চলচ্চিত্রে ৭ মার্চ (ফুটেজ)

১৯৭০ সালের আগেই ‘পূর্ব পাকিস্তান চলচ্চিত্র ও প্রকাশনা অধিদপ্তর’ (DFP)’র কতিপয় দেশপ্রেমিক ব্যাক্তি সরকারী নিয়মের বাইরে বঙ্গবন্ধুর কর্মকাণ্ড প্রামাণ্যকরণ করার পরিকল্পনা করেন।
সেই পরিকল্পনায় বঙ্গবন্ধু ১৯৭১ এর ৭ মার্চ রবিবার স্বাধীনতাকামী দেশবাসীকে যে দিক নির্দেশনামূলক ভাষণ দেন তার চলচ্চিত্র ও শব্দ ধারন করা হয়। এই দলে মোহেব্বুর রহমান খায়ের (অভিনেতা আবুল খায়ের) এর নেতৃত্বে ছিলেন ৪ জন চিত্রগ্রাহক (এম এ মবিন, এম এ রউফ, এস এম তৌহিদ বাবু ও আমজাদ আলী খোন্দকার) সহ কয়েকজন, যারা ৪ টি ‘সাইলেন্ট (শব্দ ছাড়া) ৩৫ মিমি ক্যামেরা’য় সাদাকালো ফিল্মে চার এঙ্গেল থেকে চিত্রধারন করেন। এই দলে কোন শব্দধারক ছিলেন না।
তৎকালীন আঞ্চলিক পরিচালক আশরাফ-উজ-জামান খানের নেতৃত্বে ‘ঢাকা বেতার’ এর দল, কর্মকর্তা ও শব্দগ্রাহক একে কোরেশী’র নেতৃত্বে ‘পিটিভি’র দল, চিত্রপরিচালক সালাউদ্দিন ও প্রযোজক আবুল খায়ের (এমএলএ) এর ‘ঢাকা রেকর্ড’ (পাকিস্তান ইন্টারন্যাশনাল ফিল্ম কর্পোরেশন লিমিটেড) এর টেকনিশিয়ান এ এইচ খন্দকার এর দল এই ভাষণের শব্দধারন করে।
‘ঢাকা বেতার’এ সরাসরি প্রচার পাকিস্তান সেবাহিনীর বাঁধায় হয়নি, তবে পরদিন পুরো ভাষণ প্রচারিত হয়েছে।
ভাষণের গ্রামোফোন রেকর্ড দোয়েল মার্কা ‘ঢাকা রেকর্ড’ থেকে প্রকাশিত হয়েছিলো – যেটা মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে ব্যাপক প্রচার ও প্রকাশ হয়েছে।

আর ১৯৭২ সালে চিত্রসম্পাদক বশীর হোসেনের দ্বারা ডিএফপি’র সচলচিত্র ও ‘ঢাকা রেকর্ড’র শব্দ সম্পাদিত হয়ে বাংলাদেশ সরকারের তথ্য ও বেতার মন্ত্রণালয়ের চলচ্চিত্র বিভাগ থেকে প্রামাণ্যচিত্র নির্মিত হয়েছে – যা আমরা এখন দেখে থাকি।
১৯ মিনিটের এই ভাষণের সবচেয়ে বড় চলচ্চিত্রাংশ যেটি পাওয়া যায় সেটি ১৪ মিনিট ৫১ সেকেন্ডের – যার মধ্যে বক্তৃতা ১৩ মিনিট ৫০ সেকেন্ড। এই ভাষণটি কয়েকটি বিদেশী টেলিভিশনের দ্বারা রঙ্গীন ফিল্মে গৃহীত হয়েছিলো, যা দেখার সৌভাগ্য আমাদের হয়নি।
কয়েক কোটি টাকা ব্যায় করে ‘সাদা কালো’কে অনাবশ্যক ‘রঙ্গীন’ এবং ‘থ্রিডি’ করা হলেও এদিকে কেউ লক্ষ্য করছেন না।