গুলশানের হলি আর্টিজানের হামলার ঘটনায় আইএস নিয়ে ইন্টারন্যাশনাল সেন্টার ফর পলিটিক্যাল ভায়োলেন্স অ্যান্ড টেররিজম রিসার্চের (আইসিপিভিটিআর) পরিচালক রোহান গুণারত্নের দেওয়া বক্তব্য সমর্থনযোগ্য নয় বলে মন্তব্য করেছেন পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) এ কে এম শহীদুল হক। তিনি বলেন, ‘গুলশান হামলা বিষয়ে তার বক্তব্য পুলিশ সমর্থন করে না। রোহান সাহেব একজন প্রফেসর। তিনি কোনও পুলিশ কর্মকর্তা নন। তিনি শিক্ষাবিদ, গবেষক। তার বক্তব্য সমর্থন করি না।’সোমবার দুপুরে রাজধানীর সোনারগাঁও হোটেলে পুলিশ প্রধানদের আন্তর্জাতিক সম্মেলনের দ্বিতীয় দিনে তিনি এসব কথা বলেন।
বাংলাদেশ পুলিশ ও পুলিশের আন্তর্জাতিক সংস্থা ইন্টারপোল যৌথভাবে সম্মেলনের আয়োজন করেছে।
এর আগে রবিবার এর আগে রবিবার সম্মেলনে রোহান গুণারত্নে বলেন, ‘হলি আর্টিজানে যারা হামলা চালিয়েছিল, তারা জেএমবি নয়, তারা আইএস। এটি সেই সন্ত্রাসীগোষ্ঠী, যারা নিজেদের ইসলামিক স্টেট বলে পরিচয় দেয়। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য, বাংলাদেশের রাজনৈতিক নেতৃত্ব ওই হামলা সম্পর্কে সত্য বলেননি।’তার এই বক্তব্য প্রসঙ্গে আইজিপি বলেন, ‘গুণারত্নের মতো করে তিনি বলেছেন। বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে তার বলার মধ্যে বাস্তবতার সঙ্গে মিল থাকতে হবে।’তিনি আরও বলেন, ‘গুণারত্নে যাদের আইএস বলেছেন, আমরা তাদের অনেককেই ধরেছি। এখন পর্যন্ত তাদের একজনও স্বীকার করেনি তারা আইএস। তারা বলেছে জিএমবির বিভিন্ন শীর্ষ নেতার অনুসারী তারা। যারা মারা গেছে, তাদের স্বজনরাও কখনও বলেননি, তারা আইএসের সদস্য। ভার্চুয়াল ওয়াল্ডে তাদের বিচরণ থাকতে পারে। সেটা তাদের নিজস্ব ব্যাপার।’
গুলশান হামলার পর এ ঘটনার দায় আইএস দাবি করেছে উল্লেখ করে আইজিপি বলেন, ‘তারপর এতগুলো অভিযানে এত লোক মারা গেল কিন্তু আইএস বলেনি নিহতরা তাদের সদস্য। এছাড়া তাদের এসব প্রোপাগান্ডার কোনও ভিত্তি নেই। আমরা বলি, তারা দেশীয় টেররিস্ট। তবে আইএস ভাবাদর্শে উদ্বুদ্ধ হতে পারে। আইএস-এর দর্শন তারা বিশ্বাস করতে পারে। কিন্তু আমরা এমন কোনও প্রমাণ পাইনি। রোহান সাহেব যে বক্তব্য দিয়েছেন, তা আমরা সমর্থন করি না।’
আইজিপি বলেন, ‘এরইমধ্যে আমরা ভিয়েতনাম ও ব্রুনাই-এর সঙ্গে আলাদাভাবে বৈঠক করেছি। সেখানে জঙ্গি, সন্ত্রাসবাদসহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে। ব্রুনাইয়ের প্রস্তাব ছিল, তারা আমাদের সঙ্গে দ্বিপক্ষিক সম্পর্ক রাখতে চায়। যেন সরাসরি যেকোনও সমস্যা কথা উপস্থাপন করতে পারে। ভিয়েতনাম জোর দিয়েছে মানব পাচার ও মাদকের ওপর। আগামীকাল মঙ্গলবার আরও কয়েকটি দেশের সঙ্গে আলাদাভাবে বৈঠক করব। ফেসবুক কর্তৃপক্ষের সঙ্গেও বৈঠক করব।’ তিনি জানান, ‘সম্মেলনে অংশ নেওয়া দেশগুলো অভিমত দিচ্ছে। ইনটেলিজেন্স, আঞ্চলিক সহযোগিতা ও নিরাপত্তা নিয়ে যেসব চ্যালেঞ্জ আছে, সেগুলো দ্বিপাক্ষিকভাবে কিভাবে সমাধান করা যায়, তা নিয়ে আলোচনা হয়েছে। কেউ কেউ আঞ্চলিক ইনস্টিটিউশন করার প্রস্তাব দিয়েছেন, যেখানে কমিউনিটি ও কাউন্টার টেররিজম বিষয়ে বেশি গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক কিভাবে বাড়ানো যায়, তা নিয়েও আলোচনা হয়েছে। আমাদের ক্ষমতা বাড়ানোর জন্য চীন আগ্রহ প্রকাশ করেছে। তারা প্রশিক্ষক ও লজিস্টিক সাপোর্ট দিতে চায়। দক্ষিণ কোরিয়াও লজিস্টিক সব বিষয়ে বাংলাদেশের পুলিশকে সাপোর্ট দিতে চায়।’ তিনি আরও বলেন, ‘ইন্টারপোলের সঙ্গে আজ আলাদাভাবে বৈঠক হবে।’