আতিয়া মহলে ২ পুলিশ কর্মকর্তাসহ নিহত ৬

সিলেটের দক্ষিণ সুরমার শিববাড়ীর জঙ্গি আস্তানা ‘আতিয়া মহলের’ পার্শ্ববর্তী এলাকায় শনিবার সন্ধ্যায় দুই দফা জঙ্গি হামলার ঘটনায় এ পর্যন্ত পুলিশসহ ছয়জনের নিহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।

নিহতরা হলেন— জালালাবাদ থানার ওসি (তদন্ত) মনিরুল ইসলাম ও সিলেটে পুলিশের বিশেষ শাখার (এসবি) পরিদর্শক চৌধুরী মো. আবু কয়সার, স্থানীয় ছাত্রলীগ নেতা জান্নাতুল ফাহিম, কলেজছাত্র অহিদুল ইসলাম অপু ও নগরীর দাঁড়িয়াপাড়ার বাসিন্দা শহীদুল ইসলাম (৩৮)। একজনের পরিচয় পাওয়া যায়নি।

সিলেটের মদনমোহন কলেজের বিবিএ তৃতীয় বর্ষের ছাত্র অপু বিস্ফোরণস্থলেই মারা যান। আহতদের সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়ার পর চিকিত্সাধীন অবস্থায় বাকিদের মৃত্যু হয়। সিলেটের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (দক্ষিণ) আকতারুজ্জামান বসুনিয়া এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

সেনাবাহিনীর নেতৃত্বে এবং পুলিশ ও সোয়াতের সহায়তায় চলা ‘অপারেশন টোয়ালাইট’ নিয়ে গতকাল সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টার দিকে সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে ব্রিফিং করা হয়। ব্রিফিং শেষ হওয়ার পর সন্ধ্যা পৌনে সাতটার দিকে ব্রিফিংস্থলের কাছে বোমা বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। ওই ঘটনায় সাংবাদিকসহ ৩০ জনের বেশি আহত হন। এরপর রাত সাতটা ৫৫ মিনিটের দিকে আগের ঘটনাস্থলের কাছে পূর্ব পাঠানতলা মসজিদ এলাকায় আরেকটি বোমার বিস্ফোরণ হয়। র‌্যাব ও পুলিশ কর্মকর্তাসহ আহত ৪৩ জনকে সিলেট ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হয়। এদের মধ্যে র‌্যাবের গোয়েন্দা শাখার পরিচালক লে. কর্নেল আবুল কালাম আজাদ ও র‌্যাবের অপর কর্মকর্তা মেজর আজাদকে বিমান বাহিনীর হেলিকপ্টার করে ঢাকার সিএমএইচএস-এ পাঠানো হয়েছে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, একটি মোটরসাইকেলে করে দু’জন এসে বিস্ফোরণ ঘটালে হতাহতের ঘটনা ঘটে। সিলেট মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার রুকনুদ্দিন বলেন, লাশগুলো সিলেট ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল মর্গে রয়েছে। ঘটনার পর আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা সেখানে পৌঁছে অবিস্ফোরিত একটি বোমা ও মোটর সাইকেল উদ্ধার করে। এর আগে ব্রিফিংয়ে গত দুদিন থেকে বহুল আলোচিত সিলেটের শিববাড়িতে অপারেশন অব্যাহত রয়েছে বলে ঘটনাস্থলে উপস্থিত সাংবাদিকদের সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে জানানো হয়। শনিবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬ টায় অভিযানে অংশ নেওয়া সেনা সদস্যদের পক্ষ থেকে ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ফখরুল হাসান সাংবাদিকদের ব্রিফিং করেন।

এর আগে শুক্রবার ভোর ৩ টায় আতিয়া মহলকে জঙ্গি আস্তানা সন্দেহে ঘিরে রাখে কাউন্টার টেরিরিজম ইউনিটের সদস্যরা। পরে এসে যোগ দেয় সোয়াত ও সেনাবাহিনীর প্যারা কমান্ডো সদস্যরা। তবে ভেতরে কতজন জঙ্গি অবস্থান করছে সে ব্যাপারে কিছুই জানা যায়নি। তারা জীবিত না মারা গেছে এমন তথ্যও বলেননি অভিযানকারীরা।