মঙ্গলের চাঁদের সঙ্গে মহাকাশযানের সংঘর্ষ ঠেকাল নাসা

সাত সেকেন্ডের এদিক ওদিক হলেই মঙ্গলের কক্ষপথে প্রদক্ষিণ করা নাসার মহাকাশযান (অরবিটার স্যাটেলাইট) মাভেন (মার্স অ্যাটমস্ফিয়ার অ্যান্ড ভোলাটাইল এভোলিউশন) এর সঙ্গে একেবারে মুখোমুখি ধাক্কা লাগত মঙ্গলের চাঁদ ‘ফোবস’ এর। তাতে নাসার মহাকাশযানটি চুরমার হয়ে ভেঙে যেত। আর তার টুকরোটাকরাগুলি মহাকাশে ভেসে বেড়াত লক্ষ কোটি বছর ধরে। আর যে কারণে পাখির ধাক্কায় বিমানের ক্ষতি হয় বেশি, সেই একই কারণে অনেক অনেক বেশি ক্ষতি হত মঙ্গলের চাঁদ ‘ফোবস’ এর।

মহাকাশে সময় আমাদের থেকে এগিয়ে থাকে অনেক।  আগামী ৬ ই মার্চ সোমবার সবচেয়ে বড় মহাকাশ দুর্ঘটনাটি ঘটতে চলেছিল মঙ্গলের রাজ্যে, তার হাত থেকে অল্পের জন্য রেহাই পেয়ে গেল নাসার মহাকাশযান ‘মাভেন’ আর মঙ্গলের চাঁদ ‘ফোবস’।

গত ৩ মার্চ শুক্রবার পাসাডেনায় নাসার জেট প্রোপালসান ল্যাবরেটরির গ্রাউন্ড কন্ট্রোল রুমের বিজ্ঞানীরা হিসেব কষে দেখেন ভয়ঙ্কর মহাকাশ দুর্ঘটনার মুখে পড়তে চলেছে ‘মাভেন’ আর ‘ফোবস’।  একেবারে মুখোমুখি ধাক্কা লাগতে চলেছে ‘পার্থিব প্রতিনিধি’র সঙ্গে মহাজাগতিক বস্তুর। তাতে ভয়ঙ্কর ক্ষতি হয়ে যেত ৬৭ কোটি মার্কিন ডলারেরও বেশি খরচে বানানো নাসার মহাকাশযানটির। নাসার গ্রাউন্ড কন্ট্রোল রুম সঙ্গে সঙ্গে সিদ্ধান্ত নেয়, রুট বদলাতে হবে। গতি বাড়িয়ে দিতে হবে মাভেন এর।

যেমন ভাবা, তেমন কাজ।  তাই সঙ্গে সঙ্গে মাভেন এর গতিবেগ বাড়িয়ে দেওয়া হয় সেকেন্ডে প্রায় আধ মিটার। ওই গতিবেগ বাড়ানোর ফলে সোমবার মঙ্গলের চাঁদ ‘ফোবস’ এর থেকে মাত্র আড়াই মিনিটের (মহাকাশ দূরত্ব) দূরত্বে থাকবে নাসার মহাকাশযান ‘মাভেন’। মহাকাশযানের গতিবেগ না বাড়ানো হলে দু’টির মধ্যে দূরত্ব থাকতো মোটে সাত সেকেন্ডের। ফলে ‘ফোবস’ এর জোরালো অভিকর্ষ তার দিকে টেনে নিতে পারত মাভেনকে। আর তাকে আছড়ে ফেলতে পারতো মঙ্গলের চাঁদের মাটিতে। এই মুহূর্তে অরবিটার, ল্যান্ডার ও রোভার মিলিয়ে নাসা, ইসরো ও ইউরোপিয়ান স্পেস এজেন্সির মোট ৬টি মহাকাশযান মঙ্গলকে প্রদক্ষিণ করছে।  দ্য ভার্জ।