৫৪ টি অভিন্ন নদীর পানি ব্যাপারেও কোনো চুক্তি করতে পারেনি প্রধানমন্ত্রী : মির্জা ফখরুল

সরকারের নতজানু মনোভাবে কোনা কিছু আদায় করা যায় না বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, তিস্তার পানিসহ অভিন্ন ৫৪ টি নদীর ন্যায্য হিস্যা পেতে জাতিসংঘের সম্পৃক্ত করার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফরের কথা উল্লেখ করে বলেন, কিছু দিন আগে প্রধানমন্ত্রী ভারত সফরে গিয়ে অনেকগুলো সমঝোতা ও চুক্তি স্বাক্ষরিত করেছে। শুধু একটাই বিষয়ে যেটি আমাদের প্রাণের দাবি, যার ওপর হাজার কোটি মানুষের জীবন যীবিকা নির্ভর করে তিস্তা নদীর পানির চুক্তি তিনি করে আসতে পারেনি।
আজ বুধবার সকালে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে জাতীয়তাবাদী মুক্তিযোদ্ধা দল আয়োজিত এক মানববন্ধনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব বলেন।

মির্জা ফখরুল বলেন, শুধু তিস্তার পানি নয় ৫৪ টি অভিন্ন নদীর পানি ব্যাপারেও কোনো চুক্তি করতে পারেনি প্রধানমন্ত্রী। অথচ গত কয়েক বছর ধরে তারা ক্ষমতায় আসার পরে যে বিষয়গুলো ছিল বাংলাদেশের জন্য ট্রামকার্ড, দরকসাকশির প্রধান মাধ্যম সেগুলোকে তিনি অবলিলায় ভারতের হাতে তুলে দিয়েছে। ট্রানজিট দিয়েছেন, ব্যবসা-বাণিজ্য করছে কিন্তু আমরা এখন পর্যন্ত কিছুই পাইনি। তিনি ভারত থেকে ফিরে এসে বলেছেন, পানি মাংতা, ইলেকট্রিসিটি মিলা, কুচতা মিলা। আমাদের অবস্থা দাঁড়িয়ে এখন সেই কুচ মিলার জায়গায়।

মির্জা ফখরুল বলেন, সরকারের এই যে নতজানু মনোভাব। এই মনোভাব দিয়ে কোনা কিছু আদায় করা যায় না। এই সরকার ব্যর্থ হওয়ার একটিই কারণ তারা জনগণের দ্বারা নির্বাচিত নয়, জোর করে ক্ষমতায় বসে আছে। যারা তাদেরকে ক্ষমতায় টিকে রেখেছে তাদের কাছে তারা নিজেদের, জনগণের দাবি দাওয়া গুলো তুলে ধরতে পারছে না, দাবি আদায়ও করতে পারছে না। আমাদের নিজেদের যা প্রয়োজন তা নিজেদেরই আদায় করতে হবে।
তিনি দাবি জানিয়ে বলেন, তিস্তাসহ অভিন্ন ৫৪ নদীর পানির ন্যায্য হিস্যা পেতে জাতিসংঘে এটিকে তুলে ধরতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানাবো। জাতিংসঘকে সম্পৃক্ত করে সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করুন। আমাদের দাবি প্রতিটি নদীর ন্যায্য হিস্যা আমাদের দিতে হবে। আমরা কোনো দয়া চাইছি না। আমাদের যেটা আইনগত ভাবে পাওনা সেটি আমরা চাই।

নেত্রকোণা হাওর অঞ্চলের মানুষের দুর্ভোগের কথা স্মরণ করে মির্জা ফখরুল বলেন, বন্যার পানিতে মানুষের সম্পদ নষ্ট হয়েছে। যেহেতু ভারতের সাথে আমাদের চুক্তি নেই, যখন তাদের ওখানে বন্যা হয় তখন ভারত তাদের বাধগুলো খুলে দেয় আর আমরা প্লাবিত হয়ে যাই।
তিনি বলেন, আমরা যে আন্দোলন করছি এটি কোনো ব্যাক্তির জন্য নয়, কোনো দলের জন্য নয়, এটি বাংলাদেশের মানুষের অধিকার আদায়ের আন্দোলন। এটি বাংলাদেশের স্বাধীনতা স্বার্বভৗমত্ব রক্ষার আন্দোলন।

সরকারকে উদ্দেশ্য করে সাবেক এই মন্ত্রী বলেন, আপনাদের শুভ বুদ্ধির উদয় হোক। আপনারা নির্বাচন দিন। সেই নির্বাচন হতে হবে নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে এবং একই সঙ্গে নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশনের মাধ্যমে। আজকে সারা বাংলাদেশের মানুষ কারাগারের মধ্যে বন্দী হয়ে আছে। সেই কারাগার থেকে অবশ্যই বেরিয়ে আসতে হবে। সকল দলমত এক হয়ে জাতিয় স্বার্থে আন্দোলনের জন্য আহ্বান জানান মির্জা ফখরুল।

মুক্তিযোদ্ধা দলের সাধারণ সম্পাদক সাদেক আহমদ খানের সঞ্চালনায় মানববন্ধনে সভাপতিত্ব করেন মুক্তিযোদ্ধা দলের সিনিয়র সহ-সভাপতি আলহাজ্ব আবুল হোসেন। এতে বিএনিপর যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম আলাল সহ বিভিন্ন স্তরের নেতারা বক্তব্য রাখেন।