অশ্লিলতার বিষবাস্প ছড়িয়ে কাড়ি কাড়ি টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে এই গ্রুপটি। জানা গেছে, জেলা প্রশাসন থেকে ১৫ দিনের জন্য মেলার অনুমতি দেয়া হয়েছে।

জুয়া, হাউজি বাম্পার, লটারী ওয়ানটেনসহ ভ্যারাইটি শো’র অনুমতি দেয়া না হলেও সেগুলোই চলছে পুরোদমে। মেলার সঙ্গে ঘনিষ্ট একটি সুত্র জানায় এবার মেলায় চড়া হারে খাজনা আদায় করা হচ্ছে। এ রকম জবরদস্তি মুলক কর্মকান্ড চলছে হরিণাকুন্ডুর ভবানীপুর বাজারের মেলা নামক পারুল অপেরায়। জেলা প্রশাসন এলআর তহবিলে টাকা নিয়ে মেলার অনুমতি দিযেছেন।

তাছাড়া উপজেলা প্রশাসন ও থানা পুলিশ নিয়মিত ভাবে এই মেলা থেকে বখরা নিচ্ছে এমন কথাও শোনা যা্েচ্ছ। তবে নিকটবর্তী হরিণাকুন্ডু থানার ভবানীপুর ক্যাম্পের পুলিশ সদস্যরা এ সব দেখেও না দেখার ভান করছে বলে অভিযোগ। তবে মেলার সাথে জড়িত ঘনিষ্ট সূত্র জানিয়েছে হরিণাকুন্ডু থানার ওসিকে প্রতি নাইট ৩০ হাজার টাকা করে দিয়ে আমরা এ সব চালাচ্ছি।

এদিকে ভবানীপুরের মেলায় জুয়া, হাউস বাম্পার, ওয়ানটেন, লটারিসহ অবৈধ্য কর্মকান্ড বন্ধ ও সংশ্লিষ্ট যাবতীয় সরঞ্জামাদি আটক এবং মেলার সাথে জড়িত সংশ্লিষ্টদেরকে আটক পূর্বক আদালতে সোপর্দ করতে হরিণাকুন্ডু থানার ওসিকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। বৃহস্পতিবার ঝিনাইদহ চিফ জ্যুডিসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট মোঃ জাকির হোসেন স্বাক্ষরিত পত্রে এ নির্দেশ দেয়া হয়।

তাহেরহুদা ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের এক নেতা জানান, জুয়া, হ্উাসি, ওয়ানটেন, অশ্লিলতা আর নগ্ন নৃত্যের কারনে এলাকার পরিবেশ নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। এ ব্যাপারে জেলা পুলিশের একজন কর্মকর্তা জানান, অশ্লিলতা আর জুয়ার কোন অনুমোদন দেয়া হয়নি। এলাকাবাসী এসব অপকর্ম বন্ধে প্রশাসনের উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।