২২ জুন খালেদার দুর্নীতির দুই মামলায় পরবর্তী শুনানি

বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে দায়ের করা জিয়া চ্যারিটেবল ও জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলার পরবর্তী শুনানির জন্য ২২ জুন দিন ধার্য করেছেন আদালত।

বৃহস্পতিবার রাজধানীর বকশীবাজারের আলিয়া মাদ্রাসার মাঠে স্থাপিত ঢাকার ৫নং বিশেষ জজ ড. আখতারুজ্জামান এ দিন ধার্য করেন। এদিন বেগম খালেদা জিয়া পৌনে ১২টার দিকে আদালতে উপস্থিত হন।

এদিন জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় তদন্ত কর্মকর্তাকে পুনরায় জেরা করেন আইনজীবী আব্দুর রাজ্জাক খান। তার জেরা শেষ না হওয়ায় পরবর্তী জেরার জন্য ২২ জুন দিন ধার্য করেন। অপরদিকে জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় আত্মপক্ষের সমর্থনের জন্য একই দিন ধার্য করেন আদালত।

তবে এর আগে বৃহস্পতিবার (৮ জুন) জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলার তদন্ত কর্মকর্তা দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) উপ-পরিচালক হারুন অর রশিদকে পুনরায় জেরা করার অনুমতি দেন আদালত। এদিন তার আইনজীবীরা তদন্ত কর্তকর্তাকে পুনরায় জেরা করবেন।

অপরদিকে খালেদার আইনজীবীরা আদালতের আদালতে আরেকটি আবেদন দাখিল করেন। আবেদনে উল্লেখ করেন মামলায় বিভিন্ন অপ্রয়োজনীয় ডকুমেন্ট নথির সাথে যুক্ত করা হয়েছে, যা অপ্রসাঙ্গিক। এগুলো মামলার নথি থেকে বাদ দিতে হবে এবং পরবর্তী তারিখে আমরা এ বিষয় শুনানি করবো।

তবে এর আগে বৃহস্পতিবার (৮ জুন) জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলার তদন্ত কর্মকর্তা দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) উপ-পরিচালক হারুন অর রশিদকে পুনরায় জেরা করার অনুমতি দেন আদালত। এদিন তার আইনজীবীরা তদন্ত কর্তকর্তাকে পুনরায় জেরা করবেন।

পরে খালেদা জিয়ার আইনজীবী ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন সাংবাদিকদের বলেন, সম্পূর্ণ রাজনৈতিক উদ্দেশে এক এগারোর সরকার বেগম খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে দুদককে ব্যবহার করে এই মামলা করা করে। তিনি এখন যাতে আগামী নির্বাচন ও দলের সাংগঠনিক কাজ করতে না পারেন তাতে বাধা দিতে আদালতে ব্যস্ত রাখা হচ্ছে। এই মামলার আইনি কোনো ভিত্তি নেই বলেও দাবি করেন তিনি।

অন্যদিকে দুদকের আইনজীবী মোশাররফ হোসেন কাজল সাংবাদিকদের বলেন, আসামিপক্ষ নানা অজুহাত দেখিয়ে মামলার কার্যক্রম বিলম্বিত করছে।

কবে নাগাদ মামলার কার্যক্রম শেষ হতে পারে এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, এই মামলায় ৩২ জনের সাক্ষ্য নেয়া হয়েছে। বেগম খালেদা জিয়ার আত্মপক্ষ সমর্থন করে বক্তব্যও দেয়া হয়েছে। মামলার কার্যক্রম শেষ পর্যায়ে। আশা করি দ্রুত সময়ে শেষ হবে।

এদিন খালেদার হাজিরা উপলক্ষে আদালতে উপস্থিত হন বিএনপির মহানসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, যুগ্ম-মহাসচিব ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আব্দুল আওয়াল মিন্টু, জমির উদ্দিন সরকার, আইনজীবী সানাউল্লাহ মিয়া প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলার এজাহার থেকে জানা যায়, জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্টের নামে অবৈধভাবে তিন কোটি ১৫ লাখ ৪৩ হাজার টাকা লেনদেনের অভিযোগ এনে খালেদা জিয়াসহ চারজনের বিরুদ্ধে ২০১০ সালের ৮ আগস্ট তেজগাঁও থানায় মামলা করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

২০১২ সালের ১৬ জানুয়ারি মামলার তদন্ত কর্মকর্তা দুদকের উপ-পরিচালক হারুন-অর-রশিদ বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াসহ চারজনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। ২০১৪ সালের ১৯ মার্চ আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন ঢাকার তৃতীয় বিশেষ জজ আদালতের বিচারক বাসুদেব রায়।

মামলার অন্য আসামিরা হলেন- খালেদা জিয়ার সাবেক রাজনৈতিক সচিব হারিছ চৌধুরী (পলাতক), হারিছের তখনকার সহকারী একান্ত সচিব ও বিআইডব্লিউটিএ’র নৌ-নিরাপত্তা ও ট্রাফিক বিভাগের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক জিয়াউল ইসলাম মুন্না এবং ঢাকার সাবেক মেয়র সাদেক হোসেন খোকার একান্ত সচিব মনিরুল ইসলাম খান।

জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলার অভিযোগ থেকে জানা যায়, জিয়া অরফানেজ ট্রাস্টের দুই কোটি ১০ লাখ ৭১ হাজার ৬৪৩ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ এনে খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানসহ ছয়জনের বিরুদ্ধে ২০০৮ সালের ৩ জুলাই রমনা থানায় মামলা করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

২০১০ সালের ৫ আগস্ট খালেদা জিয়া ও তার ছেলে তারেক রহমানসহ ছয়জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করেন দুদকের উপ-পরিচালক হারুন আর রশীদ। ২০১৪ সালের ১৯ মার্চ খালেদা জিয়াসহ ছয়জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন ঢাকার তৃতীয় বিশেষ জজ আদালতের বিচারক বাসুদেব রায়।

মামলায় খালেদা জিয়া ও তারেক রহমান ছাড়া অন্য আসামিরা হলেন- মাগুরার সাবেক সংসদ সদস্য কাজী সালিমুল হক কামাল, ব্যবসায়ী শরফুদ্দিন আহমেদ, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সাবেক সচিব কামাল উদ্দিন সিদ্দিকী ও সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ভাগ্নে মমিনুর রহমান।