আটকে গেল এরশাদের আপিলের রায়

রাষ্ট্রপতি থাকাকালীন পাওয়া বিভিন্ন উপহার সামগ্রীর অর্থ রাষ্ট্রীয় কোষাগারে জমা না দেয়ার অভিযোগে দায়ের করা মামলায় বিচারিক আদালতের সাজার বিরুদ্ধে সাবেক রাষ্ট্রপতি হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের আপিলের আবেদন প্রধান বিচারপতির কাছে পাঠিয়ে দিয়েছেন হাইকোর্ট।

বৃহস্পতিবার নির্ধারিত দিন রায় ঘোষণা না করে হাইকোর্টের বিচারপতি মো. রুহুল কুদ্দুসের একক বেঞ্চ এই আদেশ দেন। আদালতে এরশাদের পক্ষে ছিলেন অ্যাডভোকেট শেখ সিরাজুল ইসলাম। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল নজিবুর রহমান।

এই আদেশ দেয়ার আগে মামলার নথিপত্র দেখে আদালত বলেন, এরশাদের আপিল ছাড়াও সরকারের পক্ষ থেকে করা আরও দুটি আপিল বিচারাধীন রয়েছে। ওই দুটি আপিলে সরকার এরশাদের সাজা বৃদ্ধির আবেদন জানিয়েছে। এ অবস্থায় নিম্ন আদালতের সাজার রায় বাতিলের জন্য এরশাদ যে আবেদন করেছে সেটির ওপর রায় ঘোষণা করলে তা যুক্তিসংগত হবে না। অতএব ন্যায় বিচারের স্বার্থে ৩ টি আপিলের ওপর একসঙ্গে শুনানি করে রায় দেয়া যুক্তিযুক্ত হবে। এই বিবেচনায় ৩ টি আপিলের ওপর প্রয়োজনীয় আদেশের জন্য নথি প্রধান বিচারপতির কাছে পাঠানো হলো।

এর আগে গত ৯ মার্চ এ বিষয়ে রায় ঘোষণার জন্য বৃহস্পতিবার দিন ধার্য় করেছিলেন হাইকোর্ট। ২০১৬ সালের ৩০ নভেম্বর দীর্ঘ ২৪ বছর পর দূনীর্তি মামলায় সাজার বিরুদ্ধে এরশাদের আপিল শুনানি শুরু হয়। এরশাদের সাজার বিরুদ্ধে আপিল শুনানি শুরু করতে উদ্যোগ নেয় দুর্নীতি দমন কমিশন। এর আগে ২০১২ সালের ২৬ জুন সাজার রায়ের বিরুদ্ধে  এইচ এম এরশাদের আপিলে পক্ষভুক্ত হয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। আপিলে পক্ষভুক্ত হতে দুদকের করা এক আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ওইদিন বিচারপতি খোন্দকার মুসা খালেদ ও বিচারপতি আবু তাহের মো. সাইফুর রহমানের বেঞ্চ দুদকের আবেদন মঞ্জুর করেন।

১৯৮৩ সালের ১১ ডিসেম্বর থেকে ১৯৯০ সালের ৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত রাষ্ট্রপতি থাকাকালে বিভিন্ন উপহার রাষ্ট্রীয় কোষাগারে জমা না দেয়ার অভিযোগ রয়েছে এরশাদের বিরুদ্ধে। এ অভিযোগে ১৯৯১ সালের ৮ জানুয়ারি তৎকালীন দুর্নীতি দমন ব্যুরোর উপপরিচালক সালেহ উদ্দিন আহমেদ সেনানিবাস থানায় মামলাটি করেন। মামলায় এক কোটি ৯০ লাখ ৮১ হাজার ৫৬৫ টাকা আর্থিক অনিয়মের অভিযোগ আনা হয়।

ওই মামলায় ১৯৯২ সালের ৩ ফেব্রুয়ারি ঢাকা বিভাগীয় বিশেষ জজ আদালতের রায়ে এরশাদের তিন বছরের সাজা হয়। একই সঙ্গে ওই অর্থ ও একটি টয়োটা ল্যান্ডক্রুজার গাড়ি বাজেয়াপ্ত করারও নির্দেশ দেয়া হয়। এই রায়ের বিরুদ্ধে এরশাদ ১৯৯২ সালে হাইকোর্টে আপিল করেন। আদালত আপিল গ্রহণ করে রায়ের কার্যকারিতা স্থগিত করেন ও নিম্ন আদালতের নথি তলব করেন।