দু’সপ্তাহে গ্রন্থমেলায় নতুন বই এসেছে ১ হাজার ৬৩৩টি

অমর একুশে গ্রন্থমেলা আজ দু’সপ্তাহ অতিক্রম করেছে। মেলায় ১৪ দিনে নতুন বই এসেছে মোট ১ হাজার ৬৩৩টি।
গতবছর এ সময়ে নতুন বই এসেছিল ১ হাজার ৩৭৭টি। এবার ২৫৬টি বই বেশি এসেছে।
এ বছর সবচেয়ে বেশি এসেছে কবিতার বই, ৪৭০টি। এর পরেই আছে উপন্যাস ২৮৮টি, গল্পগ্রন্থ ২৩৬টি ও প্রবন্ধ ৮৮টি। আর গতবারে এ ১৪ দিনে কবিতার বই ২৭৭টি, উপনাস ২৭৩টি, গল্পের বই ১৮৩টি ও প্রবন্ধ ১১৪টি এসেছিল।
আজ মেলার ১৪তম দিনে মেলায় নতুন বই এসেছে ১৪৬টি এবং ২৩টি নতুন বইয়ের মোড়ক উন্মোচন করা হয়েছে।
বাংলা একাডেমি সোমবার পর্যন্ত ১৩ দিনে এবার বই বিক্রি করেছে ৫০ লাখ ৯০ টাকার। গত বছর এই প্রথম ১৩ দিনে বই বিক্রি হয়েছিল ৩২ লাখ ৭২ হাজার ১৪৫ টাকার। এবার ১৭ লাখ ২৭ হাজার ৯৪৫ টাকার গ্রন্থ বেশি বিক্রি হয়েছে।
গ্রন্থমেলার মূলমঞ্চে বিকেল ৪টায় অনুষ্ঠিত হয় পঞ্চাশ ও ষাট দশকের একুশের সংকলন শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠান। এতে সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব কামাল লোহানী সভাপতিত্ব করেন। প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন প্রাবন্ধিক-গবেষক ড. ইসরাইল খান। আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন শিশুসাহিত্যিক আখতার হুসেন ও সাংবাদিক অজয় দাশগুপ্ত।
প্রাবন্ধিক বলেন, ১৯৫০ ও ১৯৬০ দশকে একুশের যেসব সংকলন প্রকাশিত হয় সেগুলো যেন বাংলার নবজাগরণের প্রথম প্রভাতে প্রকাশিত সাময়িকপত্রের ধারাবাহিকতাকে নতুন মাত্রায় উন্নীত করে। ১৯৪৭-এ পাকিস্তান প্রতিষ্ঠার পরপর রাষ্ট্রভাষা বাংলার দাবিতে গড়ে ওঠা জাতীয়তাবাদী আন্দোলন শুধু রাষ্ট্রভাষা হিসেবে বাংলার প্রতিষ্ঠাই নিশ্চিত করেনি একই সঙ্গে সাহিত্য-সংস্কৃতিমনা তরুণ প্রজন্মের মাঝে ছড়িয়ে গেছে অসামান্য উত্তাপ। এই উত্তাপেরই ফল হিসেবে আমরা গত শতকের পঞ্চাশ ও ষাট দশকে অজ¯্র আগুনের ফুলের মতো অসংখ্য একুশের সংকলন প্রকাশিত হতে দেখি। বলাই বাহুল্য এইসব সংকলন কেবল ভাষা আন্দোলন, ভাষাশহীদ এবং অমর একুশের চেতনাকেই ধারণ করেনি, একই সঙ্গে স্বাধীনতামুখি সংগ্রামের বীজও বপন করে গেছে।
কামাল লোহানী বলেন, একুশের চেতনা যেমন একুশের সংকলনের মধ্যে প্রকাশিত, তেমনি প্রভাতফেরির মাঝেও মূর্ত হয়। কিন্তু দুঃখজনক বিষয় সাম্প্রতিক সময়ে একুশের সংকলন প্রকাশে তরুণদের যেমন উল্লেখযোগ্য কোন উদ্যোগ চোখে পড়ে না তেমনি প্রভাতফেরির রেওয়াজও দুর্লভ হয়ে উঠেছে। একই সঙ্গে সর্বস্তরের বাংলা ভাষা প্রচলন ও ব্যবহারের রাষ্ট্রীয় নির্দেশনা পালনের ক্ষেত্রেও লক্ষ্য করা যায় সীমাহীন অবহেলা। তিনি বলেন, ভাষা শহীদের স্মৃতি অমর করে রাখতে হলে সর্বস্তরে বাংলা ভাষার যথাযথ প্রয়োগ নিশ্চিত করা এখন সময়ের দাবি।
সন্ধ্যায় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে আবৃত্তি পরিবেশন করেন আবৃত্তিশিল্পী হাসান আরিফ এবং তনুশা রহমান। সংগীত পরিবেশন করেন শিল্পী খুরশিদ আলম, তপন চৌধুরী, জয় শাহরিয়ার, আফসানা রুনা, অঞ্জলি রায় চৌধুরী এবং আলবেরুনী অণু। বাসস