এমন ম্যাচেও হারলো বাংলাদেশ!

প্রথম ইনিংসে ৮ উইকেটে ৫৯৫ রান। সাকিবের ২১৭ ও মুশফিকের ১৫৯ রান। কে জানতো এমন রানের সংগ্রহ পেয়েও হারতে হবে বাংলাদেশকে। চিরাচরিত দ্বিতীয় ইনিংসের ব্যর্থতায় এমনটাই হয়েছে ওয়েলিংটন টেস্টে। মাত্র ১৬০ রানেই শেষ হয় তাদের ইনিংস। ফলে প্রথম দল হিসেবে প্রথম ইনিংসে এতো রান করার পর হেরে লজ্জার বিশ্ব রেকর্ড গড়েছে টাইগাররা। আর সাত উইকেটের বড় জয় নিয়েই সিরিজে ১-০ ব্যবধানে এগিয়ে গেলো নিউজিল্যান্ড।

বাংলাদেশের দেওয়া ২১৭ রানের লক্ষ্যে ব্যাটিং করতে নেমে শুরুটা ভালোই করে নিউজিল্যান্ড। ৩২ রানের ওপেনিং জুটি পায় তারা। এরপর মেহেদী হাসান মিরাজের জোড়া আঘাতে দুই ওপেনারকে ফিরিয়ে ম্যাচের দারুণভাবে খেলায় ফিরে আসে বাংলাদেশ। জিত রাভালকে নিজের বলে নিজে তালুবন্দি করার পর টম লাথামকে বোল্ড করেন মিরাজ।

এরপর দারুণ এক জুটি গড়েন নিউজিল্যান্ডের অন্যতম সেরা দুই ব্যাটসম্যান রস টেলর ও অধিনায়ক উইলিয়ামসন। ১৬৩ রানের দুর্দান্ত জুটি গড়ে বাংলাদেশের স্বপ্ন টেস্ট বাঁচানোর স্বপ্ন ভেঙ্গে দেন এ দুই ব্যাটসম্যান। কিউইদের এ জুটি ভাঙেন অভিষিক্ত শুভাশিস। দ্বিতীয় স্লিপে মিরাজের তালুবন্দি হয়ে আউট হন টেলর। এরপর বাকি কাজ হেনরি নিকোলসকে নিয়ে শেষ করেন উইলিয়ামসন।

শেষ পর্যন্ত ব্যাটিং করে ক্যারিয়ারের ১৫তম সেঞ্চুরি তুলে নেন উইলিয়ামসন। ৯০ বলে মোকাবেলা করে ১৫টি চারের সাহায্যে ১০৪ রান করে অপরাজিত থাকেন তিনি। এছাড়া ৭৭ বলে ৬টি চারের সাহায্যে ৬০ রান করেন টেলর। বাংলাদেশের পক্ষে ৬৬ রানে ২টি উইকেট নেন মিরাজ। এছাড়া ১টি উইকেট পান শুভাশিস।

এর আগে সোমবার সকালে আগের দিনের তিন উইকেটে ৬৬ রান নিয়ে ব্যাটিংয়ে নামে বাংলাদেশ। শুরুতেই প্রথম ইনিংসের ডাবল সেঞ্চুরিয়ান সাকিব আল হাসানকে হারিয়ে চাপে পড়ে তারা। সান্টনারের বলে মিডঅনে উইলিয়ামসনের হাতে সহজ ক্যাচ দিয়ে খালি হাতেই সাজঘরে ফেরেন তিনি। সাকিবের বিদায়ের পর বেশিক্ষণ থাকতে পারেননি টেস্ট স্পেশালিষ্ট মুমিনুল হকও। দলীয় ৯৪ রানে ওয়াগনারের বলে গ্র্যান্ডহোমের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফিরে যান তিনি।

তবে বাংলাদেশ সবচেয়ে আঘাতটি পায় অধিনায়ক মুশফিকুর রহীমের ইনজুরিতে। দলীয় ১১৪ টিম সাউদির বাউন্সার বসে ছেড়ে দেয়ার চেষ্টা করেছিলেন মুশফিক। তবে কোনাকুনি ডেলিভারি গিয়ে আঘাত হানে তার মাথার পিছনের অংশে। এরপর দ্রুত তাকে হাসপাতালে পাঠানো হয়। আঘাত গুরুতর না হওয়ায় হাসপাতাল থেকে ফিরে ড্রেসিং রুমে অবস্থান করছেন তিনি।

একপ্রান্তে দারুণ ব্যাটিং করেন সাব্বির রহমান। সপ্তম উইকেট হিসেবে কামরুল ইসলাম রাব্বির আউট হওয়ার পর আগের দিন ইনজুরিতে পরা ইমরুল কায়েস আবার ব্যাটিংয়ে ফিরে আসেন। তবে দলীয় ১৫২ রানে সাব্বির বিদায় নিলে কার্যত শেষ হয়ে বাংলাদেশের টেস্ট বাঁচানোর আশা। এরপর শেষ ব্যাটসম্যান হিসেবে শুভাশিস বিদায় নিলে ১৬০ রানেই গুটিয়ে যায় বাংলাদেশ।

দলের পক্ষে সর্বোচ্চ ৫০ রান করেন সাব্বির। আর ৩২ রানে অপরাজিত থাকেন ইমরুল কায়েস। নিউজিল্যান্ডের পক্ষে ৫৩ রানে ৩টি উইকেট নেন ট্রেন্ট বোল্ট। ২টি করে উইকেট পান ওয়েগনার ও সেন্টনার। এছাড়া ১টি উইকেট পেয়েছেন সাউদি।