ভাড়াটের টিভি না থাকলে পুলিশকে জানান: আইজিপি

বাড়ি ভাড়া দেয়ার সময় কেবল জাতীয় পরিচয়পত্রের ফটোকপি না নিয়ে তাদের প্রতি গভীরভাবে পর্যবেক্ষণের তাগাদা দিয়েছেন পুলিশ প্রধান এ কে এম শহীদুল হক। তিনি বিশেষ কিছু দিকে লক্ষ্য রাখার পরামর্শ দিয়েছেন। আর সন্দেহজনক কিছু দেখলেই পুলিশকে জানাতে বলেছেন তিনি।
 
শনিবার রাজধানীতে ১৩২ দেশের সংসদ সদস্যদের ইন্টার পার্লামেন্টারি ইউনিয়ন-আইপিইউ সম্মেলনস্থল জাতীয় সংসদ ভবন এলাকা পরিদর্শন করে আইজিপি এ কথা বলেন।
 
পুলিশ প্রধান বলেন, ‘বাসা ভাড়া নেওয়ার ক্ষেত্রে আসবাবপত্র কম আনেন, বিশেষ করে কোন টেলিভিশন থাকে না, প্রতিবেশীদের সঙ্গে মিশতেও চায় না, সারাদিন ঘরের জানলা-দরজা বন্ধ রাখে, এইসব সিম্পটম দেখলে অবশ্যই পুলিশকে জানাবেন।’
 
গত জুলাইয়ে হলি আর্টিজান বেকারিতে জঙ্গি হামলার পর পুলিশ যে কয়েকটি সন্দেহজনক জঙ্গি আস্তানায় অভিযান চালিয়েছে তার প্রতিটির চিত্রই ছিল মোটামুটি একই রকম। সন্দেহভাজন জঙ্গিরা বাড়ি ভাড়া করার পর তারা এক অর্থে বিচ্ছিন্ন জীবন-যাপন করেছে।
 
প্রতিটি আস্তানায় অভিযানের পর জানা গেছে, ভেতরে যারা থাকতো, তারা আশেপাশের মানুষদের সঙ্গে খুব একটা মিশতেন না, বাড়িতে যাতায়াতও হতো বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই রাতের আঁধারে। বাড়ির দরজা-জানলাও বেশিরভাগ সময়ই বন্ধ রাখার কথা জানিয়েছেন প্রতিবেশীরা। আবার কোনে আস্তানাতেই টেলিভিশন পাওয়া যায়নি।
 
হলি আর্টিজান বেকারিতে জঙ্গি হামলার পর পুলিশের তদন্তে জানা যায়, হামলাকারীরা রাজধানীর বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় একটি বাড়ি ভাড়া নিয়ে সেখানে এই হামলার প্রস্তুতি নিয়েছিল। এরপর পুলিশ বাড়ি বাড়ি একটি বিশেষ ফরম পৌঁছে দিয়ে ভাড়াটেদের বিষয়ে তথ্য দেয়ার অনুরোধ করে। সেই সঙ্গে তাদের জাতীয় পরিচয়পত্রের ফটোকপিও জমা দিতে অনুরোধ করে।
 
তবে শুরুর দিকে বাড়ির মালিকরা তেমন সাড়া না দিলেও মিরপুরের কল্যাণপুর আস্তানায় অভিযানে নয় জনের, নারায়ণগঞ্জের পাতারটেক আস্তানায় সাম্প্রতিক জঙ্গি তৎপরতার মূল হোতা বলে চিহ্নিত তামিম চৌধুরীসহ তিনজনের মৃত্যুর পর বাড়ির মালিকরা অনেকটাই সচেতন হয়েছেন। তবে বেশ কিছু ক্ষেত্রে দেখা গেছে, সন্দেহজনক জঙ্গিরা ভুয়া তথ্য দিয়ে বা জাতীয় পরিচয়পত্র জাল করে তার ফটোকপি জমা দিয়েছে। এ জন্যই সন্দেহভাজনদের ওপর আরও নজরদারির তাগিদ দিয়েছেন আইজিপি।
 
আইজিপি বলেন, ‘আমি বাড়ির মালিকদের লিখিত আদেশ দিয়েছি, কাউকে বাড়ি ভাড়া দিতে গেলে তার পরিচয় সম্পর্কে নিশ্চিত হবেন। এবং তার কাছ থেকে তথ্য সংগ্রহ করে সঙ্গে সঙ্গে পুলিশকে জানাবেন।’
 
এ সময়ে ঢাকা মহানগর পুলিশের কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়া সহ ডিএমপির উর্দ্ধতন কর্মকর্তাগণ উপস্থিত ছিলেন।