‘ইউনূস গংদের টাকায় রামপালের বিরুদ্ধে বলা হয়েছে’

সুন্দরবনের অদূরে রামপাল বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ নিয়ে সুইজারল্যান্ডে ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামের (ডব্লিউইএফ) সম্মেলনে বিশ্ব পরিবেশবাদীদের প্রশ্নের মুখে পড়েছিলেন সফররত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তবে এই বিষয়টিকে ‘পরিকল্পিত’ বলে মনে করছেন তিনি। প্রধানমন্ত্রী মনে করেন, আন্তর্জাতিক এই সম্মেলনে বিশ্ব নেতাদের দিয়ে রামপাল নিয়ে বলানো হয়েছে। নোবেল বিজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূস গংরাই পরিকল্পিতভাবে সেখানে এই ইস্যুটি তুলেছেন।

এ বিষয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘ইউনূস সাহেবদের অনেক টাকা। তারা টাকা খরচ করিয়ে সেখানে এ ইস্যুটি উত্থাপন করিয়েছে এবং বিশ্ব নেতাদের দিয়ে রামপালের বিরুদ্ধে বলিয়েছে।’ সুইজারল্যান্ডে পাঁচ দিনের সফর শেষে শনিবার (২১ জানুয়ারি) দেশে ফেরেন প্রধানমন্ত্রী। এসময় তার সরকারি বাসভবন গণভবনে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতা ও সহযোগী সংগঠনের নেতারা দেখা করতে গেলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাদের এসব কথা বলেন।

প্রসঙ্গত, ডব্লিউইএফের সম্মেলনে যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক ভাইস প্রেসিডেন্ট ও পরিবেশবাদী আল গোর রামপাল প্রসঙ্গ তুলে আনেন। অনুষ্ঠানে আল গোর বলেন, ‘গত বছর পর্যন্ত বাংলাদেশ বিশ্বের সবচেয়ে দ্রুত সৌরশক্তির প্যানেল স্থাপনকারী দেশ ছিল। কিন্তু এখন সেখানে বিশ্বের সবচেয়ে বড় ম্যানগ্রোভ ফরেস্ট, রয়েল বেঙ্গল টাইগারের সর্বশেষ আশ্রয়স্থল সুন্দরবনে পরিবেশ দূষণকারী একটি নতুন কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের কাজ চলছে। হাজার হাজার মানুষ এর বিরুদ্ধে বিক্ষোভ করছে।’

যুব মহিলা লীগের সাধারণ সম্পাদক অপু উকিল রামপাল নিয়ে আল গোরের বক্তব্যের প্রসঙ্গ তোলেন। শেখ হাসিনা বলেন, ‘ইউনূস সাহেবদের অনেক টাকা, টাকা খরচ করে তারা এসব বলাইছে’।

প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, ‘আমিও বিশ্ব নেতাদের, পরিবেশবাদীদের চ্যালেঞ্জ দিয়ে বলে এসেছি আপনারা পরিবেশবাদীরা বাংলাদেশে আসেন। আমরা ঘুরে ঘুরে সব দেখাবো। পৃথিবীর যেকোনও পরিবেশবাদী রামপাল প্রকল্প দেখতে আসতে পারেন।’

গণভবনে সাক্ষাৎ করতে যাওয়া একাধিক কেন্দ্রীয় নেতা বাংলা ট্রিবিউনকে এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তারা জানান, প্রধানমন্ত্রী প্রায় ১০ মিনিট সবার সঙ্গে কুশল বিনিময় করেন। এসময় নেতাদের সঙ্গে বিভিন্ন বিষয় নিয়েও কথা বলেন শেখ হাসিনা।

এসময় গণভবনে সাক্ষাৎ করতে যাওয়া কেন্দ্রীয় নেতারা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার বোন শেখ রেহানার সুইজারল্যান্ডে বরফ খেলায় অংশ নেওয়া ও ছবি তোলার বিষয়টি নিয়ে প্রশংসা করেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বরফের দেশে গেলাম তাই ছবি তুললাম। অ..নে..ক.. ঠাণ্ডা। মাইনাস থেকে প্লাসে আসলাম।’

প্রধানমন্ত্রী এসময় আরও বলেন, ‘আগে তো এসব সম্মেলনে বাংলাদেশ দাওয়াত পেত না। এখন বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন দেখে বিদেশিরা অভিভূত। তাই বাংলাদেশের ব্যাপারেও তারা আগের দৃষ্টিভঙ্গি পরিবর্তন করেছে।’

এসময় প্রধানমন্ত্রীকে আগামী ২৪ জানুয়ারি ছাত্রলীগের পুনর্মিলনী অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ জানান দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। আমন্ত্রণপত্র গ্রহণ করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘অনুষ্ঠানে সবাইকে একটু একটু বক্তব্য রাখতে দিও, আর অনুষ্ঠানের খরচ সাবেক ছাত্র নেতাদের কাছ থেকে নিও।’