মাগুরায় জনপ্রিয় হয়েছে উঠেছে উচ্চ ফলনশীল জাতের মসুর ডাল চাষ

জেলায় জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে উচ্চ ফলনশীল জাতের মসুর ডালের চাষ। চলতি রবি মৌসুমে মোট চাষকৃত জমির মধ্যে প্রায় ৯৬ শতাংশ জমিতে উচ্চ ফলনশীল জাতের মসুর ডালের চাষ হয়েছে। অবশিষ্ট ৪ শতাংশ জমিতে চাষ হয়েছে কৃষকের ঘরে থাকা স্থানীয় জাতের মসুর ডাল।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, জেলায় এ বছর মসুর ডালের চাষ হয়েছে ২৫ হাজার ১৬০হেক্টর জমিতে। যার মধ্যে সদর উপজেলায় ১০ হাজার ১০০ হেক্টর, শ্রীপুরে ৪হাজার ১৬০ হেক্টর, শালিখায় ৫ হাজার ৯০০ হেক্টর ও মহম্মদপুর উপজেলায় ৫ হাজার হেক্টরে মসুর ডালের চাষ হয়েছে। যা থেকে ৩৩ হাজার ৩৬৬ মেট্রিক টন মসুর ডাল উৎপাদিত হবে।
কৃষি বিভাগের দেয়া তথ্য মতে, উচ্চ ফলনশীল জাতের মধ্যে জেলার কৃষকরা বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট উদ্ভাবিত বারি- ৪,৫,৬ ও ৭ এবং বাংলাদেশ পরমাণু কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট উদ্ভাবিত বিনা-৩, ৪ ও ৬ জাতের উচ্চ ফলনশীল মসুর ডালের চাষ করেছে। উচ্চ ফলনশীল এসব জাত থেকে স্থানীয় জাতের তুলনায় দুই গুণের বেশি মসুর ডাল উৎপাদন হয়ে থাকে। স্থানীয় জাতে যেখানে মুসর ডালের ফলন হয় হেক্টর প্রতি দশমিক ৫ থেকে দশমিক ৬ টন,সেখানে বারি ও বিনা উচ্চ ফলনশীল জাতে মসুর ডাল হেক্টর প্রতি ফলন হয় থেকে ১.৫ টন। এ ছাড়া বারি ও বিনা মসুর পরিবর্তিত আবহাওয়ায় চাষ করা যায়। কুয়াশা ও রোদের তাপমাত্রা বেড়ে গেলেও এর ফলন ভালো হয়ে থাকে। এ কারণে উচ্চ ফলনশীল এসব মসুর ডালের বীজ আগামীতে লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী ১০০ শতাংশ জমিতে চাষ করার কর্মসূচি নিয়ে কাজ করছে কৃষি বিভাগ।

কৃষি বিভাগের দেয়া তথ্য মতে, দেশে প্রতিবছর ৩০ লাখ মেট্রিকটন মসুর ডালের চাহিদা রয়েছে। এর বিপরীতে উৎপাদন হয় ৬ থেকে ৮ মেট্রিকটন মসুর ডাল। এ কারণে প্রতি বছর বিদেশ থেকে ডাল আমদানী করতে হয়। ঘাটিতি কমিয়ে আনতে কৃষকদের ব্যাপকভাবে উৎসাহিত করার ফলে এ বছর উচ্চফলনশীল জাতের মসুর ডাল চাষ বদ্ধি পেয়েছে। এ বছর মসুর ডালের ফলন ভালো হয়েছে। গত বছর প্রতিমণ মসুর ডাল ১ হাজার ৮০০ থেকে ৩ হাজার টাকা টাকা পর্যন্ত বিক্রি হয়েছে। এ বছরও কৃষকরা ভালো দামে মসুর ডাল বিক্রি করতে পারবেন বলে মনে করছে কৃষি বিভাগ।

সদর উপজেলার আড়াইশত গ্রামের কৃষক আব্দুর রৌফ বলেন, এ বছর স্থানীয় কৃষি বিভাগের সহযোগিতায় সাড়ে ৩ একর জমিতে উচ্চ ফলনশীল বারি-৭ জাতের মসুর ডাল চাষ করেছি। ফলন ভালো হয়েছে। চাষকৃত জমি থেকে ৫৬ মণ মসুর ডাল পাব বলে আশা করছি।

সদর উপজেলার গোয়ালবাড়ি গ্রামের কৃষক জিয়া জানান- তিনি এ বছর বিনা-৬ জাতের উচ্চফলনশীল মসুর চাষ করেছেন। যা থেকে প্রায় ১০ মণ মসুর ডাল পাবেন। চলতি বছরে মসুর ডালের ভালো দাম পাবেন বলে আশা করছেন তিনি।

মাগুরা সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা রুহুল আমীন জানান, চলতি মৌসুমে জেলার অধিকাংশ জমিতে উন্নত জাতের মসুর ডাল চাষ হয়েছে। উন্নত জাতের মসুর ডাল চাষে কৃষকদের বীজ সংরক্ষণসহ আধুনিক পদ্ধতিতে চাষাবাদের সব ধরনের সহযোগিতা দেয়ায় এ বছর উন্নত জাতের মসুর ডাল চাষে আগ্রহ বেড়েছে। ফলন ভালো হয়েছে। কৃষকরা ভালো দামে মসুর ডাল বিক্রি করতে পারবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি। বাসস।