ইতিহাস বিকৃতি : ময়মনসিংহের অন্বেষা স্কুল অ্যান্ড কলেজ বন্ধ

ময়মনসিংহ শহরের অন্বেষা ইন্টারন্যাশনাল স্কুল অ্যান্ড কলেজটি ‘ইতিহাস বিকৃতিসহ ৫টি অভিযোগে’ বন্ধ হয়ে গেছে। পূর্বপাকিস্তানের গর্ভনর আব্দুল মোনায়েম খানের মেয়ে নাসরিন মোনায়েম খান এ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটি প্রতিষ্ঠিত করেন।

জানা গেছে, স্কুলের লিফলেটে মোনায়েম খান ‘শহীদ’ অনুমোদন না থাকা এবং ইতিহাস বিকৃতির অভিযোগের সত্যতা পেয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয় জেলা প্রশাসনকে প্রতিষ্ঠানটি বন্ধের নির্দেশ দেয়। ময়মনসিংহ জেলা প্রশাসন রবিবার দুপুরে প্রতিষ্ঠানটি বন্ধ করে দিয়েছে।

ময়মনসিংহ জেলা প্রশাসক মো. খলিলুর রহমান জানান, এ প্রতিষ্ঠাটির সরকারি কোনো অনুমোদন নেই। ইতিহাস বিকৃতি ছাড়াও ৫টি অভিযোগে জেলা প্রশাসনের পক্ষে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক, জেলা শিক্ষা অফিসার গিয়ে স্কুলের সামনে গেটে বন্ধের নোটিশ প্রদান করে। সেই সঙ্গে প্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষকেও বন্ধের নোটিশ দেয়া হয়েছে।

মোনায়েম খানের মেয়ে নাসরিন মোনায়েম খান প্রতিষ্ঠিত এ স্কুলটিতে মুক্তিযুদ্ধের বিরোধীতাকারী পূর্ব পাকিস্তানের এ গভর্নরকে ‘শহীদ’ আখ্যায়িত করায় ময়মনসিংহে তোলপাড় শুরু হয়। প্রতিষ্ঠার পর স্কুলের সাইনবোর্ডে ‘চাঁদ তারা’ ছবি দিয়ে লেখা হয় শহীদ গভর্নর আব্দুল মোনায়েম খান। স্কুলের বিভিন্ন দাপ্তরিকসহ সকল কাগজপত্রে মোনায়েম খানকে ‘শহীদ’ আখ্যায়িত করা হয়। তাছাড়া স্কুলটিতে কখনই স্বাধীনতা, বিজয় দিবসসহ কোনো দিবস পালন করা হতো না। এ নিয়ে সোচ্চার হন নব্বইয়ের গণ আন্দোলনের সাবেক ছাত্র নেতারা।

জেলা প্রশাসক মো. খলিলুর রহমান বলেন, বিষয়টি প্রশাসনের নজরে এলে তদন্তে অভিযোগের সত্যতা পাওয়ায় এ বিষয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে প্রতিবেদন দেয়া হয়। শিক্ষা মন্ত্রাণালয়ের নির্দেশনায় প্রতিষ্ঠানটি বন্ধ করে দেয়া হয়।

এ নিয়ে নব্বইয়ের গণ আন্দোলনের ছাত্রনেতা নজরুল ইসলাম চুন্নু বলেন, অতীতেও এ প্রতিষ্ঠানটি আব্দুল মোনায়েম খানকে শহীদ আখ্যা দেয়। তখন নব্বইয়ের গণ আন্দোলনের ছাত্রনেতারা মুক্তিযোদ্ধাদের সঙ্গে স্কুলের সাইনবোর্ড থেকে ‘ধৃষ্টতাপূর্ণ’ শব্দ কালো কালি দিয়ে মুছে দেয়। পরবর্তীতে আবার তারা ইতিহাস বিকৃতি করার ধৃষ্টতা দেখায়। দীর্ঘদিন পরে হলেও প্রশাসন বিষয়টি আমলে নিয়ে ব্যবস্থা নেয়ায় জেলা প্রশাসনকে ধন্যবাদ জানিয়েছে মুক্তিযোদ্ধা ও নব্বইয়ের গণ আন্দোলনের ছাত্রনেতারা।