ভারতের দয়ায় বাংলাদেশের অগ্রগতি দাবি শাস্ত্রীর

বিশ্ব ক্রিকেটে তিন মোড়লের নীতি থেকে সরে আসতে যাচ্ছে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের সর্বোচ্চ সংস্থা ইন্টারন্যাশনাল ক্রিকেট কাউন্সিল (আইসিসি)। এখন থেকে বাংলাদেশসহ টেস্ট খেলুড়ে সব দেশই সমানসংখ্যক টেস্ট খেলার সুযোগ পাবে। এমনকি আইসিসি থেকে অর্জিত আয়ের অংশটাও সমানভাবে বণ্টন হবে সবার মাঝে।

আইসিসির এমন সিদ্ধান্তে স্বস্তি পেয়েছে পুরো ক্রিকেট বিশ্ব। ভারত ও শ্রীলঙ্কা ছাড়া বাংলাদেশসহ বাকি ক্রিকেট বিশ্ব আইসিসির এমন সিদ্ধান্তে সক্রিয় সমর্থন জানিয়েছে। তবে ভারতের বিপক্ষে যাওয়ায় বাংলাদেশের ওপর ব্যাপক চটেছেন ভারতের সাবেক ক্রিকেটার ও ধারাভাষ্যকার রবি শাস্ত্রী।

ভারতীয় গণমাধ্যম আনন্দবাজারে দেওয়া সাক্ষাৎকারে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়াই ব্যক্ত করেছেন ভারতের সাবেক এই ক্রিকেটার। তিনি জানিয়েছেন বাংলাদেশের এমন সিদ্ধান্তে তিনি বিস্মিত। শুধু তাই নয়, তিনি দাবি করেছেন, বাংলাদেশ ক্রিকেটের অগ্রগতি ভারতের হাত ধরেই! বাংলাদেশের কাছ থেকে এমনটা আশা করেননি তিনি।

এ প্রসঙ্গে রবি শাস্ত্রী বলেন, শ্রীলঙ্কা ছাড়া আর কোনো দেশ ভারতের পাশে দাঁড়াল না দেখে আমি বিস্মিত। অস্ট্রেলিয়া, ইংল্যান্ডের কথা না হয় ছেড়ে দিলাম। কিন্তু বাংলাদেশ কী করে ভারতের বিরুদ্ধে গেল?ওদের টেস্ট স্ট্যাটাস পাওয়া থেকে শুরু করে সমস্ত অগ্রগতিটাই তো ভারতের হাত ধরে। কতবার ওদের অনুরোধে আমরা দ্বিপক্ষীয় সিরিজ খেলে এসেছি। একই কাজ করল জিম্বাবুয়েও। এই সেদিনও ভারতীয় দল গিয়ে ওয়ানডে খেলে এলো ওদের দেশে।

আইসিসির পুরোনো কাঠামো অনুযায়ী, ২০১৫ থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত ভারতের লাভ হওয়ার কথা ২৯৭৩.৫ কোটি রুপি। তবে সব দেশ সমানভাবে লাভের অংশ পেলে তা কমে দাঁড়াবে ১৭৩৭.২ কোটি রুপি। শাস্ত্রী মনে করেন, আইসিসির নতুন কাঠামো অনুযায়ী পরিচালিত হলে ক্ষতির মুখেই পড়বে ক্রিকেটবিশ্ব। এ প্রসঙ্গে তিনি ভারতীয় ক্রিকেটকে সোনার ডিম পাড়া হাঁসের সঙ্গে তুলনা করেন।

শাস্ত্রী বলেন, আইসিসি বলছে, সব দেশ নাকি সমান লভ্যাংশ পাবে। আইসিসির ঘরে ৮০ শতাংশ টাকা ঢুকছে ভারতীয় ক্রিকেটের দয়ায়। আমি মনে করিয়ে দিতে চাই যে, ভারতীয় ক্রিকেট হলো সোনার ডিম পাড়তে থাকা রাজহাঁস। ওই সোনার ডিম দিয়েই কোষাগার ভরছে। আর সেটাকেই কি না তোমরা কাটতে আসছ! আর সম্পূর্ণ অন্যায়ভাবে। কী আবদার! জিম্বাবুয়ে যা টাকা পাবে, আমাকেও তাই নিতে হবে। ওহে আইসিসি, রাজহাঁস কেটে ফেললে তোমাদের সোনার ডিমও যে বন্ধ হয়ে যাবে, সেটা ভেবে দেখেছ? তখন তো ক্রিকেটবিশ্বই আক্রান্ত হবে।

নিজেদের প্রাপ্য আদায়ে ভারতীয় বোর্ডকে সর্বাত্মক লড়াই চালানোর আবেদনও জানান শাস্ত্রী, আইসিসি থেকে লভ্যাংশ কমে গেলে ভারতের বিভিন্ন অঞ্চলের পরিকাঠামোগত উন্নয়ন ধাক্কা খাবে। আমাদের সময়ে কয়টা মাঠে ডাইভ দিয়ে বল আটকানো যেত? এখন ভারতের প্রত্যন্ত অঞ্চলের মাঠেও দুর্দান্ত আউটফিল্ড। কেউ ঝাঁপাতে ভয় পায় না। এটা সম্ভব হয়েছে আইসিসি-তে দীর্ঘ লড়াই করে আমরা নিজেদের অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে পেরেছি বলে। বিনা যুদ্ধে নিজেদের প্রাপ্য ছেড়ে দেব কেন?

হুমকি দিয়ে তিনি আরো বলেন, বিসিসিআইয়ের বিপদের দিনে যারা আনন্দ করছে তারা যেন হুঁশিয়ার হয়ে যায়।”খুব সাবধান! ভারতীয় বোর্ডের এই অবস্থা চিরদিন থাকবে না। বিসিসিআই আবারও তার রাজত্ব ফিরে পাবে।